Thank you for trying Sticky AMP!!

রাঁচি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১২২ রান করেন জো রুট

স্টোকস–রুটদের ‘গোঁয়ার্তুমি’ ছাড়তে বললেন বয়কট

প্রথম ১৩ ম্যাচে ১১, পরের ৯ ম্যাচে ৩। ২২ বলে ১৪—এই হচ্ছে বাজবল ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের জয়ের সংখ্যা।

২০২২ সালের মে থেকে গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বেশ ভালো সাফল্য পেয়েছিল ব্রেন্ডন ম্যাককালাম-বেন স্টোকস জুটির টেস্ট দল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ ও চলমান ভারত সিরিজ মিলিয়ে সর্বশেষ ৯ টেস্টে জয়ের হার নেমে এসেছে এক-তৃতীয়াংশে। এর জেরে বাজবল ক্রিকেটের কার্যকারিতা নিয়ে যে আলোচনা শুরু হয়েছে, তাতে শামিল হয়ে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক ক্রিকেটার জিওফ বয়কট।
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, বাজবল প্রশংসার যোগ্য হলেও এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জেতা। ইংল্যান্ড দলকে নিজেদের চলতি ধারার ওপর অটল থাকার ‘গোঁয়ার্তুমি’ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ভারতে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলতে আসা ইংল্যান্ড হায়দরাবাদে জিতলেও বিশাখাপট্টনম, রাজকোট ও রাঁচিতে টানা তিন টেস্ট হেরেছে। ম্যাককালাম-স্টোকস ইংল্যান্ডের কোচ-অধিনায়ক হওয়ার পর ইংল্যান্ডের প্রথম সিরিজ হার এটি। এর আগে গত বছর অ্যাশেজে দুই টেস্টে পিছিয়ে যাওয়ার পর ২-২ সমতায় সিরিজ শেষ করে তারা।

অস্ট্রেলিয়ার পর ভারতের বিপক্ষেও ইংল্যান্ডের সিরিজ জিততে না-পারা দলটি খেলার ধরন নিয়ে প্রশ্নের সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করেন বয়কট। ডেইলি টেলিগ্রাফে লেখা কলামে কিংবদন্তি এই ক্রিকেটার লিখেছেন, ‘বাজবল টেস্ট ক্রিকেটকে একটা ঝাঁকুনি দিতে পেরেছে। এ জন্য ইংল্যান্ড প্রশংসার যোগ্য। মাঝে মাঝে এটা আমার ভালোও লাগে। কিন্তু জেতাটাই আমি বেশি পছন্দ করি। অস্ট্রেলিয়ার পর ভারত—বিশ্বসেরা দুটি দলের বিপক্ষেই ইংল্যান্ড জিততে ব্যর্থ। যেটা সবচেয়ে খারাপ লাগার, সেটা হচ্ছে এই দুই দলকেই ইংল্যান্ডের হারানোর কথা।’

Also Read: বাজবল নিয়ে সংশয়ের সময় আসেনি: নাসের হুসেইন

ভারতের বিপক্ষে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হারের পেছনে ব্যাটসম্যানদের অধারাবাহিকতাকে দায়ী করেছেন বয়কট। এ ক্ষেত্রে একটি পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছেন তিনি, ‘ইংল্যান্ডের মাত্র একজনের গড় ৪০-এর বেশি। কিন্তু ভারতের ৬ ব্যাটসম্যানের গড় ৪৩-এর ওপরে।’

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক জিওফ বয়কট

ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলা ভালো, কিন্তু প্রতিটি বল মারার চেষ্টাকে সঠিক নয় বলে মনে করেন বয়কট। ইংল্যান্ডের হয়ে ১০৮টি টেস্ট খেলা এই ওপেনার ইংল্যান্ড দলকে আত্মশ্লাঘা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন, ‘ওদের এখন আত্মশ্লাঘা থেকে বেরিয়ে আসা এবং বড় দলগুলোকে হারানো শুরু করা দরকার। কম শক্তির দলের বিপক্ষে ভালো করাও ভালো, কিন্তু ইংল্যান্ডকে বিচার করা হবে তারা অস্ট্রেলিয়া-ভারতকে হারাতে পারল কি না। আমাদের ব্যাটসম্যানরা দুটি সিরিজেই উড়ে গেছে।’

Also Read: জেতার চেয়ে আনন্দ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ হলে প্রদর্শনী হয়ে পড়বে অ্যাশেজ

ইংল্যান্ড দল কেমন গোঁয়ার্তুমি করে, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে জো রুটের কথা তুলে এনেছেন বয়কট। সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে রান না পাওয়া এই ব্যাটসম্যান চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১২২ রানের ইনিংস খেলেন। যে ইনিংসে সেঞ্চুরির পথে একটিও রিভার্স স্কুপ খেলেননি তিনি। তবে সংবাদ সম্মেলনে রুট জানান, সেঞ্চুরির আগমুহূর্তে শটটি খেলার চিন্তা তাঁর ছিলই। পুরো বিষয়টি নিয়ে বয়কট লিখেছেন, ‘আমার রাগ হচ্ছে না। কিন্তু দুঃখ হচ্ছে। প্রায়ই ওরা দারুণ রোমাঞ্চ উপহার দেয়। এটাকে শুধু একটু নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার। জো রুটের দিকেই দেখুন। সে যখন আগের মতো করে খেলছিল, মনে হয়নি সে আউট হবে। চমৎকার একটা সেঞ্চুরিও করল। কিন্তু জিজ্ঞেস করা হলে বলল, সে আবারও রিভার্স স্কুপ খেলবে। এটাকে আমি গোঁয়ার্তুমি বলব। সে এযাবৎকালের অন্যতম সুন্দর একটা সেঞ্চুরি করল। আর কিনা আবারও ওই সব শটের চিন্তা করছে? যখন আপনি নিজেকে খুব বুদ্ধিমান বলে দেখাতে চাইবেন, তখন এ রকম হয়।’

স্টোকসদের ব্যাটিংয়ের ধরনের নিয়ন্ত্রণ দরকার মনে করেন বয়কট

উদ্ভাবনী শট ছাড়াই যে ক্রিকেটে সফল হওয়া যায়, সে কথাও তুলে ধরেছেন বয়কট, ‘রুট এক ইনিংসে নিজেকে মৌলিক ধারায় ফিরিয়ে নিল, আর সেটাতেই চমৎকার খেলল। এতেই সবকিছু বোঝা যাচ্ছে। মৌলিক ধারা ২০০ বছর ধরে টিকে আছে। এতে সম্পূর্ণ ভুল কিছু হতে পারে না। আমি জানি, কিছু খেলোয়াড় আইপিএলে র‍্যাম্প শট, স্কুপ শট খেলে মনে করে, তারা ক্রিকেটকে পুনরাবিষ্কার করেছে। কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। তারা আসলে উদ্ভাবন করেছে। কিন্তু ক্রিকেটেরে মৌলিক ধারা কখনোই বদলায়নি।’
ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের পঞ্চম টেস্ট শুরু হবে ৭ মার্চ ধর্মশালায়।

Also Read: ঘরোয়ায় না খেলার শাস্তি আইয়ার-কিষানের, বাদ কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে