Thank you for trying Sticky AMP!!

জিতেশ শর্মা

পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেতে ক্রিকেটার হয়েছেন যে ভারতীয় উইকেটকিপার

ক্রিকেটার হওয়ার জন্য ক্লাস ফাঁকি দিয়েছেন। ক্রিকেট নিয়ে স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি—এমন গল্প তো হামেশাই শোনা যায়। তবে ভারতীয় ক্রিকেটার জিতেশ শর্মার গল্পটা একটু অন্য রকম।

ভারতের এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান ক্রিকেট খেলেছেন স্কুলে বেশি নম্বর পাওয়ার আশায়। ক্লাস টেনে ওঠার আগে রাজ্য দলে খেলতে পারলে ৪ শতাংশ নম্বর বেশি পাওয়া যেত—মহারাষ্ট্রের এক স্কুলের এই নিয়মই ক্রিকেটার বানিয়েছে জিতেশকে।

২৮ বছর বয়সী জিতেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেই ডাক পেয়েছিলেন। সেই সিরিজে খেলার সুযোগ পাননি। এখন খেলার অপেক্ষায় আছেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে।

ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাঁর ক্রিকেটার হয়ে ওঠার গল্প শুনিয়েছেন জিতেশ, ‘আমি কখনোই ক্রিকেট খেলতে চাইনি। আমার ক্রিকেটের প্রতি কোনো আগ্রহই ছিল না। আমি ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলাম মূলত স্কুলে বেশি নম্বর পেতে। মহারাষ্ট্রে একটা নিয়ম ছিল, যদি ক্লাস টেনে ওঠার আগে আপনি রাজ্য দলে খেলতে পারেন, তাহলে ৪ শতাংশ নম্বর অতিরিক্ত পাবেন।’

Also Read: বাবরের সেরা সময় আসতে এখনো বাকি

জিতেশ উইকেটকিপারও হয়েছেন কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়াই। কীভাবে স্কুলের ফুটবল দলে খেলা জিতেশ ক্রিকেট দলে জায়গা পেয়েছেন, জানিয়েছেন সেই গল্পটাও, ‘আমি স্কুলের হয়ে ফুটবল খেলতাম। একদিন আমার বন্ধুরা বলল আমাদের স্কুলের ক্রিকেট দলটা ভালো। সেই দলে যদি খেলতে পারি, তাহলে নম্বর আরও বেশি পেতে পারি। আমি স্কুল ক্রিকেটের বাছাইয়ে যাই সেই অতিরিক্ত নম্বর পাওয়ার আশায়। স্কুলে কোনো উইকেটকিপার ছিল না, আমাকে তারা প্রশ্ন করেছিল আমি উইকেটকিপার কি না। আমি না ভেবেই বলেছিলাম, আমি উইকেটকিপার। সেদিন থেকেই আমার উইকেটকিপিং করা শুরু। উইকেটকিপার হিসেবে আমি ভালোই ক্যাচ ধরছিলাম, এভাবে স্কুলের দলে সুযোগও পেয়ে গেলাম। ক্লাস টেনে ওঠার আগেই আমি আমার রাজ্য দলের হয়েও খেলে ফেলি।’

কোহলির সঙ্গে পাঞ্জাব কিংসে খেলা জিতেশ

জিতেশ প্রথম আলোচনায় আসেন সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে পারফর্ম করে। ২০১৫-১৬ মৌসুমে ১৪৩ স্ট্রাইক রেটে ৩৪৩ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। মুশতাক আলী ট্রফির পারফরম্যান্স দেখে তাঁকে ২০১৬ সালে আইপিএলের নিলামে দলে ভেড়ায় মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। যদিও এক ম্যাচেও মাঠে নামা হয়নি তাঁর।

২০১৬ সালে আইপিএলে ডাক পাওয়া জিতেশ আইপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলেন ছয় বছর পর, ২০২২ সালে। পাঞ্জাব কিংসের হয়ে গত বছর দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটিয়েছেন। শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে এসে দ্রুত রান তোলার কাজটা করেছেন। রান করেছেন ১৬৩ স্ট্রাইক রেট আর ২৯ গড়ে।

Also Read: সিলেটে লেগেছে বিপিএলের রং

এরপরই ডাক পেয়ে গেলেন ভারতের টি–টোয়েন্টি দলে। সেই ডাক পাওয়াটাকেও বলতে হবে নাটকীয়ই, ‘দল ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল। আমিও ডাক পাওয়ার কথা ভাবিনি। রঞ্জি ট্রফিতে ছিলাম না, তাই নিজে নিজেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময়ে (সঞ্জু) স্যামসন চোটে পড়লে ডাক পেয়ে যাই।’

মুম্বাইয়ের হয়ে আইপিএলে ডাক পেয়েছিলেন জিতেশ

আইপিএলে মুম্বাইয়ের হয়ে খেলতে না পারলেও তা নিয়ে আফসোস ছিল না জিতেশ শর্মার। এখন তো আরও নেই। শচীন টেন্ডুলকার, রোহিত শর্মাদের সঙ্গে সময় কাটানো সে অধ্যায়টাকেই যে জীবনের সেরা সময় বলে মানেন। দূর থেকে রোহিত শর্মার ব্যাটিং দেখা, ড্রেসিংরুমে শচীন টেন্ডুলকারের কণ্ঠ শুনেই খুশি থেকেছেন এই উইকেটকিপার, ‘মুম্বাইয়ের হয়ে কাটানো দুই বছরই জীবনের সেরা সময়। ড্রেসিংরুমে শচীন টেন্ডুলকারের কণ্ঠটা শুনেই ভালো লাগত। দূর থেকে রোহিতের ব্যাটিংটা দেখতাম। সে যখন প্রথমবার আমার নাম ধরে ডাক দিয়েছিল, আমার মনে হয়েছে, আমি জীবনে সবকিছু পেয়ে গেছি।’

Also Read: বিপিএলে ডিআরএস না থাকার কারণ তাহলে আইপিএল