Thank you for trying Sticky AMP!!

গিলের (মাঝে) সেঞ্চুরির পর রোহিতের (বাঁয়ে) অভিনন্দন

রোহিত-গিলের সেঞ্চুরির দিনে ইংল্যান্ডকে ‘শাস্তি’ দিল ভারত

ইংলিশ ফিল্ডাররা হাসছেন, মার্ক উড তো বিস্ময়ে মাথায় হাতই দিয়ে ফেলেছেন। ডাগআউটে ট্যাবলেটে চোখ রেখে হাত দিয়ে মুখটা ঢেকে রেখে হাসিটা আড়াল করছেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। মাথাও নাড়াচ্ছিলেন ইংল্যান্ড কোচ, যার অর্থ হতে পারে একটিই—‘কীভাবে?’ এমনকি বোল্ড হয়ে বিস্মিত রোহিত শর্মার মুখেও হাসি। ১৬২ বলে ১০৩ রান করার পর অমন একটি ডেলিভারির সামনে পড়লে রোহিতের হয়তো হাসা ছাড়া উপায়ও থাকে না।

যাঁর ‘কর্মকাণ্ডে’ হাসি, সেই বেন স্টোকসই শুধু নির্লিপ্ত। ২৫১ দিন পর প্রথমবারের মতো ম্যাচে বোলিং করতে এসেছেন, সিমে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া বলটা ভেঙে দিয়েছে রোহিতের স্টাম্প। টুইটার সরব হয়ে উঠেছে সঙ্গে সঙ্গেই, কে লেখেন স্টোকসের এমন চিত্রনাট্য? কিন্তু স্টোকসের ভাবলেশ নেই খুব একটা। এমন কাজ যেন তাঁর জন্য খুবই স্বাভাবিক!

তবে ধর্মশালায় বোলিংয়ে ফেরা স্টোকসের ওই বিস্ময়-ডেলিভারিও ঠিক ম্যাচে ফেরাতে পারেনি ইংল্যান্ডকে। টানা ৫ ওভার বোলিং করে আর সফল হননি স্টোকস। উইকেটের দেখা ইংল্যান্ড পেয়েছে ঠিকই, শেষ সেশনে এসে তো মিলেছে ৫টি। কিন্তু ধর্মশালায় ভারতের লিড তাদের কাছে মাঠের পাশেই হিমালয়ের সমান ভারী হয়ে ওঠার কথা। দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেট বাকি রেখে ভারত এগিয়ে গেছে ২৫৫ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে এত রানে পিছিয়ে থেকে ইংল্যান্ড এর আগে টেস্ট জিতেছে একবারই, সেটিও ১৮৯৪ সালে।

ফিরেই উইকেটের দেখা স্টোকসের, যা বিস্মিত করেছে সতীর্থদেরও

গতকালই রোহিত ও শুবমান গিল আভাস দিয়েছিলেন, আজ কাজটি ঠিক সহজ হবে না ইংল্যান্ডের। দুজন প্রথম সেশনে আজ রীতিমতো শাস্তিই দিলেন স্টোকসের দলকে। ৮৩ রানে পিছিয়ে দিন শুরু করেছিল ভারত, সে ব্যবধান মিলিয়ে যায় যেন চোখের পলকেই। প্রথম সেশনে অবিচ্ছিন্ন থাকেন দুজন, তোলেন ১২৯ রান। নামের পাশে সিরিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি নিয়েই মধ্যাহ্নবিরতিতে যান রোহিত ও গিল। ইংল্যান্ডের জন্য স্কোরকার্ড তখন হয়ে উঠছিল ভয়ংকর।

টম হার্টলির বলে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রোহিত, লাগে ১৫৪ বল। ২ বল পর আরেক স্পিনার বশিরকে স্লগ সুইপে মারা চারে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরিটি পান গিল। গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছিলেন গিলের বাবা, ফলে মুহূর্তটা তরুণ ভারতীয় ব্যাটসম্যানের জন্য ছিল আরও বিশেষ।

Also Read: বাজবলের পেছনে লুকিয়ে লাভ নেই ইংল্যান্ডের: নাসের হুসেইন

বিরতির পর প্রথম ওভারেই অ্যান্ডারসনকে দুটি চার মারা গিল ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সামনের সময়টা আরও কঠিন হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ডের। এরপরই আসেন স্টোকস, যিনি সর্বশেষ বোলিং করেছিলেন গত বছরের জুনে লর্ডসে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে। অধিনায়কের উইকেট পাওয়াতে উজ্জীবিত হয়েই কিনা পরের ওভারে গিলকেও বোল্ড করেন অ্যান্ডারসন।

দুই থিতু ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে তখন ম্যাচে ফেরার আভাসও দিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু অভিষিক্ত দেবদূত পাডিক্কাল ও সরফরাজ খানের পাল্টা-আক্রমণ সেটি হতে দেয়নি। পাডিক্কাল শুরু থেকেই শট খেলতে থাকেন, রঞ্জি ট্রফির দারুণ ফর্মটাই (৪ ম্যাচে ৯২.৬৬ গড়) যেন বয়ে আনেন টেস্ট ক্রিকেটেও। ৮৩ বলে পূর্ণ করেন প্রথম ফিফটি, ততক্ষণে মারেন ৮টি চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা। সরফরাজ অবশ্য প্রথম ৩০ বলে করেছিলেন ৯ রান, কিন্তু ফিফটি করতে তাঁর লাগে মাত্র ৫৫ বল। রোহিত-গিলের মতো অবিচ্ছিন্ন থেকে আরেকটি বিরতিতে যান পাডিক্কাল ও সরফরাজ, দ্বিতীয় সেশনে ভারত তোলে ১১২ রান।

পাডিক্কাল-সরফরাজের পাল্টা-আক্রমণে আহত ইংল্যান্ড

শেষ সেশনের শুরুটাও ইংল্যান্ডের জন্য ছিল আশাজাগানিয়া। বশিরের করা প্রথম বলেই স্লিপে জো রুটকে ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে ফেরেন সরফরাজ। হুট করেই দৃশ্যপটে আসেন ইংলিশ স্পিনাররা। পাডিক্কাল, ধ্রুব জুরেল, রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন আউট হন ২৫ রানের মধ্যে। বশিরের পর সফল হন হার্টলিও। তবে দিনটা ইংল্যান্ডের জন্য বিস্মৃত হয়েই থাকবে, সেটিই যেন নিশ্চিত করতে আসেন যশপ্রীত বুমরা ও কুলদীপ যাদব। শেষে এসে দুজন যোগ করেছেন ১০৮ বলে ৪৫ রান, যে জুটি অবিচ্ছিন্ন। বশির ৫ উইকেট পাননি, অ্যান্ডারসন ৭০০ উইকেট থেকে ১টি ও স্টোকস ২০০ উইকেট থেকে ২টি দূরে। তবে এমন দিনের পর তাঁদের অপেক্ষা তো শুধু দীর্ঘই মনে হওয়ার কথা!

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৭.৪ ওভারে ২১৮ (ক্রলি ৭৯, বেয়ারস্টো ২৯, ডাকেট ২৭, রুট ২৬; কুলদীপ ৫/৭২, অশ্বিন ৪/৫১, জাদেজা ১/১৭)।
ভারত ১ম ইনিংস: (গিল ১১০, রোহিত ১০৩, পাডিক্কাল ৬৫, জয়সোয়াল ৫৭, সরফরাজ ৫৬; বশির ১/৬৪, হার্টলি স্টোকস, অ্যান্ডারসন)।
ভারত ২৫৫ রানে এগিয়ে

Also Read: কুলদীপ, জয়সোয়াল আর ভারতীয় স্পিনারদের রেকর্ডের এক দিন