Thank you for trying Sticky AMP!!

আর্জেন্টাইন কোচের সেই ব্রাজিলিয়ান 'সুপারহিরো'

>
টটেনহামকে ফাইনালে তুলেছেন লুকাস মউরা। ছবি: এএফপি

চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে পঞ্চম ফুটবলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করলেন লুকাস মউরা

দলে নেইমারের জায়গা ঠিক করতে লুকাস মউরাকে বেচে দিয়েছিল পিএসজি। কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নেইমার জুটি বেঁধে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাবেন, এমন স্বপ্নই দেখেছিল ফরাসি ক্লাবটি। আর এ স্বপ্ন বাস্তবে অনূদিত করতেই ‘বলি’ দেওয়া হয়েছিল মউরাকে। ট্রান্সফারের বিশ্ব রেকর্ড গড়ে নেইমারকে নিয়ে আসার পর শেষ ষোলোর বাধাই টপকাতে পারেনি পিএসজি। অন্যদিকে পিএসজির মতো ব্রাজিল জাতীয় দলেও বাতিল হয়ে পড়া মউরা উঠে গেলেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে!

‘বলি’ শব্দটা বোধহয় একটু বেশি-ই বলা হয়ে গেল। ঠিক ‘বলি’ নয়, পিএসজির একাদশেও অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলেন মউরা। আর ব্রাজিল দলে সবশেষ খেলেছেন গত বছর। বদলি হয়ে মাঠে নামতেই বেশি দেখা যায় । গত বছর জানুয়ারিতে টটেনহামে যোগ দেন মউরা। দলটির আর্জেন্টাইন কোচ মাউরিসিও পচেত্তিনো তাঁকে বাস্তবতাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, দলে তোমাকে নিজের জায়গা অর্জন করে নিতে হবে। সেই পচেত্তিনোই কাল ম্যাচ শেষে মউরা সম্পর্কে বলেছেন, ‘ওরা (টটেনহামের খেলোয়াড়রা) সবাই হিরো কিন্তু মউরা সুপারহিরো।’

অমিত প্রতিভা নিয়ে এসে হুট করে হারিয়ে যাওয়া মউরাকে নিয়ে পচেত্তিনোর উদ্বেলিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। আয়াক্সের বিপক্ষে ঘরের মাঠে প্রথম লেগেই ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল টটেনহাম। কাল ফিরতি লেগে ৩৫ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ইংলিশ ক্লাবটি। মউরা এখান থেকে একা জিতিয়েছেন দলকে, হ্যাটট্রিক করে। চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে হ্যাটট্রিক করার নজির খুব বেশি নেই। আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো, ইভিকা ওলিচ, রবার্ট লেভানডভস্কি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর পঞ্চম ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিতে হ্যাটট্রিকের দেখা পেলেন মউরা।

সেটিও আবার দলের ভীষণ প্রয়োজনের মুহূর্তে। আক্রমণভাগের মূল তারকা হ্যারি কেইন ছিলেন না। ডেলে আলী, এরিকসন, লরেন্তে , সনদের নিয়ে আক্রমণের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন মউরা। দ্বিতীয়ার্ধে নিজের প্রথম দুটি গোলের মাঝে সময় নিয়েছেন মাত্র ৪ মিনিট। এরপর গোল করেছেন ম্যাচের অন্তিম সময়ে। মউরা নিজেও নিশ্চয়ই ভীষণ তৃপ্ত? তা কতটা, ম্যাচ শেষে তাৎক্ষণিকভাবে অবশ্য বোঝাতে পারলেন না, ‘কেমন লাগছে তা ব্যাখ্যা করা অসম্ভব।’

তবে মউরার মনের মধ্যকার তুষের আগুন সম্ভবত নিভেছে। ব্রাজিল জাতীয় দলে ব্রাত্য হয়ে পড়া, পিএসজি কিংবা টটেনহামে সেভাবে থিতু হতে না পারা—মউরা এসব ক্ষোভের প্রশমন ঘটিয়েছেন টুইটে বাইবেলের বাণী তুলে ধরে, ‘সৃষ্টিকর্তা সঙ্গে থাকলে কোনো কিছুই অসম্ভব না।’ আসলে ২৬ বছর বয়সী মউরা তাঁর ক্যারিয়ারে পুনর্জন্মের দিশা খুঁজে পেয়েছেন কাল রাতে হ্যাটট্রিকের পর।

আয়াক্সের গোলপোস্টে তাঁর নেওয়া ৫টি শটের মধ্যে ৩টি-ই গোল। প্রতিটি গোলই টটেনহামের জন্য মহামূল্যবান। জয়ের পর পচেত্তিনো তাই নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। শেষ বাঁশি বাজার পর টটেনহাম কোচের চোখে দেখা গেল আনন্দাশ্রু। কোচের চোখে এভাবে অশ্রু এনে দেওয়া ইচ্ছা তো কত খেলোয়াড়েরই থাকে! সবাই কি তা পারে? চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে যেমন লিওনেল মেসির কোনো হ্যাটট্রিক নেই।

মউরার আছে এবং সেটি টটেনহাম সমর্থকেরা সম্ভবত কখনো ভুলতে পারবে না।