Thank you for trying Sticky AMP!!

মৃত্যুঞ্জয়ী ফারাজের স্মরণে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল

ফারাজ স্মৃতি ফুটবল প্রতিযোগিতার দল পরিচিতি অনুষ্ঠান হয়ে গেল আজ। সৌজন্য ছবি

আবারও শুরু হতে যাচ্ছে ফারাজ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা। ২০১৬ সালে গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার নির্মম শিকার ফারাজ আইয়াজ হোসেনের স্মৃতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের এ ফুটবল প্রতিযোগিতা। ২১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ২৪ সেপ্টেম্বর।

ফারাজ এক আত্মত্যাগী তরুণের নাম। বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের আদর্শ এই তরুণ নিজের মধ্যে ধারণ করেছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। একই সঙ্গে ফারাজ নিজে ছিলেন একজন আপাদমস্তক ফুটবলপ্রেমী। সন্ত্রাসীরা তাঁকে সেদিন ছেড়ে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু ফারাজ তাঁর বন্ধুদের সন্ত্রাসীদের বন্দুকের মুখে রেখে পালিয়ে আসতে চায়নি। নিজের মূল্যবান জীবনকে বিসর্জন দিয়ে ফারাজ সেদিন তৈরি করেছিল এক অনন্য উদাহরণ। তাঁর সেই আদর্শকে সোনালী অতীত ক্লাব ছড়িয়ে দিতে চায় দেশের সব তরুণের মধ্যে। প্রতিযোগিতাটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইউনাইটেড গ্রুপ। সহযোগী হিসেবে পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্বে আছে হা-মীম গ্রুপ ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক।

ফারাজ ফুটবলে দেশের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করবে। মূল ভেন্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। তবে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম ও মোহাম্মদপুরের শারীরিক শিক্ষা কলেজেও অনুষ্ঠিত হবে প্রতিযোগিতার ম্যাচগুলো। খেলা হবে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে, আটটি গ্রুপে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাগ করে। প্রতিটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপদের নিয়ে হবে নকআউট পর্ব। চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৩ লাখ টাকা, রানার্সআপ ২ লাখ।

আজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পরিচিতি অনুষ্ঠান। এতে তৃতীয়বারের মতো প্রতিযোগিতাটি আয়োজনের সম্মতি দেওয়ায় ফারাজের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব, সাবেক ফুটবল তারকা শেখ মোহাম্মদ আসলাম,‘ফারাজ আমাদের সামনে একটি উদাহরণ রেখে গেছেন। ফারাজ ত্যাগ, সাহসিকতা ও মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর নামে একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট করতে পেরে আমরা গর্বিত। ফারাজের চেতনা ও মূল্যবোধ তরুণ সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফুটবল মাঠে আনতে আবারও এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি। এই টুর্নামেন্টের জন্য সব রকম সহযোগিতা করায় ফারাজের পরিবারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’

আন্তবিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্ট মানেই উৎসবমুখর এক প্রতিযোগিতা। শিরোপা যার হাতেই উঠুক, এ নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। ফুটবলের মাধ্যমে এক ছাতার নিচে আসার জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকে তারা। তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে স্টেডিয়াম। গ্যালারি থেকে ভেসে আসে ভুভুজেলা, ঢোল আর বাঁশির বিরামহীন শব্দ। সে কারণেই অপেক্ষা যেন শেষই হতে চাচ্ছে না সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড় গোলাম রাব্বানির, ‘ফারাজ ভাইয়ের নামের এই টুর্নামেন্ট নিজেদের মেলে ধরার ভালো একটা মঞ্চ। এই টুর্নামেন্টে খেলার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সারা বছর অপেক্ষায় থাকি। এই টুর্নামেন্ট হওয়ার সুবাদে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেকেই বিনা অর্থে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে।’

টুর্নামেন্টটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য অনেক বড় একটি মঞ্চ বলেছেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও কোচ গোলাম সারওয়ার টিপু, ‘দারুণ একটি টুর্নামেন্টের অপেক্ষায় আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা ভাগ্যবান, তারা ফুটবল প্রতিভা প্রমাণ করার জন্য বড় একটি মঞ্চ পাচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড গ্রুপের সহযোগী পরিচালক নিজামউদ্দিন হাসান রশিদ, হা-মীম গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, সাবেক ফুটবলার গোলাম সারোয়ার টিপু, হাসানুজ্জামান খান বাবলু, ইলিয়াস হোসেন, আবদুল গাফফার, ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, আরমান মিয়া ও সাবেক ব্যাডমিন্টন তারকা কামরুন্নাহার ডানাসহ অনেকে।