Thank you for trying Sticky AMP!!

মেয়েদের ব্যালন ডি'অরে 'যৌন হয়রানি'র কলঙ্ক

মেয়েদের ব্যালন ডি’অর হাতে আডা হেগেরবার্গ। প্রথমবারের মতো দেওয়া হলো এই পুরস্কার। ছবি: এএফপি
>মেয়েদের ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দেওয়ার প্রচলন শুরু হলো এ বছর থেকে। অভিষেক বছরেই বিতর্ক তুলল মেয়েদের ব্যালন ডি’অর

‘ফ্রান্স ফুটবল’ সাময়িকীর ব্যালন ডি’অর বা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার ছেলেদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ১৯৫৬। মেয়েদের জন্য পুরস্কারটি চালু করা হয়েছে এ বছর থেকে। আর অভিষেক বছরেই কিনা মেয়েদের ব্যালন ডি’অর যাত্রা শুরু করল ‘যৌন হয়রানি’ বিতর্কের ঝড় তুলে!

কাল প্যারিসে এক জমকালো অনুষ্ঠানে অভিষেক ট্রফিটা তুলে দেওয়া হয় লিঁও-র নরওয়েজিয়ান তারকা আডা হেগেরবার্গের হাতে। গত মৌসুমে ফরাসি ক্লাবটির হয়ে লিগ জয়ের সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাও জিতেছেন ২৩ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। কিন্তু কাল তাঁর ক্যারিয়ারের ঐতিহাসিক মুহূর্তে বিতর্কের কালি ছিটিয়েছেন ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ডিজে (ডিস্ক জকি) মার্টিন সলভেইগ। ট্রফি জয়ের পর মঞ্চে কথা বলেন হেগেরবার্গ। এ সময় সঞ্চালক সলভেইগ কিছু করে দেখাতে বলেন হেগেরবার্গকে—এমন কিছু যা তাঁর ‘দক্ষতা’র বাইরে। এই কথা বলে হেগেরবার্গকে ‘টুয়ের্ক’ (কোমর দুলিয়ে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী নাচ) করতে বলেন সলভেইগ।

হেগেরবার্গ এই প্রস্তাবের জবাবে তাৎক্ষণিকভাবে ‘না’ বলে মঞ্চে ছেড়ে যাচ্ছিলেন। যদিও কিছুক্ষণ নাচতে হয় তাঁকে। হেগেরবার্গের মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল ব্যাপারটা খুব একটা উপভোগ করছেন না। এদিকে সলভেইগ ওই প্রস্তাব দেওয়ার পরপরই ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ক্রীড়াঙ্গনের খ্যাতিমান তারকারা সমালোচনা করেছেন সলভেইগের এই আচরণের। তিনবারের গ্রান্ড স্লামজয়ী ব্রিটিশ টেনিস তারকা অ্যান্ডি মারে ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনে যে যৌন হয়রানি এখনো আছে তার আরেকটি কদর্য উদাহরণ। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা এখনো চলছে কেন? এমবাপ্পে ও মদরিচকে কি প্রশ্ন করা হয়েছে? যাঁরা ভাবছেন মানুষ এ ব্যাপার নিয়ে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এবং ওটা ছিল স্রেফ মজা...না, ব্যাপারটা তেমন ছিল না।’

সলভেইগের সঙ্গে নাচতে হয় হেগেরবার্গকে। ছবি: এএফপি

সলভেইগের ওই আচরণের সময় অতিথি আসনে বসে থাকা তারকা ফুটবলারেরাও ব্যাপারটি স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি। কিলিয়ান এমবাপ্পের মুখের চাহনিই বলে দিচ্ছিল তাঁর কাছে ব্যাপারটি ভালো লাগেনি। সলভেইগ অবশ্য পরে ক্ষমা চেয়েছেন হেগেরবার্গের কাছে। তাঁর টুইট, ‘আডাকে বুঝিয়ে বলেছি এবং সে ব্যাপারটি মজা হিসেবে মেনে নিয়েছে। তারপরও কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে ক্ষমা চাচ্ছি।’

হেগেরবার্গ নিজেও ঘটনাটি হালকা চোখে দেখছেন। পরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ব্যাপারটি ওভাবে (যৌন হয়রানি) দেখছি না। আমার কাছে ব্যালন ডি’অর বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ এতেও বিতর্ক থামছে না। খ্যাতনামা ফুটবল ব্লগার শন ওয়াকার টুইট করেন, ‘২৩ বছরে আড়াই শর বেশি গোল করে মেয়েদের মধ্যে প্রথম ব্যালন ডি’অরজয়ী আডা হেগেরবার্গ। তাঁকে “টুয়ের্ক” করতে বলা হয়েছে ফুটবল তারকা আর সব দর্শকদের সামনে। এটি ন্যক্কারজনক ব্যাপার এবং তাঁর অসাধারণ মুহূর্তটা নষ্ট করা হয়েছে।’ ফুটবল লিখিয়ে আরজে অ্যালেন লিখেছেন, ‘ওখানে উপস্থিত অনেকের মতো সে (হেগেরবার্গ) নিজ দক্ষতা ও যোগ্যতায় সারা বিশ্বের কাছে সম্মানের পাত্র। সলভেইগের সৌভাগ্য যে আডা তাঁকে লাথি মেরে গোলপোস্টে পাঠায়নি!’