Thank you for trying Sticky AMP!!

তাই বলে ৯ গোল!

বার্টনের গোলরক্ষককে নিয়ে এভাবেই ছেলেখেলায় মেতেছিলেন জেসুসরা। ছবি: এএফপি
>প্রতিপক্ষের জালে ৯ গোল করে দারুণ এক ইতিহাস গড়েছে পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি

বার্টন আলবিওন সমর্থকেরা এখন ট্র্যাফিক জ্যামকে মনে মনে ধন্যবাদ জানালে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

ম্যাচের আগে ব্যাপারটা অবশ্য এমন ছিল না। কারাবাও কাপের (লিগ কাপ) সেমিফাইনালে উঠেছে বার্টন আলবিওন। ইংল্যান্ডের তৃতীয় বিভাগীয় দলটির ইতিহাসে এটাই প্রথম বড় কোনো কাপ টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল। প্রতিপক্ষ অবশ্য দমে যাওয়ার মতো—পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। ইংলিশ ক্লাব ফুটবলের সারণীতে বার্টনের চেয়ে সিটি ৫১ ধাপ এগিয়ে। ফলটা তাই বার্টন সমর্থকেরা আগেই জানতেন। কিন্তু প্রিয় দলের এত বড় ম্যাচ বলে কথা, অঘটন ঘটতেও তো পারে!

বার্টন সমর্থকেরা তাই ইতিহাদ স্টেডিয়ামের হাজার তিনেক ‘অ্যাওয়ে টিকিট’ কিনেছিলেন। কিন্তু বিপত্তি বাধায় স্টাফোর্ডশায়ারের ট্র্যাফিক জ্যাম। পরে এক বার্টন ভক্ত জানিয়েছেন, স্টোক-অন-ট্রেন্ট অঞ্চলে আড়াই ঘণ্টা জ্যামে পচতে হয়েছে তাঁকে। সে যাই হোক, প্রথম লেগের এই ম্যাচের কিক অফের ঘণ্টা খানিক আগে ইতিহাদে পৌঁছাতে পেরেছেন বার্টনের মাত্র একজন কোচ। ভয়াবহ জ্যামের জন্য বাকি কোচ ও খেলোয়াড়েরা আরও পরে এসে পৌঁছান মাঠে। ক্লাবটির ভক্তদের অনেকে গ্যালারিতে পৌঁছেছেন প্রথমার্ধ শেষে। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচ শেষ। আর অঘটনও ঘটেছে—বার্টন তার শিকার!

ম্যাচটি না দেখে থাকলে কিংবা ফল না জানলে ভ্রুকুটির অবকাশ থাকেই। সিটি হারলে না হয় সেটি অঘটন হতো, বার্টন হারলে তা অঘটন হয় কীভাবে? আসলে বার্টন যেভাবে হেরেছে সেটি তো এক অর্থে অঘটনেরই নামান্তর। দুই দলের মধ্যে শক্তির যতই তারতম্য থাকুক, হারের ব্যবধান ৯-০ হলে সেটি কৌতুকার্থেও তো অঘটন-ই!

সেমিফাইনাল প্রথম লেগের আগে গার্দিওলা এই টুর্নামেন্টকে ‘অনেক বেশি পাড়ার দলের প্রতিযোগিতা’ বলেছিলেন। ‘যেখানে সবাই জিতলে খুশি তবে বিদায় নিলে দুঃখ পায় না’—এমন কথাও বলেছিলেন সিটি কোচ। কিন্তু বার্টনের বিপক্ষে গার্দিওলার একাদশ দেখলে মনে হবে এই টুর্নামেন্টকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছেন গার্দিওলা। গ্যাব্রিয়েল জেসুস, লেরয় সানে, রিয়াদ মাহরেজ, ডেভিড সিলভা, গুন্দোগান, ডি ব্রুইনা—সিটির একাদশে কে নেই! শক্তিশালী একাদশ মাঠে নামিয়েই ম্যাচটা ৩৭ মিনিটের মধ্যে শেষ করে দিয়েছেন গার্দিওলা। এই ৩৭ মিনিটে সিটি আদায় করেছে চার গোল।

বিরতির পর আরও পাঁচ গোল আদায় করেছে সিটি। সব মিলিয়ে সিটির এই গোল উৎসবে জেসুসের অবদান চার গোল। একটি করে গোল ডি ব্রুইনা, জিনশেঙ্কো, ফডেন, ওয়াকার ও মাহরেজের। কালই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়ে দেয়, ইংল্যান্ডে কাপ ফুটবল সেমিফাইনালের ইতিহাসে কোনো ম্যাচই এতটা একপেশে হয়নি। আর পরিসংখ্যান বলছে ইংল্যান্ড তথা বিশ্ব ফুটবলেরই অন্যতম প্রাচীন ফুটবল কাপ টুর্নামেন্ট এফএ কাপ ১৮৭১-৭২ মৌসুমে যাত্রা শুরুর পর এমন ঘটনা এই প্রথম—সেমিফাইনালের কোনো ম্যাচে ৯ গোল ব্যবধানের জয়।

গার্দিওলার কোচিং ক্যারিয়ারে এই জয় যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ ব্যবধানের। বার্সেলোনার কোচ থাকতে ২০১১ কোপা ডেল রে টুর্নামেন্টে লা হসপিতালেতের বিপক্ষেও ৯-০ গোলের জয় পেয়েছিলেন এই স্প্যানিশ কোচ। আর ১৯৮৭ সালের পর এই প্রথম কোনো ম্যাচে আটের বেশি গোল করল সিটি। তবে গার্দিওলার এই সিটি যে দুর্দান্ত তা বলছে দলটির সাম্প্রতিক ফর্ম। ইংলিশ ফুটবলের শীর্ষ চারটি বিভাগের দলগুলো বিচারে সিটি গত ৫১ বছরের মধ্যে প্রথম দল হিসেবে টানা দুই ম্যাচে ন্যূনতম ৭টি করে গোল করল। রোববার এফ এ কাপে রথারডামকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সিটি।

বার্টনের জন্য যন্ত্রণার এখানেই শেষ নয়। ২৩ জানুয়ারি সেমির ফিরতি লেগটা কিন্তু বাকি!