Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে

‘অচেনা’ সিলেটে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের কথা শুনতে চান না হাথুরুসিংহে

প্রশ্নটা শুরু থেকেই এড়িয়ে যাচ্ছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। একবার, দুবার...এরপর আর না বলে পারলেন না, ‘আপনারা মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট নিয়ে কথা বলছেন, কেন? কত আগের কথা সেটা?’

বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচকে কী নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তা তো বুঝতেই পারছেন। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট বাংলাদেশ দলের সমর্থকদের মনে গেঁথে যাওয়ার মতো স্মৃতি। শুধু সমর্থক নয়, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসেই সেই স্মরণীয় টেস্ট জয় সে দলের ক্রিকেটারদের জন্যও বিরাট এক অনুপ্রেরণার উৎস। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল নেই। মাহমুদউল্লাহ টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন। সেই অর্থে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় বলতে সেই টেস্টের দলে ছিলেন শুধু মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হক।
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর ঘরের মাঠে অজেয় কিউইদের বিপক্ষে যখন এমন একটা দল টেস্ট খেলতে নামে, তখন প্রত্যাশা ছিল তলানিতে। সেই দলটাই তখনকার আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপজয়ী দলকে তাদের আঙিনায় হারিয়ে দেবে, তা কি কেউ কল্পনা করেছিল?

সেই সিরিজের পর একই প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ এবার আরও একটি ব্যর্থ বিশ্বকাপ কাটিয়ে ফিরেছে। একই বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড খেলেছে সেমিফাইনালে। প্রেক্ষাপট প্রায় মিলে যাওয়ায় আজ মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট ঘুরেফিরে আসছিল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে। হাথুরুসিংহে অবশ্য অতীতে তাকাতে চাচ্ছেন না। তাঁর যুক্তিও আছে, ‘অন্য একটা দেশের কথা বলছেন আপনারা। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন খেলা।’

এ তো গেল এক নম্বর কারণ। দুই নম্বর কারণ, সিলেট স্টেডিয়ামে টেস্ট খেলার অনভিজ্ঞতা। বাংলাদেশ সিলেটের মাঠে একমাত্র টেস্টটি খেলেছে সেই ২০১৮ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরপর এই ভেন্যুতে শুধু ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিই খেলেছে বাংলাদেশ। লাল বলের খেলায় সিলেট যেন বাংলাদেশের জন্য ‘বিদেশ’।

Also Read: পিএসএলের ড্রাফটে সর্বোচ্চ দামের ক্যাটাগরিতে সাকিব, তামিম–মাহমুদউল্লাহরা কোথায়

হাথুরুসিংহের মুখেই শুনুন, ‘আমরা এখানে খুব বেশি টেস্ট ম্যাচও খেলিনি। একটি টেস্ট খেলেছি, যদি আমি ভুল না করে থাকি। আমরা জানি না, উইকেট কেমন আচরণ করবে। কারণ, আমাদের এখানে খেলার ইতিহাস নেই। এই মুহূর্তে আমাদের জন্য সবই অজানা।’

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের উইকেট দেখছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে

টেস্ট ক্রিকেটটাও অনেকের কাছে নতুন নতুন লাগার কথা। বাংলাদেশ দল সর্বশেষ টেস্ট খেলেছে গত জুনে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এরপর ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ওয়ানডে ক্রিকেটেই বেশি ব্যস্ততা ছিল জাতীয় দলের। টেস্ট দলের খেলোয়াড়েরা জাতীয় লিগ খেলে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে পেরেছেন। বিশ্বকাপ খেলেছেন যাঁরা, তাঁরা জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ডে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।

হাথুরুসিংহেও আজ লম্বা বিরতির জড়তা প্রসঙ্গে জাতীয় লিগের কথা বললেন, ‘এনসিএল ম্যাচ, আমরা এনসিএল ম্যাচ ব্যবহার করেছি খেলোয়াড়দের প্রস্তুতির জন্য। বিশেষ করে যারা বিশ্বকাপে খেলেছিল, তাদের জন্য। বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানই সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে। এ ছাড়া বাকিরাও এনসিএল খেলছিল।’ দলটাও যে নতুনে ঠাসা, সেটিও যোগ করেন প্রধান কোচ, ‘আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে এই দলটা একদমই নতুন চেহারার বাংলাদেশ দল। নানা কারণেই এটা হয়েছে, কিছু চোট…। আমি মনে করি, আমরা যতটা সম্ভব প্রস্তুত।’

চলছে স্পিনারদের প্রস্তুতি

চোটের কারণে নিউজিল্যান্ড সিরিজ খেলা হচ্ছে না সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদ ও ইবাদত হোসেনের। ছুটিতে আছেন লিটন দাস। হুট করেই এত অভিজ্ঞতা হারিয়ে বসা যেকোনো দলের জন্যই কঠিন। হাথুরুসিংহের দাবি, অন্য দলগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের জন্য এটি আরও কঠিন, ‘এটা চ্যালেঞ্জিং, এতটা অভিজ্ঞতা একসঙ্গে হারানো। সেটা যেকোনো দলের জন্যই সত্য। বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য। কারণ, ওরা বাংলাদেশ দলের ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে খেলছে। কেউ কেউ ১০ বছর।’ তবে কোচ হিসেবে তাঁকে ইতিবাচক কিছুই খুঁজে নিতে হবে। এই শ্রীলঙ্কান কোচ তাই করছেন, ‘এক দিক থেকে এটা সামনে তাকানোর সুযোগ, দেখার সুযোগ তরুণেরা কেমন করে। আমি মনে করি, এটা সঠিক সময়ও, কিছু কিছু খেলোয়াড়ের বাইরে চিন্তা করতে হবে। ওরা তো সব সময় খেলবে না। এটা রোমাঞ্চিত হওয়ারও ব্যাপার। তরুণ কয়েকজনের সুযোগ ভালো করার, লম্বা ক্যারিয়ার গড়ার।’