Thank you for trying Sticky AMP!!

মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে ভারত

অষ্টম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নিল ভারত

সমীকরণটা ছিল সহজ—জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ১০০ রান, বাংলাদেশের প্রয়োজন ৬ উইকেট। সকালে ৭ ওভারের মধ্যেই ৩ উইকেট নিয়ে জয়ের সম্ভাবনা বাংলাদেশ বাড়িয়েছিল অনেকটাই। তবে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও শ্রেয়াস আইয়ার।

অষ্টম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থেকে দুজন যোগ করলেন ৭১ রান, চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের বিপক্ষে এ উইকেটে ভারতের যেটি সর্বোচ্চ জুটি। ১ রানে জীবন পাওয়া অশ্বিন অপরাজিত থাকলেন ৪২ রানে, ভারত জিতল ৩ উইকেটে। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করে সবচেয়ে কম ব্যবধানে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের জয় এটি।

বড়দিনের সকাল এসেছিল মিরপুর টেস্টে রোমাঞ্চের হাতছানি দিয়েই। মেহেদী হাসান মিরাজের করা দিনের তৃতীয় বলেই হয় প্রথম রিভিউ। ব্যাট-প্যাড একসঙ্গে রেখে ডিফেন্ড করতে গিয়েছিলেন নাইটওয়াচম্যান জয়দেব উনাদকাট। ব্যাটের আগে প্যাডেই লেগেছিল বল, তবে উইকেটে অল্পের জন্য হয় আম্পায়ার্স কল। ঠিক পরের বলেই ছক্কা মেরে বাংলাদেশের হতাশা বাড়ালেও উনাদকাট অবশ্য এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি। পরের ওভারে সাকিবকে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে হন এলবিডব্লু।

মহামূল্যবান ৪২ রানের ইনিংসে ভারতকে জেতালেন অশ্বিন

ক্রিজে আসেন ঋষভ পন্ত, যাঁর দিকে অনেকটাই তাকিয়ে ছিল ভারত। সীমানার ওপর যান পাঁচজন ফিল্ডার। সাকিবকে রিভার্স সুইপ করে নিজের সহজাত খেলাও শুরু করেন পন্ত। কিন্তু এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের সঙ্গে লড়াইটা জেতেন মিরাজই। জোরের ওপর করা বলটিতে সামনে ঝুঁকে ডিফেন্ড করতে গিয়েও মিস করে যান পন্ত, মিরাজ আবেদনের আগেই শুরু করে দেন উদ্‌যাপন। আম্পায়ার ক্রিস ব্রাউনের এলবিডব্লুর সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত রিভিউ না করার সিদ্ধান্ত নেন পন্ত, পরে বল ট্র্যাকিং-ও দেখায়, রিভিউ নিলে সেটি অপচয়ই হতো।

পরের ওভারে এসে মিরাজ নেন ইনিংসে পঞ্চম উইকেটটি। এবার তাঁর শিকার অক্ষর প্যাটেল। পেছনের পায়ে ভর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন, তবে নিচু হওয়া বলটির নাগাল পাননি। অক্ষরের প্যাডে লেগে বল আঘাত করে স্টাম্পে। আজও শর্ট বল পেয়ে পুল করে একটি চার মেরেছিলেন অক্ষর, তবে তাঁকে থামতে হয় ৩৪ রানেই। অক্ষর আউট হওয়ার সময়ও ভারত জয় থেকে ৭১ রান দূরে দাঁড়িয়ে।

৫ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ

মিরাজ পেয়ে যেতে পারতেন ষষ্ঠ উইকেটটিও, তবে শর্ট লেগে ওঠা অশ্বিনের ক্যাচটি নিতে পারেননি মুমিনুল। গতকাল এ পজিশনেই কোহলির দারুণ একটি ক্যাচ নিয়েছিলেন তিনি। অশ্বিনের ক্যাচ পড়ার সময় শর্ট মিডউইকেটে থাকা সাকিব আফসোসে প্রায় শুয়েই পড়েন! অশ্বিন তখন ব্যাটিং করছিলেন ১ রানে, ভারতের প্রয়োজন ছিল ৬৫ রান। শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে সেই অশ্বিনের জুটি এরপর অবিচ্ছিন্ন থাকে প্রথম ঘণ্টায়।

দুই ডানহাতির বিপক্ষে কাজটা এরপর তুলনামূলক কঠিন হয়ে পড়ে মিরাজের, প্রথম পানি পানের বিরতির পরপরই স্কয়ার ড্রাইভে চার মারেন শ্রেয়াস, ৬৮ বলের মধ্যে ইনিংসে সেটি ছিল প্রথম বাউন্ডারি। দুই ওভার পর সাকিবকে এক্সট্রা কাভার দিয়ে চারের পর টেনে লং অন দিয়ে আরেকটি চার মারেন শ্রেয়াস। পরের চারটিতেই ১০০ পেরিয়ে যায় ভারত। ইনিংসের ৪১তম ওভারে সাকিবকে দুই চার মারেন শ্রেয়াস।

অশ্বিন–আইয়ার জুটি ভারতের হয়ে ম্যাচ শেষ করেন

৪৩তম ওভারে দিনে প্রথমবারের মতো পেসার আনেন সাকিব, তবে খালেদের ওই ওভারে অশ্বিন মারেন দুটি চার—প্যাডের ওপর থেকে ক্লিপ করার পর ড্রাইভে। খালেদের পরের ওভারে ৫০ রান ছুঁয়ে ফেলেন অশ্বিন-আইয়ারের জুটি। খালেদকে সরিয়ে এরপর মিরাজকে আনেন সাকিব, কিন্তু প্রথম বলটি আলগা পেয়ে ওয়াইড লং দিয়ে ছক্কা মারেন অশ্বিন। জয় থেকে ভারতের দূরত্ব নেমে আসে ১০ রানে।

পরের বলে ডাবলসের পর এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে তুলে চার মারেন অশ্বিন। ওভারের শেষ বলে লং অন দিয়ে মারা আরেকটি চারে ভারতের দুর্দান্ত এক জয় নিশ্চিত করেন অশ্বিন, বাংলাদেশ ডোবে হতাশায়।