Thank you for trying Sticky AMP!!

সুযোগ পেয়েই ৫ উইকেট তাইজুলের

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কখনো ভুলবেন না তাইজুল

২০১৪ সালে সেন্ট ভিনসেন্টে তাঁর টেস্ট অভিষেক। অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসেই পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। একই বছর ওয়ানডে অভিষেকটা ঢাকায় হলেও কালকের আগপর্যন্ত ৯টি ওয়ানডে খেলে পাঁচ উইকেটের ঘরটি ছিল শূন্য। তাইজুল ইসলাম কাল সেই শূন্যতা পূরণ করলেন ম্যাচ জেতানো বোলিং করে। টেস্টের মতো ওয়ানডের প্রথম ৫ উইকেটও এলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতেই।

কে জানে, ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম ৫ উইকেট পাবেন বলেই এতদিনের অপেক্ষা কিনা! কারণ ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে এর আগে কখনোই ওয়ানডে খেলেননি তাইজুল। কাল প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কার হাতে নিয়ে বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি এই স্পিনারও বলছিলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজে আমার টেস্ট অভিষেক, তখনো ৫ উইকেট পেয়েছিলাম। ওয়ানডেতেও এখানে এসেই প্রথম ৫ উইকেট পেলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আর আসি বা না আসি, এটা সবসময় আমার মনে থাকবে।’

Also Read: তাইজুলের ‘প্রথমে’র দিনে বাংলাদেশের তিনে তিন

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজেও তাইজুল যেন দলে ছিলেন ‘নন প্লেয়িং মেম্বার’ হিসেবে। দলে আছেন, নিয়মিত অনুশীলন করছেন, কিন্তু ম্যাচের দিন তাঁর জায়গা ড্রেসিংরুম, বড় জোর ডাগআউটে। বিশেষ করে দেশের বাইরের সিরিজে সাকিব আল হাসান দলে থাকলে একাদশে তাঁর জায়গা হবে না, এটাই যেন নিয়ম হয়ে গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় তো সাকিবের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও সুযোগ পেয়েছেন শুধু এক টেস্টে।

দুই ইনিংসে ৬ আর ৩ উইকেট নিয়ে তখনো তিনি সুযোগের সদ্বব্যাবহার করলেন, এবারো তাই। ২০২০ সালের মার্চের পর দীর্ঘ ২৮ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নেমেই ৫ উইকেট। প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে নিকোলাস পুরানের পঞ্চম উইকেটটি পেয়ে শূন্যে লাফিয়ে উঠে যেন আরেকবার নিজের সামর্থ্যের ঘোষণাই দিতে চাইলেন তাইজুল। ম্যাচ শেষে এই উদযাপন নিয়ে তাইজুল বলছিলেন, ‘পাঁচ উইকেট পাওয়ার অনুভূতি সবসময়ই অন্যরকম থাকে। এটা বলে বোঝানোর মত নয়। সে জন্যই হয়তো একটু লাফালাফি করেছি (হাসি)। অনেক ভালো লেগেছে।’

Also Read: ৪ উইকেটের জয়ে উইন্ডিজকে ধবলধোলাই বাংলাদেশের

দীর্ঘ অপেক্ষার পর সুযোগ পেলে সেটি কাজে লাগানোর তাড়না সবারই থাকে, ছিল তাইজুলেরও। তবে এই অপেক্ষা বাড়িয়ে দিয়েছিল তাঁর ক্ষুধা, ‘এটা সত্যি, ভালো বোলিং করার ক্ষুধাটা একটু বেশি ছিল আমার। তবে আমি মনে করি এখানে উইকেটের সাহায্য ছিল। আমি চেষ্টা করেছি লাইন–লেংথ ঠিক রেখে ভালো জায়গায় বোলিং করতে। এটাই আমাকে সাহায্য করেছে।’

ওয়ানডেতে ফিরে প্রথম ২ ওভারেই ২ উইকেট নেন তাইজুল

দলে থেকেও বেশিরভাগ সময় ড্রেসিংরুম আর ডাগআউটে বসে থাকা নিয়ে অবশ্য দুঃখ নেই তাইজুলের। তিনি বরং সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন বাস্তবতা মেনে নিয়ে, ‘অনেক দিন বসে ছিলাম, এটা নিয়ে দুঃখ করে লাভ নেই। আমাকে পরিস্থিতিটা বুঝতে হবে। এখানে যেহেতু সাকিব ভাই দলে ছিলেন, নাসুমও অনেক দিন ধরে ভালো করছিল, সুযোগ পাওয়াটা কঠিন। আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। সুযোগ পেলে ভালো কিছু করার চেষ্টা করব, এটাই পরিকল্পনা ছিল।’

Also Read: আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে তামিমের অবসর

কাল ম্যাচ শেষে অধিনায়ক তামিম ইকবালও তাইজুলের প্রশংসায় এটাই বললেন আগে। খেলার সুযোগ না পেলেও অনুশীলন থেকে শুরু করে দলের সবকিছুইতেই তিনি ছিলেন একজন নিয়মিত সদস্যের মতো। খেলছেন না বলে কোনো কিছুতেই পিছিয়ে ছিলেন না। ‘না খেললেও সে প্রতিটি অনুশীলন সেশনে ছিল। ও শুধু একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল এবং সুযোগ পেয়ে দারুনভাবেই সেটা কাজে লাগিয়েছে’—বলেছেন তামিম।

প্রভিডেন্সের উইকেট যে স্পিন সহায়ক সেটি আগের দুই ম্যাচে মাঠের বাইরে থেকেই বুঝে গেছেন তাইজুল। কাল মাঠে নেমে তিনি শুধু বুঝতে চেয়েছেন উইকেট কেমন বোলিং চায়, দলের প্রয়োজনটাই বা কি, ‘দেখতে হবে উইকেট কী চায়, দল কী চাচ্ছে। আমি চেষ্টা করেছি দল যা চায় সেটা পূরণ করতে। দলকে সাহায্য করতে পেরেছি সে কারণেই আমি বেশি খুশি। সবসময় চাই আমার মাধ্যমে যেন দলের ভালো কিছু হয়।’