Thank you for trying Sticky AMP!!

আরামবাগ

সঠিক শাস্তি পেয়েছে আরামবাগ

অনলাইন বেটিং, স্পট ফিক্সিংয়ের কালো থাবা পড়েছে দেশের ফুটবলে। দুই কর্মকর্তা, ভারতীয় কোচ ও কিছু খেলোয়াড়ের যোগসাজশে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘে অনলাইন বেটিং হয়েছে বলে দাবি করেছিল দলের একাধিক সূত্র। বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে এই বছর ফেব্রুয়ারিতে। বল গড়ায় বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটির ওপর। কয়েক দিন ধরেই আভাস মিলছিল কঠিন শাস্তি পেতে যাচ্ছে আরামবাগ। প্রায় ছয় মাসের তদন্তের পর আরামবাগ ক্লাবকে শাস্তি দিয়েছে বাফুফে।

Also Read: বাংলাদেশেও হাজির নতুন রোগ

আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে আরামবাগের সাবেক সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম, সাবেক দলীয় ম্যানেজার গওহর জাহাঙ্গীর রুশো, সাবেক ভারতীয় ফিটনেস ট্রেনার মাইদুল ইসলাম, সাবেক সহকারী দলীয় ম্যানেজার আরিফ হোসেনকে

শাস্তি হিসেবে এক ধাপ নামিয়ে দেওয়া হয়েছে আরামবাগকে। চলতি মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হয়ে পেশাদার ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে নেমে গিয়েছিল আরামবাগ। কিন্তু এখন পেশাদার লিগের দ্বিতীয় স্তরে খেলা হবে না তাদের। শাস্তিস্বরূপ তাদের এখন দুই বছর খেলতে হবে প্রথম বিভাগে। এই সময় দলটি ওপরের বিভাগে উত্তীর্ণ হলেও সেটা কার্যকর হবে না। তবে অবনমিত হলে দ্বিতীয় বিভাগে নেমে যাবে।

এ ছাড়া আরামবাগের সাবেক সভাপতি ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক এম স্পোর্টসের প্রধান স্বত্বাধিকারী মিনহাজুল ইসলামসহ সাবেক দলীয় ম্যানেজার গওহর জাহাঙ্গীর রুশো, সাবেক ভারতীয় ফিটনেস ট্রেনার মাইদুল ইসলাম, সাবেক সহকারী দলীয় ম্যানেজার আরিফ হোসেনকে ফুটবল থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১০ বছর নিষিদ্ধ করা হয়েছে ক্লাবের সাবেক ভারতীয় ফিজিও সঞ্জয় বোস, ভারতীয় গেম অ্যানালিস্ট আজিজুল শেখকে। বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি পেয়েছেন দেশি-বিদেশি মোট ১৪ ফুটবলার।

এ শাস্তিতে সন্তুষ্ট গোলাম সারোয়ার টিপু

মূলত ক্লাবের সাবেক সভাপতি মিনহাজুল ও ভারতীয় ব্যক্তিদের যোগসাজশে অনৈতিক কাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে দলটি। ট্রেনার, ফিজিও বা গেম অ্যানালিস্টদের নামে যাঁদের আনা হয়েছিল, তাঁরা সরাসরি বেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের শাস্তির মাত্রা ঠিকই আছে বলে মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও কোচ গোলাম সারোয়ার টিপু।

ক্যারিয়ারে এক মৌসুম আরামবাগকে কোচিং করানো গোলাম সারোয়ার টিপু বলেন, ‘শাস্তি ঠিকই আছে। অন্যদের ঠেকানোর জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই হয়েছে। ভারত থেকে যাদের কোচিং স্টাফ হিসেবে আনা হয়েছে, তাদের দেখেই তো বোঝা উচিত ছিল উদ্দেশ্যটা ভালো নয়। প্রথমে আমি তো মনে করেছিলাম কোচ মোহনবাগানের সুব্রত ভট্টাচার্য। পরে দেখলাম অন্য কেউ। তারা যেভাবে শুরু করেছিল, সবকিছু তো শেষ করে দিত। এটা এত দিনে সংক্রমণ হয়ে গেলে বিপদ আছে। ফুটবল এমনিতেই শেষ। এটা সংক্রমণ হয়ে গেলে আরও শেষ হয়ে যেত।’

সাবেক ক্লাবের এমন দশায় কষ্ট পাচ্ছেন আলফাজ

খেলোয়াড়ি জীবনের শুরুর দিকে ১৯৯৪ সালে আরামবাগে খেলেছিলেন আলফাজ আহমেদ। পরে ২০০৯ সালে আরেকবার দলটির জার্সি তোলেন গায়ে। নিজের সাবেক ক্লাবের এমন অধঃপতনে সাবেক এই ফুটবলার হতাশ, ‘ক্যাসিনো–কাণ্ড থেকেই ক্লাবগুলোর দুর্দশা শুরু। তখন একটা বড় ধাক্কা খেয়েছে দেশ। এর পরে যা হলো, তা খুবই জঘন্য কাজ হয়েছে। আরও বড় শাস্তি হওয়া উচিত ছিল। ক্লাবটিতে খেলেছি বলে কষ্ট লাগছে।’

আরামবাগে কখনো খেলা হয়নি জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার শেখ মোহাম্মদ আসলামের। তবে অতীতের আরামবাগের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে তাঁর। আসলাম বলেন, ‘এখানে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত ছিল। সেটিই হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে যেন আরও কেউ এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে না জড়ায়। আরামবাগ আমাদের সময়ে চমক–জাগানিয়া দল ছিল। নিজেদের দিনে যেকোনো দলকে হারিয়ে দিত তারা। সেই দলটির এ অবস্থা দেখে খুব খারাপ লাগছে।’