নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ দলের টেস্ট জয়ের আনন্দের মধ্যেই এল এক দুঃসংবাদ। মরণব্যাধি ক্যানসারের কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও কোচ শহিদ উদ্দিন আহমেদ সেলিম। আজ ভোররাত ৪টা ৪৫ মিনিটে ৬৯ বছর বয়সে চলে গেলেন না–ফেরার দেশে।
তাঁর দাঁতের মাড়িতে টিউমার ধরা পড়েছিল। ২০২০ সালের মাঝামাঝি সেটাই রূপ নেয় ক্যানসারে। এরপর ছয় মাস আগে ১১ ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার হয় পুরান ঢাকার আসগর আলী হাসপাতালে। সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন। চিকিৎসার অংশ হিসেবে তিনটি কেমো দিয়েছিলেন।
গতকাল রাত আটটায় শ্বাসকষ্ট শুরু হলে আবার আসগর আলী হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। এরপর ভোররাতে চলে যান না–ফেরার দেশে। মৃত্যুর সময় পরিবারের আপনজনেরা কাছে ছিলেন। আজ বাদ জোহর গোপীবাগে ব্রাদার্স ইউনিয়ন মাঠে তাঁর জানাজা হবে। এরপর বনানী করবস্থানে মা–বাবার কবরের পাশে চিরশয্যা নেবেন ব্রাদার্স ক্লাবের এই প্রাণপুরুষ।
১৯৭২ সালে ব্রাদার্স ফুটবল দলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শহিদ উদ্দিন। বাংলাদেশের ফুটবলে ব্রাদার্স ক্লাব শক্ত ভিত্তি পায় তাঁর হাত ধরেই। ক্লাবটির অধিনায়ক ছিলেন টানা ১০ বছর। গোপীবাগে ৪৫/১ রামকৃঞ্চ মিশন রোডে শহিদ উদ্দীনের বাড়িতে ক্যাম্প হতো ব্রাদার্সের। সে জন্যই বলা হতো ’ব্রাদার্সের আরেক নাম শহিদ উদ্দিন সেলিম’।
১৯৭৪ সালে দ্বিতীয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম বিভাগে উঠে আসে ব্রাদার্স। ১৯৭৫ সালে ঢাকার প্রথম বিভাগে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই তৎকালীন লিগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী ক্রীড়া চক্রকে হারিয়ে দেয় তারা। নেতৃত্বে ছিলেন শহিদ উদ্দিন।
এরপর ১৯৮০ সালে প্রথম ফেডারেশন কাপেই মোহামেডানের সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাদার্স। পরের বছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত আগাখান গোল্ডকাপে ব্রাদার্স যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয় থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ব্যাংক ক্লাবের সঙ্গে। এসব সাফল্যে শহিদ উদ্দিন বড় অবদান রেখে গেছেন।
সব ভূমিকাতেই নিজের সেরাটা দিয়েছেন মাঠে। কুয়েতে ১৯৮১ সালে এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে কলম্বো সাফ গেমসে জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। সে টুর্নামেন্টে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ভারতকে প্রথমবারের মতো পরাজয়ের স্বাদ দেয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ জিতেছিল ২-১ গোলে।