Thank you for trying Sticky AMP!!

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান

‘মানুষ কিন্তু এখন উল্টো কথাও বলছে...এরা তো ক্রিকেটকে ধ্বংস করতে নেমেছে!'

মিরপুর টেস্টের সমান্তরালেই চলেছে বিতর্কটা। মুশফিকুর রহিমের ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট কারও কারও নাকে ফিক্সিংয়ের গন্ধ পৌঁছে দিয়েছে। অবশ্য বিতর্ক না বলে এটাকে একপেশে দাবি বলাই ভালো।

প্রথমত আউটটা দেখে কারোই মনে হয়নি মুশফিকের ওরকম হাত দিয়ে বল সরানোর পেছনে স্পট ফিক্সিংয়ের উদ্দেশ্য থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত ক্রিকেটের প্রতি নিবেদিত প্রাণ, খেলা আর অনুশীলন নিয়েই পড়ে থাকা মুশফিক ওরকম অনৈতিক কিছুর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবেন, এটাও কারও কাছেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।

Also Read: ৭১ টিভিকে মুশফিকুর রহিমের আইনি নোটিশ

তারপরও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১ টিভি গত ৬ ডিসেম্বর মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন ওরকম একটি প্রতিবেদন প্রচার করার পর সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই মুশফিকের পক্ষ নিয়ে মন্তব্য করেছেন, সমালোচনা করেছেন টেলিভিশন চ্যানেলটির। অবশেষে এ নিয়ে আজ সোচ্চার হয়েছে বিসিবিও। তার আগে অবশ্য আজ সকালেই মুশফিকের আইনজীবী টেলিভিশন চ্যানেলটির হেড অব নিউজ, ক্রীড়া সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশে চারটি বিষয়ে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে।

মুশফিকের যে আউট নিয়ে এত বিতর্ক

মিরপুর টেস্ট শেষে আজ বিকেলে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান। মুশফিককে নিয়ে করা প্রতিবেদনের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘একটা সময় ছিল মিথ্যা তথ্য দিলে মানুষ বেশি খেত। আপনারা তো সাংবাদিক, খোঁজ নিয়ে দেখেন। এ সমস্ত মিথ্যাচার করতে করতে মানুষ কিন্তু এখন উল্টো কথাও বলছে...এরা তো ক্রিকেটকে ধ্বংস করতে নেমেছে! এই জিনিসটাই আমরা চাচ্ছি। মানুষ জানুক, তারপর বিসিবির যা করার তা তো করবেই।’

জানা গেছে, মুশফিক আইনি নোটিশ পাঠানোর পর তাঁকে নিয়ে করা ৭১ টিভির প্রতিবেদনের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বিসিবিও। নাজমুল হাসানের কথায়ও সেই ইঙ্গিত, ‘আপনাদের আর কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আমরা কী করছি না করছি, জানতে পারবেন। ভিক্টিমের (মুশফিক) কাজটা ভিকটিম করেছে। ভিক্টিম যতক্ষণ কিছু না করে, আমাদের কিছু করার নেই। যদি আমাদের কেউ কিছু না জানায়, তাহলে আমাদের কিছু করার থাকে না। মুশফিক একটা পদক্ষেপ নিয়েছে, এখন বিসিবি যা করার করবে।’

Also Read: মিরপুরের স্পিন-স্বর্গের পক্ষে ভোট নাজমুলের

ভারতে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের দলের ড্রেসিংরুমে জাতীয় দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ছেলের উপস্থিতিকেও ফিক্সিংয়ের সম্ভাবনার সঙ্গে জড়িয়ে প্রশ্ন তুলেছিল ৭১ টিভি।

আজ সেটারও জবাব দিয়েছেন বোর্ড সভাপতি, ‘হাথুরুসিংহের ছেলে আমাদের এখানে ইন্টার্নশিপ করতে এসেছিল। অনেক দিন ধরেই যে কয়টা বিষয় দেখেছি, সব ডাহা মিথ্যা।’

সিরিজ সেরার পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন নাজমুল হাসান

কোথাও কোনো অনিয়ম দেখলে সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনা করাটাই স্বাভাবিক। বিসিবি বা ক্রিকেটাররাও সেটার উর্ধ্বে নন। আবার কারও বিরুদ্ধে বানোয়াট সংবাদ বা মিথ্যা সমালোচনা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সংবাদমাধ্যমেই তার প্রতিবাদ জানানোর নিয়ম। কিন্তু বরাবরই দেখা গেছে, খেলোয়াড়দের নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচারে বিসিবি নিশ্চুপ থাকে। বিসিবির বেতনভূক্ত কাউকে নিয়ে কোনো সংবাদ হলেও তার কোনো ব্যাখ্যা আসে না বোর্ড থেকে। তাতে মনে হওয়া স্বাভাবিক সংবাদটি সত্যি। কিন্তু সেটা হলে তো যিনি খবর হলেন, তার বিরুদ্ধে তো বিসিবির ব্যবস্থা নেওয়ার কথা।

Also Read: মিরপুর টেস্ট জেতা হলো না বাংলাদেশের

সেরকম উদাহরণও আবার নেই। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমুল হাসানের ব্যাখ্যা, ‘কাকে বাদ দিয়েছে? কাউকে তো বাদ দেয় নাই! খেলোয়াড়টা নতুন শুরু হয়েছে, খেলোয়াড় কিন্তু আগে ছিল না। সবসময় ছিল বিসিবি, তারপর হচ্ছে কিউরেটর, তারপরে আসছে নির্বাচক, তারপর হলো কোচ, তারপর উইকেট। কিছু বাদ নেই তো! এখন খেলোয়াড়। আমি শুধু একজনকে উদ্দেশ করে বলছি না, যারাই এসব করে তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার।’

বিসিবি সভাপতি আক্ষেপ করে বলেছেন, দেশের ক্রিকেটে শৃঙ্খলা রাখতে গিয়ে অনেক সময় নাকি মানুষের অপ্রিয়ও হতে হয়েছে তাঁকে, ‘যে কাউকে যখন কোনো শাস্তি দিয়েছি, সারা দেশের মানুষ আমাকে শেষ করে দিয়েছে। মানুষ তো এসব চায় না। কোনো একটা সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কেউ কি আমাদের সমর্থন দিয়েছে কখনো? বিসিবি কখনো সাপোর্ট পায়নি।’ তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট ভালো করতে হলে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে, মানুষ যেটা পছন্দ করবে না। আমাকে ধুয়ে ফেলবে সবাই। ডিসিপ্লিন বলে কিছু আছে? এগুলো ঠিক করতে হবে। অন্য এক প্রশ্নে বিসিবি সভাপতি পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বাস্তবতা মানুষের কাছে এমনিতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আপনারা হয়ত একটা গ্রুপকে দেখছেন। আমাদের কাছে অন্যান্য গ্রুপেরা কন্টিনিউয়াসলি সব পাঠাচ্ছে। সবকিছুর একটা সীমা আছে। সেটা যখন অতিক্রম করে যায় সেটা সাংবাদিকতা না আর কিছু!’

৭১ টিভি অবশ্য এরই মধ্যে মুশফিককে নিয়ে তাদের বিতর্কিত প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে দুঃখও প্রকাশ করেছে।