Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রথম ওভারেই পরপর দুই বলে দুই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানকে ফেরান ফজলহক ফারুকি

শেষ ওভারের নাটকীয়তায় পাকিস্তানকে নিরাশ করে সিরিজ জিতল আফগানিস্তান

ক্রিকেট ম্যাচ নাকি মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা- পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি দেখতে দেখতে কারও এমনটা মনে হতেই পারে। ম্যাচ একবার আফগানিস্তানের দিকে হেলে তো আরেকবার পাকিস্তানের দিকে। বারবার রূপ বদলানো এই ম্যাচে শেষ ২ ওভারে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২২ রান। সেখান থেকে শেষ ৬ বলে ৫। আর শেষ ২ বলে আফগানদের প্রয়োজন ছিল ২।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য শেষ হাসিটা আফগানরাই হেসেছে। পাকিস্তানের করা ৬ উইকেটে ১৩০ রানের জবাবে ১ বল ও ৭ ‍উইকেট হাতে রেখে তারা পেয়েছে দুর্দান্ত এক জয়। সে সঙ্গে তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্মরণীয় সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করেছে রশিদ খানের দল।

Also Read: সিরিজ হারের পর শাদাব, ‘বাবর–রিজওয়ানকে এখন শ্রদ্ধা করবে মানুষ’

এর আগে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম তিন দেখায় তিনটিতেই পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল আফগানিস্তান। গত শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতে আফগানিস্তান। এবার সিরিজও নিজেদের করে নিল তারা। এখন শেষ ম্যাচে জিতে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগও রয়েছে আফগানদের।

লক্ষ্য তাড়ায় ২ ওভারেই ১৮ রান তুলে উড়ন্ত সূচনা পায় আফগানিস্তান। ম্যাচের চতুর্থ ওভারে গিয়ে আফগানদের প্রথম ধাক্কা দেয় পাকিস্তান। নভিন-উল-হককে ফিরিয়ে দেন ইমাদ ওয়াসিম। উইকেট হারিয়েও অবশ্য রানের গতি শ্লথ করেনি আফগানিস্তান। প্রথম ৬ ওভারে তারা করে ৪৫ রান। জুটি গড়ে দলকে টেনে নেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জারদান। ১০ ওভার শেষে তারা দলকে নিয়ে যান ৬৬ রানে।

পাকিস্তানের উইকেট পতনে আফগানিস্তানের উদ্‌যাপন

তবে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রান ও বলের ব্যবধান বেড়ে যাওয়ায় চাপে পড়ে আফগানিস্তান। ৭.৪ ওভার থেকে ১৫.৩ ওভার পর্যন্ত কোনো বাউন্ডারি পায়নি আফগানরা। এর মাঝে রানআউট হয়ে ফিরে যান ৪৪ রান করা গুরবাজও। দলীয় ১০২ রানে ফিরে যান ৩৮ করা ইব্রাহিমও। তাকে ফেরান ইহসানউল্লাহ। তবে ১৯তম ওভারে চাপের মুখে ১৭ রান নিয়ে ম্যাচের রূপ বদলে দেয় আফগানিস্তান। আর রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভারের ৫ম বলে চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন জারদান।

শারজায় টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে আগের ম্যাচটা যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই যেন আজকের ম্যাচটি শুরু করে আফগানিস্তান। ইনিংসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে সিয়াম আইয়ুব ও আবদুল্লাহ শফিককে ফিরিয়ে হ্যাট্রটিকের সম্ভাবনা জাগানোর পাশাপাশি পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের ভিত নাড়িয়ে দেন ফজলহক ফারুকি। প্রথম ওভারে কোনো রান না করেই ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। অফ স্টাম্পের বাইরে বল খোঁচা দেন সিয়াম। দারুণ ক্যাচে বাকি কাজ সম্পন্ন করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ।

Also Read: পাকিস্তানের সাবেকদের কাছে ‘সব দোষ’ শাদাবের

ফারুকির পরের বলটিকে লেগ সাইডে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন শফিক। কিন্তু টাইমিং গড়বড় করায় সেটি সরাসরি আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ারের দেওয়া এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত রিভিউ নিয়েও বদলাতে পারেননি শফিক। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা চার ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলেন এই ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে অবশ্য ১৮ রান করে কিছুটা চাপ কমায় পাকিস্তান। ২ চার ও ১ ছক্কায় একাই ১৫ রান করেন মোহাম্মদ হারিস।

৫৬ রানের জুটিতে আফগানদের পথ দেখান গুরবাজ ও জারদান

তৃতীয় ওভারে পাকিস্তানকে ধাক্কা দেন নাভিন উল হক। মারমুখী হতে চাওয়া হারিস (১৫) ফেরেন উইকেটের পেছনে গুরবাজকে ক্যাচ দিয়ে। দলকে বিপর্যয় থেকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন তায়েব তাহির ও ইমাদ ওয়াসিম। ইমাদ সাবলীলভাবে ব্যাট করে গেলেও সংগ্রাম করছিলেন তায়েব। দলীয় ৬০ রানে তায়েবকে ফেরান করিম জানাত। ২৩ বলে ১৩ রান করেন তায়েব। এরপর দুর্দান্ত এক গুগলীতে দ্রুত আজম খানকে (১) ফেরান রশিদ খান।

Also Read: পাকিস্তানের বিপক্ষে আফগানদের প্রথম জয়

এরপর অধিনায়ক শাদাব খানকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টেনে নেন ইমাদ ওয়াসিম। মূলত ইমাদের ব্যাটেই লড়াই করার মতো পুঁজির দিকে এগোতে থাকে পাকিস্তান। এর মাঝে ছক্কা মেরে ফিফটি করেন ইমাদ। তবে অন্য প্রান্ত থেকে সঙ্গ না পাওয়ায় পাকিস্তানের রানের গতি মন্থরই থেকে যায়। ১৮তম ওভারে গিয়ে এক শ করে পাকিস্তান।

তবে শেষ ২ ওভারে ২৪ রান নিয়ে পাকিস্তানকে ১৩০ রানের সংগ্রহ এনে দেন ইমাদ ও শাদাব। ৫৭ বলে ৬৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ইমাদ। আর শেষ বলে রানআউট হওয়ার আগে শাদাব করেন ২৫ কলে ৩২ রান। যদিও শেষ পর্যন্ত সেটা ম্যাচ জেতার জন্য যথেষ্ট হয়নি। জমজমাট লড়াই শেষে ম্যাচ ও সিরিজ নিজেদের করে নেয় আফগানিস্তান।