Thank you for trying Sticky AMP!!

দুই ভাই ইয়ান চ্যাপেল ও গ্রেগ চ্যাপেল (ডানে)

কিংবদন্তি গ্রেগ চ্যাপেলের জন্য সতীর্থদের তহবিল

আর্থিক দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি গ্রেগ চ্যাপেলের জন্য তহবিল গঠন করছেন তাঁর সতীর্থ সাবেক ক্রিকেটাররা। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম নিউজ কর্পের বরাত দিয়ে দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এসেছে এই খবর।

সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চ্যাপেলের অনিচ্ছা সত্ত্বেও গণ–অর্থায়নবিষয়ক প্ল্যাটফর্ম ‘গোফান্ডমি’ টাকা তুলতে শুরু করেছে। এ উপলক্ষে গত সপ্তাহে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) মধ্যাহ্নভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেন অস্ট্রেলিয়ার টিভি উপস্থাপক ও সাংবাদিক এডি ম্যাকগুয়ার। এ সময় গ্রেগ চ্যাপেলের দুই ভাই ইয়ান চ্যাপেল এবং ট্রেভর চ্যাপেলও উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেগ চ্যাপেলকে সত্তর ও আশির দশকের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মনে করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৮৭ টেস্ট ও ৭৪ ওয়ানডে খেলেছেন চ্যাপেল। দুই সংস্করণ মিলিয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৯৭ ম্যাচে, শতক আছে ২৭টি। ১৯৮৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলার সময় তিনিই ছিলেন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।  

Also Read: পাকিস্তান দলেও একজনকে ম্যাক্সওয়েল হতে বলছেন আফ্রিদি

অস্ট্রেলিয়া সাবেক ক্রিকেটার ও গ্রেগ চ্যাপেলের সাবেক সতীর্থ রডনি মার্শ। ক্যারিয়ারকে বিদায় বলার পর লিলি ও মার্শ ক্যারি প্যাকার ওয়ার্ল্ড সিরিজের তহবিল থেকে আর্থিক সহয়তা পেলেও চ্যাপেল পাননি

সত্তর দশকের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত ক্যারি প্যাকার ওয়ার্ল্ড সিরিজে ফাস্ট বোলার ডেনিস লিলি ও উইকেটরক্ষক রডনি মার্শের সঙ্গে চ্যাপেল হয়ে উঠেছিলেন আইকনিক ত্রয়ী। তবে ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে বিদায় বলার পর লিলি ও মার্শ ক্যারি প্যাকার ওয়ার্ল্ড সিরিজের তহবিল থেকে আর্থিক সহয়তা পেলেও চ্যাপেল পাননি।

অবসরে যাওয়ার পর ক্রিকেটারদের যাতে অর্থকষ্টে পড়তে না হয় এবং ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকে, সেটা নিশ্চিত করতেই সেই সময় এই অর্থ দেওয়া হতো। চ্যাপেল সেই সময় যে অর্থ পাননি, সেটাই হয়তো পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। ৭৫ বছর বয়সী চ্যাপেল বর্তমানে অ্যাডিলেডের একটি ভাড়াবাসায় থাকেন। ‘গোফান্ডমি’ এরই মধ্যে ৭২ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ৮০ লাখ টাকা) সংগ্রহ করেছে।

যদিও চ্যাপেল নিজেকে নিঃস্ব মানতে নারাজ। এ ব্যাপারে নিউজ কর্পকে তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই এটা বলছি না যে আমি ফতুর হয়ে গেছি। এমন কিছু বলতে চাই না, যেটা শুনলে মনে হবে খুব বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। কারণ, আমি ততটা কষ্টে নেই।’

Also Read: ৪০০ রানের লক্ষ্য দিয়ে ডাচদের ৯০ রানে অলআউট করল অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি গ্রেগ চ্যাপেল

বিখ্যাত চ্যাপেল পরিবারের একজন হওয়ায় অনেকে ভাবতে পারেন, গ্রেগ চ্যাপেলও অনেক আয়েশেই থাকেন। তবে মানুষের এ ভুল ভাবনা ভেঙে দিয়েছেন তিনি, ‘আমার মনে হয় বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, আমি ক্রিকেট খেলেছি, তাই আমার জীবন বিলাসিতায় ভরা। কিন্তু সত্যিটা হলো আমি বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত নই। এটাও ঠিক যে আমি খুব গরিব নই। তবে এখনকার খেলোয়াড়েরা যে সুবিধাগুলো পায়, আমি তা পাই না।’

কিংবদন্তি গ্রেগ চ্যাপেলের দুই বন্ধুপ্রতিম সতীর্থ পিটার মালোনি ও ডেভিড ইভান্স জানিয়েছেন, চ্যাপেল’স ফাউন্ডেশন গৃহহীন যুবকদের দাতব্য সংস্থাগুলোর জন্য লাখ লাখ টাকা জোগাড় করেছে। এবার চ্যাপেলের জন্যই তহবিল গড়ে তোলা হচ্ছে। মালোনি বলেছেন, ‘গ্রেগ (চ্যাপেল) ওর কাজ নিয়ে খুব গর্বিত। সে যেটা বলেছে, তার চেয়েও কঠিন কাজ করেছে।’ নিজের ফাউন্ডেশন থেকে টাকা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও চ্যাপেল কখনো একটি কানাকড়িও নেননি বলে জানিয়েছেন মালোনি।

অর্থের ব্যবস্থা করায় মালোনি ও ইভান্সকে ধন্যবাদ জানিয়ে চ্যাপেল বলেছেন, ‘আমার দুই বন্ধু বুঝতে পেরেছে, আমার যত অর্থ পাওয়া উচিত ছিল, ততটা পাইনি। আমি ও জুডি (চ্যাপেলের স্ত্রী) যাতে অবসর–পরবর্তী জীবনটা ভালোভাবে কাটাতে পারি, ওরা সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছে।’

Also Read: বিশ্বকাপে ক্রিকেটারদের জন্য যে ব্যাপারটি ‘ভয়ংকর’ বললেন ম্যাক্সওয়েল