Thank you for trying Sticky AMP!!

রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ

রাউল ও ক্যাসিয়াস রিয়ালের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড় প্রতারক’

বোমাটা ফাটিয়েছে স্পেনের সংবাদমাধ্যম এল কনফিডেনশিয়াল। ২০০৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম মেয়াদে রিয়াল সভাপতির পদ ছেড়েছিলেন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ।

এর কয়েক মাস পর পেরেজের কিছু আলাপচারিতার রেকর্ড এত দিন পর আজ ফাঁস করেছে সংবাদমাধ্যমটি। রিয়ালের দুই কিংবদন্তি রাউল গঞ্জালেস ও ইকার ক্যাসিয়াসকে ক্লাবের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড় প্রতারক’ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন সেই আলাপচারিতায়।

সে সময় তাঁর সভাপতির দায়িত্ব ছাড়ার পেছনে রাউলও আংশিকভাবে দায়ী, এমন কথাও বলেছেন পেরেজ ফাঁস হওয়া সেই অডিও রেকর্ডে।

তবে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেরেজ ইউরোপিয়ান সুপার লিগের পক্ষে এখনো অনড় থাকায় তাঁর ইমেজ নষ্ট করতেই এ অডিও রেকর্ড ফাঁস করা হয়েছে। গোপনে রেকর্ড করা এই আলাপচারিতা ২০১৫ সালেও প্রকাশ হয়েছিল।

তা এখন পুনরায় প্রকাশ করাকে—যখন ইউরোপিয়ান সুপার লিগের পক্ষাবলম্বন করে উয়েফার বিরুদ্ধ চারণ করছেন পেরেজ—সভাপতির ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা হিসেবে দেখছে রিয়াল। এ নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্লাবটি।

রিয়ালের সাবেক ফরোয়ার্ড রাউল গঞ্জালেস।

ক্লাবের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এ নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন রিয়াল সভাপতি, ‘যে কথাগুলো প্রকাশ করা হয়েছে, তা গোপনে রেকর্ড করেছেন (সংবাদকর্মী) হোসে আন্তনিও অ্যাবেলান। বছরের পর বছর ধরে তিনি এগুলো দিয়ে বাজার ধরার চেষ্টা করছেন। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, সেগুলো অনেক আগের ঘটনা হলেও এল কনফিডেনশিয়াল তা আজ প্রকাশ করল। মূল বিষয়টি থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু মন্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে। অনেক বছর পর তারা এগুলো আবার নতুন করে সামনে টেনে এনেছে। সেটি বোধ হয় আমি ইউরোপিয়ান সুপার লিগের একজন প্রস্তাবক হওয়ার জন্য। আমি আইনজীবীর দ্বারস্থ হয়েছি। তারা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পথ বের করছে।’

২০০৯ সালে পেরেজ দ্বিতীয় মেয়াদে রিয়াল সভাপতি হয়ে আসেন। এর পরের বছর রিয়াল ছাড়েন রাউল। পাঁচ বছর পর ২০১৫ সালে রিয়াল ছাড়েন ক্যাসিয়াস। দুজনে অবসর নিয়ে আবারও ফিরে আসেন রিয়ালে।

ক্লাবটির ফাউন্ডেশনের সঙ্গে জড়িত আছেন সাবেক গোলকিপার ক্যাসিয়াস। রিয়ালের ‘বি’ দল কাস্তিয়ার কোচের ভূমিকায় আছেন রাউল। দুজনেই ক্লাব এবং স্পেনের ইতিহাসে কিংবদন্তি খেলোয়াড়। রিয়ালে ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ছয়বার লা লিগা জিতেছেন সাবেক ফরোয়ার্ড রাউল।

রিয়ালের সাবেক গোলকিপার ইকার ক্যাসিয়াস।

ক্যাসিয়াসও রিয়ালে ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে পাঁচবার লা লিগা এবং তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতেন। এর বাইরে দুজনেই সুপার কাপ, সুপার কোপা এসপানা ছাড়াও অন্যান্য ঘরোয়া ট্রফি জিতেছেন রিয়ালের হয়ে।

ফাঁস হওয়া আলাপচারিতায় ক্যাসিয়াসকে নিয়ে পেরেজ বলেছেন, ‘রিয়ালের গোলকিপার হওয়ার মতো যোগ্যতা তাঁর নেই। আমি আর কী বলতে পারি? তার এই যোগ্যতা নেই, কখনো ছিল না। বড় একটা ভুল করেছি আমরা। যেটা ঘটেছে তা হলো....(অডিও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন)...তারা (সমর্থকেরা) তাকে পছন্দ করে, তার সঙ্গে কথা বলতে চায়। সব সময় তাকে আগলে রাখে। কিন্তু রিয়ালে সে অন্যতম বড় প্রতারক। পরেরটি হলো রাউল। মাদ্রিদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুই প্রতারকের মধ্যে প্রথমে রাউল পরে ক্যাসিয়াস।’

পেরেজ দ্বিতীয় মেয়াদে রিয়ালের সভাপতি থাকতে ক্লাব ছাড়েন ক্যাসিয়াস।

রিয়ালে তখন অন্যান্য খেলোয়াড়দের নিয়েও কটূক্তি করেন পেরেজ, ‘খুব স্বার্থপর খেলোয়াড়েরা। কোনো কিছুতে তাদের ওপর আস্থা রাখা যায় না। আস্থা রাখলে ভুল হবে এবং তারা ডোবাবে।’ রিয়ালে সে সময় জিনেদিন জিদান ও (ব্রাজিলের) রোনালদোর মতো কিংবদন্তিরা খেলতেন।

ফাঁস হওয়া আলাপচারিতায় রাউলকে নিয়ে সোজাসাপটা মন্তব্য করেন পেরেজ, ‘রাউল একটা বাজে লোক। সে (রিয়াল) মাদ্রিদকে নিজের মনে করে এবং মাদ্রিদের সবকিছু ব্যবহার করে। নিজের স্বার্থে সব করে থাকে। মাদ্রিদের বাজে সময়ের জন্য সে এবং তার এজেন্ট দায়ী।’

পেরেজ এখানেই থামেননি, ‘আমার চলে আসার পেছনেও সে-ও একটা কারণ। এখন সে নিজেও বুঝতে পারছে তার সময় শেষ হয়ে আসছে। হয়তো যাওয়ার আগে মাদ্রিদকে শেষ করে দিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে। সে একজন নেতিবাচক মানুষ। বাকিদের মানসিকতাও নষ্ট করছে। মাদ্রিদকে এমনভাবে নষ্ট করছে যেন লোকে বলে, দোষটা মাদ্রিদেরই, রাউলের নয়। সে জঘন্য রকম খারাপ।’