Thank you for trying Sticky AMP!!

দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন লিটন দাস

নিজের ব্যাটিং নিজেরই ভালো লাগে না লিটনের!

একদম ফুল লেংথ বলা যাবে না। ৪ মিটার থেকে মাশরাফি বিন মুর্তজার ছোট্ট সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বলটি আলতো করে ব্যাট ছোঁয়ালেন লিটন দাস। বলটি কাভার অঞ্চল দিয়ে গড়িয়ে গেল বাউন্ডারিতে। একই ওভারের পরের বলটিরও ঠিক একই পরিণতি।

লিটনের এমন চোখ–জুড়িয়ে যাওয়া ড্রাইভ নিয়ে নতুন করে বলার আছে সামান্যই। কিন্তু আজ দুটি বাউন্ডারির পর সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক মাশরাফির মুখশ্রী ছিল আত্মসমর্পণের প্রতিচ্ছবি। আর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ছিল মুগ্ধতা।

Also Read: মাশরাফির সিলেটের জয়রথ থামালেন লিটনরা

লিটনের শিল্পীসত্তার বিষয়টি অবশ্য নতুন নয়। সমৃদ্ধ শটের ভান্ডারের এই ব্যাটসম্যানের ব্যাটসম্যানশিপের প্রশংসা হয় সবখানেই। কাভার ড্রাইভ তো আছেই। পুল, ফ্লিক আর কাট শটেও লিটনের তুলনা হয় না। তবে মাশরাফির বলে ওই দুটি কাভার ড্রাইভ দেখলে যে কেউই বলবে, এই শট খেলায় বিশ্বের অন্যতম সেরা লিটনই।
কিন্তু লিটনের নিজের প্রিয় শট কোনটা?

আজ সিলেটের বিপক্ষে ৭০ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংসের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি জানালেন, স্ট্রেট ড্রাইভ তাঁর সবচেয়ে পছন্দের শট। কিন্তু এই শটটা নাকি তিনি খুব ভালো খেলতে পারেন না, ‘স্ট্রেট ড্রাইভ খেলতে পছন্দ করি। কিন্তু আমি খুব ভালো খেলতে পারি না শটটা। কখনো কখনো হয়ে গেলে নিজেই অবাক হই।’

শট খেলছেন লিটন

লিটনের ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যায় অনেকেই ‘চোখের শান্তি’ শব্দ দুটি ব্যবহার করেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, নিজের ব্যাটিংয়ের ভিডিও নাকি লিটনের নিজেরই ভালো লাগে না! লিটনই বলছিলেন, ‘নিজের ব্যাটিং দেখি। দেখে মনে হয়, কী ব্যাটিং করলাম! আরও ভালো করা উচিত ছিল।’

Also Read: তামিমের প্রথম ফিফটিতে খুলনারও প্রথম জয়

লিটনের ব্যাটিংয়ে দেখার এই আনন্দটা সব সময়ই ছিল। ছিল না ধারাবাহিকতা। গত কয়েক বছরে তিন সংস্করণের ক্রিকেটেই সেটি অর্জন করেছেন। ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় লিটন ছিলেন দুই নম্বরে। আর তিন সংস্করণে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের মালিকও তিনি।

Also Read: ডিম খেয়ে গতির ঝড় তোলেন হারিস রউফ

এই ধারাবাহিকতা কীভাবে অর্জন করেছেন, সে প্রশ্নের উত্তরে লিটন বলেছেন, ‘কঠোর পরিশ্রম তো আছেই। মানসিকতা একটা বড় ব্যাপার। ম্যাচে যুক্ত থাকা আরেকটা ব্যাপার। আর সবাই ক্রিকইনফোর পরিসংখ্যান দেখে। সেটা খারাপ দেখালে নিজের কাছেই খারাপ লাগে।’

কঠোর পরিশ্রম প্রসঙ্গে লিটন আরও যোগ করেন, ‘আমি কঠোর পরিশ্রম করি। তবে সেটা যতটা প্রয়োজন ঠিক ততটা। আমি একটু ভারমুক্ত থাকতে পছন্দ করি। সে জন্য কোনো সিরিজ শেষ হলে আমি এক সপ্তাহ বিশ্রাম নিই। পরিবারকে সময় দিই। খেলা থেকে দূরে থাকি। যেন আবার ফিরলে ভালো করার সেই ক্ষুধাটা থাকে।’

ফিফটির পর লিটনের সঙ্গে উদ্‌যাপনে সতীর্থ জনসন চার্লস

লিটনকে এখন বিবেচনা করা হয় জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে। তাঁর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির এই বদলের কারণে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের ধরনও বদলেছে। তিনি সংবাদ সম্মেলনে এসে এখন প্রসঙ্গ শুধু লিটনে সীমাবদ্ধ থাকে না। সেটি ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিভিন্ন দিকে।

Also Read: নেটে মাইন্ড গেমের তালিম নিলেন মাহমুদউল্লাহ

আজ যেমন জাতীয় দলে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলে পারফর্ম করা তরুণদের মধ্যে কাকে মানানসই মনে হচ্ছে, এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে লিটনকে। লিটনও মজার ছলে উত্তর দিয়েছেন, ‘আপনারা আমাকে এমনভাবে প্রশ্ন করছে, যেন দলে আমার জায়গা নিশ্চিত। আমার জায়গাও নিশ্চিত না (হাসি)। না, এটা মূলত ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার। তারা দেখবে কে ভালো করছে, কাকে সুযোগ দেওয়া যায়।’