Thank you for trying Sticky AMP!!

টি–টোয়েন্টিতে টানা ৬১টি ম্যাচ খেলার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে বাদ পড়েন আফিফ হোসেন

আফিফের সমস্যার সমাধান নেই হাথুরুর কাছেও

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ট্রফি নিয়ে ছবি তোলার পর্ব শেষ। হইচই করতে করতে মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ঢুকলেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। কিন্তু পুরো দল যখন ড্রেসিংরুমে, তখনো মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের পুরস্কার বিতরণের মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেআফিফ হোসেন। প্রধান কোচ অনেকটা সময় নিয়ে আফিফকে কিছু বলছিলেন, মাথা নিচু করে তাঁর কথা শুনে যাচ্ছিলেন আফিফ। মাঝেমধ্যে যখন মাথা তুলে উত্তর দিচ্ছেন, তখন আফিফের চাহনিতে হতাশা।

পরশু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টি–টোয়েন্টির পর দৃশ্যটা চোখে পড়েছে অনেকেরই। দলের অন্যরা যখন ইংল্যান্ডকে ধবলধোলাই করার উদ্‌যাপনে ব্যস্ত, তখন প্রধান কোচের সঙ্গে কী নিয়ে এত কথা বলছেন আফিফ! কোচের সঙ্গে কথোপকথনটা যে আফিফ খুব একটা উপভোগ করছিলেন না, সেটাও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে খেলানো হয়নি তাঁকে। তাঁর এই বাদ পড়া ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে এ বছরের ১২ মার্চ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টানা ৬১টি ম্যাচ খেলার পর, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের জন্যই যা রেকর্ড।

আগের রেকর্ডটা ছিল মাহমুদউল্লাহর। ১৩ নভেম্বর ২০১৫ থেকে ৩০ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত টানা ৫৪টি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। পরশু আফিফের পরিবর্তে খেলানো হয় শামীম হোসেনকে।

টপঅর্ডারে ব্যাটিং পছন্দ আফিফ হোসেনের

তবে আফিফের হতাশার কারণ দল থেকে বাদ পড়া নয়, তিনি হতাশ–ক্ষুব্ধ নিজের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে। একটি সূত্র জানিয়েছে, পরশু ম্যাচ শেষে এ নিয়েই কোচের সঙ্গে কথা বলেছেন আফিফ, প্রকাশ করেছেন হতাশা। হাথুরুসিংহেকে তিনি বোঝাতে চেষ্টা করেছেন, ব্যাটিং অর্ডারের ওপরে খেলা ম্যাচগুলোতে তাঁর রেকর্ড খারাপ নয়। কোচও নাকি তাতে দ্বিমত প্রকাশ করেননি। তারপরও আফিফের প্রতি তাঁর পরামর্শ আরেকটু ধৈর্য ধরার।

Also Read: ‘আফিফ পাওয়ার হিটার নয়, পাঞ্চার’

টি-টোয়েন্টিতে টপ অর্ডারেই খেলার ইচ্ছা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আফিফের। কিন্তু কখনো বাঁহাতি-ডানহাতি সমন্বয়, কখনো ম্যাচআপের কারণে আফিফের টপ অর্ডারে সুযোগ হয় না। ২০ ওভারের খেলায় ৪-এ খেলা আফিফের ১১ ইনিংসে ফিফটি আছে দুটি, ৩৩ গড়ে রান ৩০৩। ৫, ৬, ৭ ও ৮–এ খেলা আফিফের রেকর্ড সে তুলনায় ভালো নয়। ফিনিশারের দায়িত্বটা নাকি তিনি উপভোগই করেন না।

Also Read: ‘পাওয়ার প্লে’তে সমাধান হতে পারে আফিফ

সে জন্যই জাতীয় দলে যে আফিফ ফিনিশারের ভূমিকায়, সেই আফিফই বিপিএলে জায়গা খুঁজে নেন টপ অর্ডারে। গত বিপিএলে আফিফ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৪৪ রান করেছেন তিনে ব্যাটিং করে।

বিপিএলের সময়ই একদিন সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন নিজের পছন্দের ব্যাটিং পজিশনের কথা, ‘আমি যে পজিশনেই খেলি, চেষ্টা করি নিজের সেরাটা দিতে। আমাকে কত নম্বরে নামানো হচ্ছে, সেটা চিন্তা করি না। সবারই পছন্দের একটা পজিশন থাকে, আমার যেমন ৩ নম্বরে ব্যাট করা পছন্দ।’

Also Read: এশিয়া কাপ থেকেই ব্যাটিং অর্ডারে চারে আফিফ

কিন্তু জাতীয় দলে পছন্দের জায়গায় খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না আফিফ। নির্বাচকদের যখনই এ নিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, তাঁরা বলেছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর কথা। এখন সেটাও বলার উপায় নেই। টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন মুশফিক। মাহমুদউল্লাহও দলে নেই। তবু ইংল্যান্ড সিরিজে ওপরে খেলার সুযোগ হয়নি আফিফের। টি–টোয়েন্টিতে অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয় খেলেছেন চারে। ডানহাতি হওয়ায় আফিফের পরে দলে এসেও ব্যাটিং অর্ডারের ওপরের দিকে জায়গা পেয়ে গেছেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান।

আফিফের ওপরে খেলতে সমস্যা কোথায়, সেটা সবারই জানা। কিন্তু সমস্যার সমাধান কী? আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে সমাধান আসলে আফিফের হাতেই। তাঁকেই প্রতিযোগিতা করে জায়গা নিতে হবে টপ অর্ডারে অথবা হয়ে উঠতে হবে সত্যিকারের ফিনিশার।

Also Read: প্রথম সাক্ষাতেই ক্রিকেটারদের অবাক করলেন হাথুরুসিংহে