Thank you for trying Sticky AMP!!

শেখ জামালের বিপক্ষে বিতর্কিত রেফারিংয়ে বেঁচে গেল বসুন্ধরা

এই প্রথম পয়েন্ট খোয়ালো বসুন্ধরা।

টানা সাত ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে ছিল বসুন্ধরা কিংসের। অষ্টম জয়ের আশায় আজ নেমেছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। কিন্তু আজ আর জয় নিয়ে ফিরতে পারেনি প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা। ছন্দে থাকা শেখ জামালের সঙ্গে পয়েন্ট হারাতে বাধ্য হয়েছে। গোলশূন্য ড্র হয়েছে শেখ জামাল ও বসুন্ধরার ম্যাচ।

এমনকি বসুন্ধরা আজ হেরেও যেতে পারত। ৮৮ মিনিটে বদলি ফরোয়ার্ড জাহিদের ঠেলে দেওয়া বল জালে পাঠান জামালের গাম্বিয়ান স্ট্রাইকার ওমর জোবে। তাঁকে কড়া পাহারায় রাখা তপু বর্মণকে ছিটকে বেরিয়ে যান জোবে। বক্সের একটু বাইরে তপু চেষ্টা করছিলেন জোবেকে আটকাতে। কিন্তু তাঁর সাধ্য ছিল না জোবেকে আটকানো। উল্টো তপু পড়ে যান বক্সের বাইরে। সহকারী রেফারি শাহ আলম গোল হয়েছে ধরে নিয়ে পতাকা তোলেননি।

অনেকেরই অভিমত, ফাউল হলে তপুর বিপক্ষেই বাঁশি বাজাতে পারতেন রেফারি জালাল। অথচ সবাইকে চমকে জালাল বাঁশি বাজান জোবের বিপক্ষে। গোটা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামই হতবাক রেফারির এমন সিদ্ধান্তে।

শফিকুল ইসলাম মানিক ও আশরাফ উদ্দিন চু্ন্নু প্রেসবক্সে এসে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানান।

এর আগেও রেফারির বিতর্কিত সব সিদ্ধান্ত গেছে বসুন্ধরার ঘরে। আগের ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে লঘু পাপে শেখ জামালের সলোমন কিংকে লাল কার্ড দেখানো হয়। প্রতিপক্ষ আবাহনী থেকেই বলা হয়েছে, বসুন্ধরার বিপক্ষ সলোমন যাতে খেলতে না পারেন, সে জন্যই ওই লাল কার্ড। এর আগে বসুন্ধরার বিপক্ষে রেফারি পেনাল্টি দেননি চট্টগ্রাম আবাহনীকে। সেদিন চট্টগ্রাম আবাহনীর কর্মকর্তারা বলেছিলেন, এভাবে রেফারিং হলে মাঠে এসে খেলার কোনো কারণ নেই। একটি দলকে ট্রফি দিয়ে দিলেই হয়।

সব ছাপিয়ে আজ যা ঘটল, এককথায় চরম বিতর্কিত। মাঠে বসে খেলা দেখা বাফুফের সাবেক সদস্য ও লিগ কমিটির কো–চেয়ারম্যান আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বললেন, ‘আমার কাছে মনে হয়নি জোবে ফাউল করেছেন। এটা পরিষ্কার গোলই মনে হয়েছে।’
রিপ্লে দেখে সবারই অভিন্ন অভিমত, জোবের বিপক্ষে ফাউল দেওয়ার যুক্তি নেই। ফাউল দিলে তপুর বিপক্ষেই হতে পারে। এটি পরিচ্ছন্ন এক গোলই। আর সেই দাবি করে ম্যাচের পর শেখ জামালের কোচ কর্মকর্তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন মাঠে। কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘আমি হতবাক। এটা কীভাবে ফাউল ধরা হলো। এমন রেফারিংয়ের প্রতিকার হওয়া উচিত।’ কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন চুন্নর কথা, ‘এর চেয়ে নির্লজ্জ রেফারিং আর হয় না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

ম্যাচে প্রাধান্য ছিল না কারও।

ম্যাচ শেষ হওয়ার ৪০ মিনিট পর শফিকুল ইসলাম মানিক ও আশরাফ উদ্দিন চু্ন্নু প্রেসবক্সে এসে বিষয়টা নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানান সাংবাদিকদের কাছে। কোচ মানিক বলেন, ‘মনে হয়েছে রেফারিং উদ্দেশ্যমূলক। যে দলের বিপক্ষেই হোক না কেন, যা ঘটল সেটা লিগের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা জানি রেফারির সিদ্ধান্ত বাতিল হয় না। তারপরও বাফুফের কাছে আবেদন তারা যেন বিষয়টা দেখে।’ বাফুফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদও করেছে শেখ জামাল। রেফারি জামালের কঠোর শাস্তিও চাওয়া হয়েছে প্রতিবাদপত্রে।

আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় আজ মাঠের বাইরে ছিলেন শেখ জামালের মাঝমাঠের প্রাণ সলোমন কিং। ফলে অন্য ম্যাচগুলোর মতো এদিন মাঝমাঠ থেকে সেভাবে আক্রমণ তৈরি করতে পারেনি জামাল। তাদের লক্ষ্য ছিল প্রতি–আক্রমণে বসুন্ধরাকে আটকে একটি পয়েন্ট ছিনিয়ে নেওয়া। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে শফিকুল ইসলাম মানিকের দলের। তবে শেষ পর্যন্ত থেকে গেল গোল বাতিলের আক্ষেপও।

বসুন্ধরা আজ ভালো খেলতে পারেনি। পরিষ্কার সুযোগও সেভাবে তৈরি করা যায়নি। শেখ জামালের ডিফেন্ডার রেজাউল দারুণ খেলেছেন। জামালের গোলকিপার জিয়া ছিলেন আস্থার প্রতীক। বসুন্ধরার ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার রবসনের শট দারুণভাবে ফিরিয়েছেন জিয়া। প্রতিপক্ষকে গোল করতে না দেওয়ার কৃতিত্ব তাঁকেও দিতে হবে।
লিগে সাত ম্যাচে ৫ জয় আর ২ ড্রয়ে শেখ জামালের পয়েন্ট ১৭। ৮ ম্যাচে ৭ জয় আর ১ ড্রয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে বসুন্ধরা।