Thank you for trying Sticky AMP!!

এক সেকেন্ডের জন্যও চিন্তিত নন মরিনহো

চাকরি নিয়ে ভাবেন না মরিনহো। ছবি: রয়টার্স।

গুঞ্জনটা এত বেশি ছড়িয়ে পড়েছে যে এখন একে সত্যি বলেই মনে হচ্ছে। ‘হতেও পারে’র গণ্ডি ছাড়িয়ে হোসে মরিনহোর ছাটাই হওয়ার বিষয়টা এখন যেন ‘হবেই’-তে রূপ নিয়েছে। ইংলিশ সংবাদমাধ্যমগুলো কদিন ধরে বারবার ভাঙা রেকর্ড বাজিয়ে যাচ্ছে, আজ লিভারপুল ম্যাচে হেরে গেলেই চাকরিটা চলে যেতে পারে চেলসি কোচের। আর কোনোক্রমে যদি আজ বেঁচেও যান সময়টা পাবেন নভেম্বরের আন্তর্জাতিক বিরতি পর্যন্ত। এর মধ্যে দলের পারফরম্যান্স ভালো না হলে ‘নিশ্চিত’ ছাঁটাই মরিনহো।

এ পর্যন্ত পড়ে একটু বিরক্তি ধরে যেতে পারে। প্রতিদিন প্রায় একই কথা কাঁহাতক আর শুনতে ভালো লাগে? আপনারই যদি এমন মনে হয়, তাহলে কল্পনা করুন তো মরিনহোর নিজের প্রতিক্রিয়াটা কেমন হবে? ‘চুপচাপ সহ্য করেন’ এমন ‘অপবাদ’ কখনোই ছিল না। মরিনহো এই বিষয়েও মুখ বন্ধ রাখবেন তা কি করে হয়!

কালই লিভারপুলের সংবাদ সম্মেলনে ইয়ুর্গেন ক্লপ চেলসি কোচের সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘উনি খুবই ভালো লোক, যদি আপনি সাংবাদিক বা রেফারি না হন।’ পুরো সংবাদ সম্মেলন জুড়েই যেন ক্লপের উক্তিটার যথার্থতা প্রমাণ করে গেলেন মরিনহো। সাংবাদিকদের তির ছুঁড়ে গেলেন পুরোটা সময়।

শুরুটা করলেন তাঁর ছাঁটাইয়ের বিষয়ে সব জল্পনা-কল্পনা ও প্রশ্নে নিজের নির্লিপ্ততা জানিয়ে, ‘চাকরি নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই। ভবিষ্যৎ নিয়েও না।
দিনে একটা সেকেন্ডের জন্যও আমি বিষয়টা নিয়ে ভাবি না।’ এরপরই শুরু হলো মরিনহোর আক্রমণ, ‘দেখে মনে হচ্ছে আপনারাই (মিডিয়া) এই বিষয়টাতে আমার ওপর চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু এমনটা করতে পারেন না আপনারা।’
সংবাদমাধ্যমের এই ‘রোমাঞ্চে’র কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না পর্তুগিজ কোচ, ‘আমি যেটা বুঝতে চেষ্টা করছি তা হলো, কীভাবে কিছু লোক অন্য একজনের চাকরি হারানোর সম্ভাবনায় এত খুশি বা রোমাঞ্চিত হতে পারে! যদি আপনি আমাকে বলেন যে আপনার পত্রিকা ২০ জন লোককে ছাঁটাই করতে যাচ্ছে, প্রথমে আমি আপনার জন্যই উদ্বিগ্ন হব। বিশ্বাস করুন! এরপর হতাশ হব ওই ২০ জনের জন্যও, যাদের চাকরি যাচ্ছে। কিন্তু এটাই (কোচিং) একমাত্র চাকরি যেখানে ছাঁটাইয়ের বিষয়ে অন্য সবাই রোমাঞ্চিত হয়ে পড়ে। এটা দুঃখজনক।’

নিজের অবস্থা বোঝাতে টেনে আনলেন লিভারপুলে ‘সাবেক’ হয়ে যাওয়া কোচ ব্রেন্ডন রজার্স প্রসঙ্গও। ২০১৩-১৪ মৌসুমে মার্সিসাইড ক্লাবটিকে ২৩ বছরে প্রথম শিরোপার খুব কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলেন রজার্স, ওই বছর প্রিমিয়ার লিগের সেরা কোচও হয়েছিলেন। অথচ পরের মৌসুমে দলের পারফরম্যান্স খারাপ হতেই তাঁকে ছাঁটাইয়ের আওয়াজ উঠতে লাগল। মরিনহোর ভাষায় যেটি মিডিয়ার ‘খুশিমনে কঠোর পরিশ্রম’ ছিল। এই মানসিকতাটাই পছন্দ নয় চেলসি কোচের, ‘এটা অদ্ভুত। এ জগতের সঙ্গে আমার মেলে না। আমি অনেক আবেগপ্রবণ। লোকজনকে চাকরি হারাতে দেখলে খুব খারাপ লাগে। সেটা শুধু ফুটবলেই নয়, অন্য সব জায়গাতেও।’

কিন্তু মরিনহোর খারাপ লাগলেই তো হবে না, বাজিকর প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে চেলসিতে তাঁর উত্তরসূরি কে হবেন এ নিয়ে বাজি ধরতে শুরু করে দিয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করতেই মরিনহো অগ্নিশর্মা, ‘বাজি আর সম্ভাবনা নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলবেন না। এটা আপনাদের সংস্কৃতিতে আছে, আমার না।’ বরং তাঁর মনোযোগ চেলসির পারফরম্যান্স আরও ভালো করার দিকেই বলে জানালেন পর্তুগিজ কোচ।

এই কদিন আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আপনারা আমার কাছ থেকে আর কোনো মজার বা ভালো কোনো শিরোনাম পাচ্ছেন না।’ কিন্তু এখন মরিনহোর প্রতিটি কথাই যেন শিরোনাম।

নাহ্, লোকটা একদমই প্রতিজ্ঞা রাখতে জানেন না! গোলডটকম, এনডিটিভি।