Thank you for trying Sticky AMP!!

১৩৬ কোটি টাকা দিয়ে যখন কোচ আনতে হয়

ক্লাবের সাফল্য ব্যর্থতা গড়ে দেওয়া এসব কোচের জন্য টাকা খসাতেও রাজি অনেক ক্লাব। ছবি: রিয়াল মাদ্রিদ

নেইমারকে কিনতে ২২২ মিলিয়ন ইউরো খরচ করতে হয়েছিল পিএসজিকে। কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিতেও কম নয়, ১৮০ মিলিয়ন ইউরো খসেছে তাদের। অবশ্য এমবাপ্পেকে ধরে রাখা কঠিন হবে তাদের পক্ষে। রিয়াল মাদ্রিদ যে পণ করেছে ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ডকে তারা নেবেই। করোনা–পরবর্তী অর্থনীতির অবস্থা কী হবে বলা যাচ্ছে না। তবে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই ফরোয়ার্ডকে পেতে কমপক্ষে ৩০০ মিলিয়ন বা ৩০ কোটি ইউরো দিতেই হতো রিয়ালকে।

দলবদলের বড় বড় অঙ্ক খেলোয়াড়দের ঘিরেই আলোচিত হয়। বেতনের হিসাব–নিকাশেও তাঁদেরই প্রাধান্য। তবু কালেভদ্রে বেশি বেতনের কথাবার্তায় দু-একজন কোচ জায়গা করে নেন। যেমন ডিয়েগো সিমিওনে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের এই কোচ ঈর্ষণীয় পর্যায়ের বেতন পান। ফরাসি পত্রিকা লেকিপের দাবি, বছরে ৪ কোটি ৩৬ লাখ ইউরো বেতন পান সিমিওনে। দুইয়ে থাকা পেপ গার্দিওলা যেখানে পাচ্ছেন মাত্র ২ কোটি ৩৩ লাখ!

বেতনে তবু সিমিওনে, গার্দিওলা, মরিনহো, ক্লপ আর জিদানরা ঠেলেঠুলে জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু দলবদলের ক্ষেত্রে কোচদের এতটা দাম দিতে রাজি হয় না বেশির ভাগ ক্লাবই। ব্যাপারটা এমন যেন কোচ আসবে নিজে থেকেই, তাঁকে আবার আনতে পয়সা খোয়ানো কেন?

তবে ফুটবলে এমনও অনেক কোচ ছিলেন, যাঁদের পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ হয়ে দলে টানতে চেয়েছে অনেক ক্লাব। কিন্তু তাঁদের ক্লাব ছাড়তে রাজি না হওয়াতে আগ্রহী ক্লাবকে ঠিকই পকেটে হাত ঢোকাতে হয়েছে। এই তো কদিন আগে ডার্বি কাউন্টিকে ৩০ লাখ ইউরো দিয়ে ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে কোচ হিসেবে এনেছে চেলসি। এখন পর্যন্ত যা দেখিয়েছেন, তাতে খুব বেশি আনন্দিত হওয়ার কারণ নেই, আবার হতাশ হওয়ারও উপায় নেই। অবশ্য চেলসির অতীত ইতিহাস বলে এভাবে কোচ এনে তাদের সাফল্যের হার এমনিতেও ফিফটি-ফিফটি।


২০০৩-০৪ মৌসুমে হোসে মরিনহোকে পেতে এফসি পোর্তোকে ৬০ লাখ ইউরো দিয়েছিল চেলসি। কোচের পেছনে ক্লাবের ইতিহাসের সেরা বিনিয়োগ ছিল সেটি। চেলসিকে সবচেয়ে সাফল্যময় এক অধ্যায় এনে দিয়েছেন মরিনহো, দলটিকে একটি পরাশক্তি বানিয়েছেন। এ কারণেই হয়তো আন্দ্রে ভিলাস-বোয়াসকেও টেনে আনতে অতটা আগ্রহ দেখিয়েছিল চেলসি। পোর্তোতে মরিনহোর মতোই সাফল্য পাচ্ছিলেন এই কোচ। ফলে ২০১১-১২ মৌসুমে তাঁর জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ ইউরো (১৩৬ কোটি টাকা) দিয়েছিল চেলসি। ফল অবশ্য তিনি এনে দিতে পারেননি। মাত্র এক মৌসুম টিকতে পেরেছেন, ট্রফি ক্যাবিনেটে কিছু যোগ করতে পারেননি।

চেলসির মতোই কোচের জন্য অর্থ খসানোর জন্য বিখ্যাত রিয়াল মাদ্রিদ। মরিনহোকে পাওয়ার জন্য ২০১০ সালে ইন্টার মিলানকে ৮০ লাখ ইউরো দিয়েছিল বার্নাব্যুর ক্লাবটি। স্বপ্নের বার্সেলোনা দলের আধিপত্যের মাঝেও রিয়ালকে একটি লিগ ও একটি কোপা দেল রে এনে দিয়েছেন মরিনহো। কিন্তু যে জন্য আনা তাঁকে, সেই চ্যাম্পিয়নস লিগ পায়নি রিয়াল। সে কারণে মরিনহোকে বাদ দিয়ে আবার পিএসজি থেকে টেনে আনা হয় কার্লো আনচেলত্তিকে। ৩৮ লাখ ইউরোর বিনিয়োগ সফল হয়েছিল। ২০১৪ সালেই রিয়ালকে স্বপ্নের দশম চ্যাম্পিয়নস লিগ এনে দিয়েছেন আনচেলত্তি।

অবশ্য একই কাজের জন্য ম্যানুয়েল পেল্লেগ্রিনিকে ভিয়ারিয়াল থেকে ৪০ লাখ ইউরোতে এনেছিল রিয়াল। রোনালদো-কাকারা যোগ দেওয়ার পরও কোনো শিরোপা এনে দিতে না পারার ব্যর্থতা তাঁকে রিয়াল থেকে বের হওয়ার পথ করে দিয়েছে। ৬২ লাখ ইউরো খরচ করে ব্ল্যাকবার্ন থেকে মার্ক হিউজকে এনেও ঠিক এমনই ব্যর্থ অধ্যায় পার করেছে ম্যানচেস্টার সিটি।

তবু কোচের জন্য পয়সা খরচের শীর্ষ তিনে রিয়াল বা সিটির জায়গা হয়নি। কারণ, এ মৌসুমেই ব্রেন্ডন রজার্সের জন্য লেস্টার সিটি ১ কোটি ৫ লাখ ইউরো খরচ করেছে। লিভারপুলের ব্যর্থতা সেল্টিক একের পর এক রেকর্ড গড়ে ভুলেছেন রজার্স, তাই তাঁকে পেতে এত আয়োজন। আর পডিয়ামে শেষ স্থানটি নিয়েছে স্পোর্টিং। পর্তুগিজ এই ক্লাব প্রতিদ্বন্দ্বী এসসি ব্রাগা থেকে রীতিমতো লড়াই করে এনেছিল রুবেন আমোরিমকে। এই মৌসুমে তাঁকে পেতে ১ কোটি খসেছে স্পোর্টিংয়ের। সে জন্যই চুক্তিতে বলে দেওয়া হয়েছে, কেউ যদি তাঁকে পেতে চায় তবে সে ক্লাবকে দিতে হবে ২ কোটি ইউরো!