Thank you for trying Sticky AMP!!

প্যারিসে আজ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বায়ার্ন?

‘মিনি আপসেটে’র লক্ষ্যে নেইমারদের ডেরায় বায়ার্ন

মিউনিখে পিএসজির কাছে ৩-২ গোলে হেরে দেয়ালে পিঠ ঠেকা অবস্থায় আছে বায়ার্ন মিউনিখ। সেমিতে পা রাখতে হলে তাই আজ দ্বিতীয় লেগে পিএসজির মাঠে ঘুরে দাঁড়িয়ে কম পক্ষে ২ গোলের ব্যবধান রেখে জিততে হবে জার্মান জায়ান্টদের।

পিএসজির বিপক্ষে আপাতত ‘মিনি আপসেটে’র লক্ষ্য বায়ার্ন কোচ হানসি ফ্লিকের। এমনিতেই বিশ্বের সেরা ফুটবলারের আখ্যা পাওয়া রবার্ট লেফানডফস্কিহীন বায়ার্ন পিএসজির চেয়ে পিছিয়ে থাকবে শক্তিমত্তায়। সে কারণেই কিলিয়ান এমবাপ্পে আর নেইমারের পিএসজির বিপক্ষে নিজেদের শ্রীহীন অবস্থাটা গোপন রাখতে পারছে না বায়ার্ন। কোচের কণ্ঠ সে কারণেই তাই কিছুটা সাবধানী, ‘গত ম্যাচে আমরা অনেক সুযোগ পেয়েও জয় পাইনি। আমাদের তাই উন্নতির অনেক সুযোগ রয়েছে। প্যারিসে আমাদের সম্ভব-অসম্ভব সবকিছুই করতে হবে, যদি আমরা জিততে চাই। ম্যাচটাকে আশাবাদী মানসিকতায় খেলতে হবে আমাদের।’

প্রথম লেগের ম্যাচটা ভুলেই যেতে চাইবে বায়ার্ন। ম্যাচের প্রথমার্ধে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে সুযোগ তৈরি করেছিল তারা। কিন্তু গোল করতে পারেনি। লেফানডফস্কির মতো একজন স্ট্রাইকারের অনুপস্থিতিটা বড্ড ভুগিয়েছে তাদের। হাঁটুর চোটে দলের পোলিশ স্ট্রাইকারের দলের বাইরে থাকাটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রথম লেগের ম্যাচে। তাঁর জায়গায় খেলেছিলেন স্ট্রাইকার এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোতিং। তিনি একটা গোল করলেও সুযোগ নষ্ট করেছেন অনেক। যে সুযোগ গুলো হয়তো লেফানডফস্কির মতো স্ট্রাইকার পেলে আরও কয়েকটা গোল পেতে পারত বায়ার্ন। লেফানডফস্কি ছাড়াও এই ম্যাচগুলোতে বায়ার্ন পাচ্ছে না জার্মান উইঙ্গার সার্জ নাব্রিকে, যিনি গতবার চ্যাম্পিয়নস লিগে মেশিনের মতো গোল করেছেন।

শেষ পর্যন্ত কিলিয়ান এমবাপ্পের কাছেই হারতে হয়েছে তাদের। জোড়া গোল পেয়েছেন এমবাপ্পে। ব্রাজিলীয় তারকা নেইমার গোলগুলোতে রেখেছেন অবদান। অধিনায়ক মার্কিনিওসের গোল অন্যটি। ৩-২ গোলে হেরে যাওয়ায় আজ প্যারিসে তাই কাজটা কঠিন হয়ে পড়েছে বায়ার্নের জন্য। আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে প্রথম লেগের ম্যাচটা মিউনিখের মাঠে হওয়ার কারণে। মিউনিখের মাঠে গিয়ে পিএসজি তো জিতেছেই, উল্টো ‘অ্যাওয়ে গোল’ পেয়েছে তিনটা। এটাই আরও চিন্তা বাড়াচ্ছে বায়ার্নের।

হান্সি ফ্লিকের লক্ষ্য প্যারিসে ‘মিনি আপসেট’

দুই বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ হারার যন্ত্রণাটাও তো কম নয়। তাই আজ যেকোনো বিচারেই ঘুরে দাঁড়াতে দাঁতে দাঁত চেপে অপেক্ষা করছে দলটি। জার্মান অহম বলেও তো একটা ব্যাপার আছে!

ফ্লিকের কণ্ঠে তাই কিছুটা হলেও ব্যাপারটির ইঙ্গিত থাকল, ‘আমাদের আজ যেকোনো মূল্যেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে। কাজটা কঠিন, সেটি আমরা জানি। অন্তত দুই গোলের ব্যবধান রাখতে হবে। সে উদ্দেশ্যেই প্যারিসে এসেছি আমরা। আমাদের লক্ষ্য “মিনি আপসেট”।’

প্রথম লেগের ম্যাচের দাপটের কারণেই দ্বিতীয় লেগেও পিএসজি এগিয়ে থাকছে বলেই ধারণা সবার। লেফানডফস্কির না থাকা, বায়ার্নের রক্ষণ-দুর্বলতার বিপরীতে দারুণ ফর্মে থাকা এমবাপ্পে আর নেইমারের উপস্থিতিই এ ম্যাচে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে পিএসজিকে। তবে কোচ মউরিসিও পচেত্তিনোর মুখে বায়ার্নের প্রশংসা আর ম্যাচটা নিয়ে বেশ খানিকটা ‘সতর্কতা’ থাকছেই, ‘এটা এমন একটা ম্যাচ, যেখানে হতে পারে যেকোনো কিছুই। বায়ার্ন বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোর একটি। তারা করতে পারে না, এমন কিছু নেই। আমরা কিন্তু জেতা ছাড়া আর কিছুই ভাবছি না।’

এমবাপ্পেকে ঠেকানোটা বড় চ্যালেঞ্জ বায়ার্ন–রক্ষণের।

প্রথম ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকেই হান্সি ফ্লিকের ধারণা পিএসজি এ ম্যাচেও প্রথম লেগের মতোই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলবে। সেই সঙ্গে বায়ার্ন যে এমবাপ্পেকে নিয়ে আলাদা করে ভাবছে, সেটাও বোঝা গেছে তাঁর কণ্ঠে, ‘কোনো সন্দেহ নেই পিএসজি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলবে। গতিময় ফুটবল খেলবে। এ ব্যাপারে তাদের কৌশলের কোনো পরিবর্তন হবে বলে আমরা মনে করি না। আমাদের কাজ হবে পিএসজিকে দিয়ে ভুল করানো। এমবাপ্পে দুর্দান্ত হয়ে উঠেছে। গতি আর গোল করার ক্ষমতা অসাধারণ। এই বয়সেই সে অনেক পরিণত।’

গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল এ দুই দলই। সেখানে পিএসজির হয়েছিল স্বপ্নভঙ্গ। চোখের জলে মাঠ ছেড়েছিলেন নেইমার। পিএসজিকে ১-০ গোলে হারিয়ে বায়ার্ন ইউরোপ-সেরা লড়াইয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছিল। এবার শেষ আটেই দেখা হয়ে গেছে বায়ার্ন-পিএসজির। বদলার পথে অনেকটা পথ এগিয়ে গেছেন এমবাপ্পে-নেইমার-আনহেল দি মারিয়ারা। তবে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ‘বদলা’ পুরোপুরি নেওয়া গেছে, সেটি বলার উপায় নেই। প্রতিপক্ষ বায়ার্ন দেখেই কাজটা কঠিন হয়ে পড়ছে তাদের জন্য।

‘কঠিন’ একটা লড়াইই আজ অপেক্ষা করছে দর্শকদের জন্য—এটা বলাই যায়।