Thank you for trying Sticky AMP!!

নইমুদ্দিনের বিব্রতকর সন্ধ্যা

মোহামেডানকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে ওঠার আনন্দ শেখ জামালের। কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে l প্রথম আলো

ম্যাচ শেষ হতেই মোহামেডানের একদল সমর্থক ঢুকে পড়লেন মাঠে। সাদা-কালোদের ডাগআউটে গিয়ে তাঁরা এমনভাবে কোচ সৈয়দ নইমুদ্দিনকে শাসাতে লাগলেন, মনে হচ্ছিল, মারই দেবেন কোচকে!
দল ম্যাচ হারলে গ্যালারি থেকে সমর্থকেরা কোচকে গালাগাল করেন, এটা নতুন কিছু নয় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। কোচকে উদ্দেশ্য করে পানির বোতল, ইটপাটকেল ছোড়া হতো একসময়। কিন্তু ম্যাচের পরপরই ডাগআউটে তেড়ে গিয়ে কোচকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা, তাঁকে এখনই দেশে ফিরে যেতে বলা, তাঁর অধীনে খেলোয়াড়দের অনুশীলনে যেতে বারণ করা...এসব শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব। কাল সেটাই দেখালেন মোহামেডানের কিছু অত্যুৎসাহী সমর্থক।
শেখ জামালের কাছে ৭৬ মিনিটে গোল খেয়ে ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে মোহামেডানের বিদায় নেওয়া দেখে সমর্থকেরা উত্তেজিত হতেই পারেন। কিন্তু এরই জেরে এই সমর্থকেরা কোচের নাকের ডগায় এসে অমুক খেলোয়াড়কে কেন তোলা হলো, তমুককে কেন নামানো হলো না—এসব নিয়ে কৈফিয়ত তলব করলেন। বলা হচ্ছিল, নইমুদ্দিনের খেলোয়াড় বদল ঠিক হয়নি। স্যামসন, শরিফকে কেন তুললেন? কেন তকলিচকে নামানো হলো না!
সমর্থকদের উগ্র আচরণ দেখে এক হাত দূরে নইমুদ্দিন তখন হতভম্ব, চুপচাপ দাঁড়িয়ে। সাংবাদিকেরা একটু দূরে সরিয়ে নিলে বললেন, ‘যাদের তুলেছি, তারা চোট পেয়েছে। খেলতে পারছিল না। তকলিচকে নামানো হয়নি, কারণ সে ফিট নয়। তা ছাড়া ম্যাচ হেরেছি ছেলেরা মিস করায়। তবে ওরা চেষ্টা করেছে।’
নিরাপত্তাহীন নইমুদ্দিন বিষণ্নমুখে ফিরলেন ক্লাবে। তবে কালকের দৃশ্য দেখে অনেকেই বলছিলেন, মাত্র তিন ম্যাচেই মোহাডানের কোচ হিসেবে নইমুদ্দিনের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছেন ‘প্রভাবশালী সমর্থকেরা’।
তবে প্রশ্ন ওঠে মাঠে কীভাবে ঢুকলেন এই সমর্থকেরা? বাফুফের লোকজন কোথায়? বাফুফের লোকজন নেই, পুলিশ এল পরে। ততক্ষণে সমর্থকেরা নইমুদ্দিনের গায়ে হাত তুললে অবাক হওয়ার থাকত না। ঘটনা দেখে বাফুফের সদস্য আবদুর রহিম বললেন, ‘সমর্থকদের নিবৃত্ত করতে পারে পুলিশ। আমরা কী আর করতে পারি!’
মোহামেডান টেন্টে এই তুঘলকি কাণ্ড দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল শেখ জামাল। ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে ওঠার আনন্দের মধ্যেই কোচ জোসেফ আপুসি বলছিলেন, ‘খুব খুশি লাগছে। আমরা জিতেছি, আমরা আমাদের নিয়ে ভাবি সেটাই বরং ভালো।’
শেখ জামালের জন্য ভালো তো অবশ্যই। এবার তারুণ্যনির্ভর দল গড়েও বড় বাজেটের মোহামেডানকে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম নকআউট ম্যাচ পার হলো তারা। বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট করেও শেষ পর্যন্ত যে জয়টা নিয়ে ফেরা গেছে, সেটির মূলে আপুসির খেলোয়াড় বদলির সিদ্ধান্ত।
৭৬ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করে নায়কের আসনে গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড সলোমন কিং। আরেক বিদেশি মামাদুর বদলি হিসেবে মাত্রই তাঁকে নামানো হয়েছিল। সলোমন গোলটা করলেন বলে প্রথম পা ছুঁইয়েই। বক্সে ডান প্রান্ত থেকে বল ঠেলে দেন নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার রাফায়েল। যিনি এর আগে মোহামেডান গোলরক্ষক মামুন খানকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। সলোমনের আলতো টোকায় একবার পরাস্ত হওয়া ছাড়া মামুন দারুণ কিপিং করেছেন ম্যাচজুড়েই।
প্রচণ্ড গরমে কোনো দলই স্বাভাবিক নৈপুণ্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিনও ছাড়তে চায়নি। ফেডারেশন কাপে টিকে থাকার লড়াই বলে কথা। তবে যোগ্যতর দল হিসেবেই জিতেছে শেখ জামাল।
আজকের খেলা
চট্টগ্রাম আবাহনী–শেখ রাসেল
সন্ধ্যা ৬টা, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম