Thank you for trying Sticky AMP!!

জীবনের রং বদলে গেছে মতিনের

মতিন মিয়া

জীবনের রংটা হঠাৎই বদলে গেছে তাঁর। রংমিস্ত্রি থেকে হয়ে গেলেন ফুটবলার। উঠে এসেছেন দেশীয় ফুটবলের শীর্ষ স্তরে। আসন্ন ঘরোয়া মৌসুমে মতিন মিয়াকে দেখা যাবে প্রিমিয়ার লিগে নবাগত সাইফ স্পোর্টিয়ের জার্সি গায়ে। তাঁকে রেখে দিয়েছে দলটি।
রাখারই কথা। সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে সাইফ স্পোর্টিংয়ের রানার্সআপ হওয়ার পেছনে বড় অবদান মতিনের। স্ট্রাইকার হিসেবে ১২ ম্যাচে ৫ গোল হয়তো বলার মতো কিছু নয় (লিগে সর্বোচ্চ গোলই মাত্র ৬টি)। কিন্তু লিগ-সেরা খেলোয়াড় হওয়া তো অবশ্যই বড় কিছু।
মতিন কাল বাফুফে ভবনে এসেছিলেন দ্বিতীয় স্তরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা নিতে। চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে চ্যাম্পিয়ন ফকিরেরপুল ও রানার্সআপ সাইফ স্পোর্টিংকে এদিন ট্রফি দেওয়ার এক ফাঁকে মতিন মিয়াকে আত্মবিশ্বাসে ঝলমল লাগল। দুঃখ-বেদনা মুছে এখন তাঁর জীবনে বদলের হাওয়া।
মতিন নিজেই নিজেকে নিয়ে বিস্মিত, ‘আসলে আমি ভাবতে পারিনি এভাবে ঢাকায় খেলব। টাকা পাব। আমার কাছে সবকিছু এখন নতুন লাগছে।’ পেশাদার লিগের দ্বিতীয় স্তরে সাইফ পাওয়ারটেক তাঁকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছিল। দলটি প্রিমিয়ারে ওঠার পর অঙ্কটা বেড়ে হয়েছে ১৫ লাখ। মতিনের মনে তাই অনেক আনন্দ, ‘অনেক কষ্ট করে আমাকে এত দূর আসতে হয়েছে। সেটার পুরস্কারও পাচ্ছি। পরিবারে একটু সচ্ছলতা ফেরাতে কত দিন কত কষ্টই না করেছি!’
সিলেট শহরের পাশে তাজপুরে বাড়ি। বাবা মারা গেছেন দুই বছর আগে। চার বোন, দুই ভাইয়ের সংসার। সেই সংসারে অর্থের জোগান দিতেই রঙের কাজে ঢোকা। কিন্তু মন পড়ে থাকত মাঠে। কখন ফুটবল খেলবেন! ‘রঙের কাজ ফেলে বিকেলে অনুশীলন করতাম। একটু একটু এই অনুশীলনেই মজা পেতে থাকলাম। এর আগে একবারই ঢাকায় এসেছি প্রথম বিভাগে খেলতে। বেশ কিছুদিন বিরতির পর এলাকার ছেলে ইয়ামিন মুন্না ভাই আমাকে এবার সাইফে খেলার সুযোগ করে দেন’—ঢাকায় নিজের ভাগ্যান্বেষণের গল্প বলে যান মতিন।

কিন্তু ভুলতে পারেন না সেই দিনগুলো। প্রায় দুই বছর রঙের কাজ করেছেন। দিনে পেতেন দেড় শ থেকে দুই শ টাকা। ওই টাকায় কিছুই হতো না। এই ফাঁকে বড় ভাই দুবাই গেলেন। সংসারে একটু সুবাতাস বইতে থাকল। ফুটবলে মনোযোগ দিতে পারলেন মতিন।

২১ বছরের এই জীবনে সবকিছু তাঁর কাছে এখন রূপকথার মতো লাগে। জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্পেও ডাক পেয়েছেন এরই মধ্যে। বিকেএসপিতে সেই ক্যাম্প শেষ করে গতকাল বাড়ি গেছেন। সঙ্গে নিয়ে গেছেন চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে পাওয়া ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি!