Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশ দলের পেসারদের সঙ্গে এই ছবির মতো হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কই গড়েছিলেন অ্যালান ডোনাল্ড

তাসকিনদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটা ফোন থেকে ডিলিট করবেন না ডোনাল্ড

বিশ্বকাপের পরই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ফাস্ট বোলিং কোচের পদ থেকে বিদায় নেবেন অ্যালান ডোনাল্ড। গতকাল তিনি ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিদায় পর্বও সেরে ফেলেছেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের ‘টাইমড আউট’ হওয়া ডোনাল্ডের ভালো লাগেনি।

খোলাখুলিভাবেই ডোনাল্ড এর সমালোচনা করেছেন। বিসিবিও এটি পছন্দ করেনি। ডোনাল্ডকে লিখিতভাবে এ বিষয়ে নিজেদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছে বিসিবি। এর এক দিন পরই ডোনাল্ড খেলোয়াড়দের নিজের চাকরি ছাড়ার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন।

Also Read: তাসকিনদের বিদায় বললেন ডোনাল্ড, ফিরবেন না ঢাকায়

বিদায়বেলায় ইএসপিএনক্রিকইনফোকে ডোনাল্ড জানিয়েছেন, বিসিবি তাঁকে এক বছরের চুক্তি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। তিনি শুরুতে রাজিও ছিলেন। তবে পরবর্তী সময় সিদ্ধান্ত বদলান। পরিবারকে আরও বেশি করে সময় দিতেই তিনি ফিরে যাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকায়, ‘বিশ্বকাপের সময়ই আমি মৌখিকভাবে এক বছরের জন্য চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করতে রাজি হয়েছিলাম। তবে আমি কোনো চুক্তি সই করিনি। ঢাকায় ফিরে নতুন চুক্তিতে সই করতে চেয়েছিলাম। দলের পেস বোলারদের আরও বেশি করে জানা এবং তাদের আরও এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আমি খুব রোমাঞ্চিত ছিলাম।’

শেষ পর্যন্ত পরিবারকে সময় দেওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছেন ডোনাল্ড, ‘আমি ব্যাপারটি নিয়ে ভাবছিলাম। কিন্তু দেখলাম এই ১২ মাস খুবই লম্বা সময়। এই সময়ে বেশ ব্যস্ত সূচি রয়েছে। সূচিটা বেশ ক্লান্তিকর। আমার পরিবারের কথা চিন্তা করাটাকেই ভালো মনে করেছি। আমার দুই বছর বয়সী নাতি আছে। আমি ওকে খুব মিস করছিলাম। ৮২ দিন ওদের দেখি না। আমি মনে করি, এটা আমাকে প্রভাবিত করেছে চুক্তির মেয়াদ আর না বাড়াতে।’

বিদায়বেলায় বাংলাদেশের পেসারদের সঙ্গে অনেক স্মৃতি নিয়ে যাচ্ছেন ডোনাল্ড

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৫৭ বছর বয়সী দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই ফাস্ট বোলারকে বাংলাদেশের ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ সময়ে জাতীয় দলের ফাস্ট বোলিং বিভাগের দারুণ উন্নতিও চোখে পড়ে। বাংলাদেশ জাতীয় দল এখন নিয়মিতই একাদশে তিন পেসারের ওপর ভরসা রাখে। তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদরা এখন দলের আক্রমণের মূল অস্ত্র। মোস্তাফিজুর রহমান, চোটের কারণে বিশ্বকাপ খেলতে না পারা ইবাদত হোসেন কিংবা তানজিম হাসান তো আছেনই।

Also Read: আচরণবিধি ভাঙা ডোনাল্ডকে কারণ দর্শাতে বলবে বিসিবি

বাংলাদেশের পেসারদের নিয়ে কাজ করার জন্য যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটা তৈরি করেছিলেন, সেটি (ডিলিট) মুছে ফেলতে চান না ডোনাল্ড, ‘আমি কালই ওদের বলেছি, আমি এর আগে বহু হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছিলাম। পেশাদার জীবনে যে মুহূর্তে কেউ কোনো কাজ ছাড়ে, সেটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সে নিজেকে সরিয়ে নেয়। আমি ওদের বলেছি, আমি বাংলাদেশের পেসারদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটা ফোন থেকে ডিলিট করব না। আমরা গ্রুপে একসঙ্গে আড্ডা মারতে পারি ভবিষ্যতে। খেলোয়াড়েরা যখনই চাইবে, তখনই আমাকে বার্তা পাঠাতে পারে। আমি হোয়াটসঅ্যাপে ওদের সঙ্গে যেকোনো বিষয় কিংবা ক্রিকেট নিয়ে আড্ডা চালিয়ে যাব।’

বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়ার সময় ডোনাল্ডের মধ্যে তৃপ্তিও কাজ করছে, ‘আমি উচ্ছ্বসিত এটা দেখে যে এই ফাস্ট বোলারদের দল কতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের জন্য আমার সব সময়ই শুভকামনা থাকবে। আমি অবশ্যই আগামীতে এই ফাস্ট বোলারদের দিকে লক্ষ রাখব। বাংলাদেশ কতটা ভালো করছে, সেটি খেয়াল রাখব। আমি এই ফাস্ট বোলারদের খুব ভালো বন্ধু হতে পেরেছি বলে মনে করি।’

বাংলাদেশের পেসারদের প্রশংসা করেছেন ডোনাল্ড

ডোনাল্ড আরও বলেছেন, ‘এই পেসাররা শুধু মাঠে গিয়ে খেলে না। আমি সত্যিই অভিভূত হই দেখে যে তারা কতটা উন্নতি করেছে। তাদের মধ্যে সব সংস্করণে পারফর্ম করার একটা মানসিকতার জন্ম হয়েছে, যেটা নিয়ে তারা গর্বিত হতে পারে। অন্য দলগুলো তাদের নিয়ে ভাবতে বাধ্য করছে, তাদের অর্জনগুলো নিয়ে আর তারা যে কীভাবে মাঠে পারফর্ম করছে, সেটি নিয়ে।’

Also Read: টাইমড আউট নিয়ে ডোনাল্ড: ‘মন বলছিল মাঠে ঢুকে বলি, যথেষ্ট হয়েছে, আর না’

বাংলাদেশে কীভাবে কাজ করেছেন, তাঁর কাজের ধরনটা কেমন ছিল, সেটি নিয়েও ইএসপিএনক্রিকইনফোর সঙ্গে কথা বলেছেন ডোনাল্ড, ‘আমি পুরো কাজটিই সহজ-সরল উপায়ে করেছি। কখনো একসঙ্গে আড্ডা মেরেছি, একসঙ্গে কফি খেয়েছি, লাঞ্চ করেছি। পেসাররা মানসিকভাবে কতটা এগোচ্ছে, সেটি দেখাটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এসব ছোট ছোট মিটিংগুলোয় আমরা ছোট ছোট বিভিন্ন বিষয়, লক্ষ্য শিক্ষণীয় ছিল, যেগুলোকেই আমরা সামনে এগিয়ে নিতাম। আমি ওদের নিয়ে দারুণ গর্বিত। আমার পরে যিনিই তাঁদের দায়িত্ব নিন না কেন, আমি তাদের বেশ ভালো একটা জায়গায় রেখে যাচ্ছি। এখন আমার বাড়ি ফেরার সময়। সেটি একজন বাবা, স্বামী কিংবা দাদা হয়ে।’

পেসারদের ফিট থাকার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন ডোনাল্ড

ডোনাল্ড তাসকিন, শরীফুল, মোস্তাফিজ, হাসান মাহমুদদের নিজেদের ফিট থাকার গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছেন। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য নিজেদের সব সময় ফিট রাখার বিষয়টি তিনি তাঁদের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন বলেই জানিয়েছেন, ‘আমি যখন তাদের সঙ্গে ২০২২ সালে প্রিটোরিয়াতে প্রথম কথা বলি, তখনই আমার মনে হয়েছে, তারা সবাই খুবই প্রতিভাবান। তাদের শুধু একটু যত্ন, দিকনির্দেশনা ও ধৈর্য প্রয়োজন। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য পেসারদের মধ্যে ফিটনেস ও অন্যান্য বিষয়ে ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করে দেওয়াটাই আমার কাজের মূল অগ্রগতি বলে আমি মনে করি।’