Thank you for trying Sticky AMP!!

২৫ হাজারে শুরু, এবার পাচ্ছেন ৫০ লাখ টাকা!

জাতীয় দলের মিডফিল্ডার রবিউল হাসান বসুন্ধরা কিংসে নাম লিখিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। সংগৃহীত ছবি
>তিন মৌসুম ধরে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘে খেলছেন মিডফিল্ডার রবিউল হাসান। শুরুতে ২৫ হাজার টাকায় আরামবাগে যোগ দেওয়া রবিউল এবার ৫০ লাখ টাকায় বসুন্ধরা কিংসে নাম লিখিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।

‘ঢাকার ফুটবলে টাকা ওড়ে’, সাম্প্রতিক সময়ে দল বদলের সময় হওয়ার আগেই ফুটবল পাড়ায় ঘুরে বেড়ালে এ কথা মনে হতে বাধ্য। দেশের ফুটবলের অবস্থা যত খারাপই হোক না কেন, ঘরোয়া ফুটবল মানেই টাকার ঝনঝনানি। প্রতি বছর যেভাবে খেলোয়াড়দের দাম বাড়ছে, তাতে এই কথায় ভুল ধরার লোক আর পাওয়া যাচ্ছে না। 

প্রতি বছর জ্যামিতিক হারে বাড়া ফুটবলারদের দাম। নতুন মৌসুমের দামামা বেজে ওঠার আগেই ২০ বছরের রবিউল হাসানের দাম উঠে গিয়েছে ৫০ লাখ টাকা! বিশ্বস্ত সূত্রমতে মোটা অঙ্কের এই চুক্তিতে আরামবাগের মায়া ত্যাগ করে রবিউলের বসুন্ধরায় তাঁবু গাড়া নিশ্চিত।

তিন মৌসুম ধরে আরামবাগের জার্সিতে খেলছেন জাতীয় দলে সবে আলো ছড়ানো শুরু করা মিডফিল্ডার রবিউল। আরামবাগের জার্সিতে শেষ দুই মৌসুম তো কেটেছে স্বপ্নের মতো। ২০১৮ সালে আরামবাগকে এনে দিয়েছেন স্বাধীনতা কাপের শিরোপা। সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ এবারের মৌসুমে তাঁর কাঁধেই তুলে দেওয়া হয় অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। তারুণ্য নির্ভর দলটিকে সামনে থেকে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের সম্মানজনক অবস্থানে। লিগের মাঝপথে এসে পঞ্চম স্থানে আছে আরামবাগ।

জাতীয় দলের জার্সিতে রবিউলের পারফরম্যান্স তো নজরকাড়া। কখনো উইঙ্গার, কখনো বা আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে জেমি ডের অটোমেটিক চয়েজ এই তরুণ। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর নামের সঙ্গে লেগে গিয়েছে সুপার সাব ট্যাগ। তাঁর একমাত্র গোলেই লাওসকে হারিয়ে বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। এই রবিউলের গোলেই গত মার্চে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে নমপেনে প্রীতি ম্যাচ জিতেছিল জেমি ডের দল। টানা দুটি ম্যাচে, তা-ও আবার বিদেশের মাটিতে টানা দুই ম্যাচে বদলি নেমে গোল করে দেশকে জেতানোর কীর্তি গড়েছেন এই তরুণ মিডফিল্ডার।

এমন মিডফিল্ডারকেই তো দলে চাই করপোরেট ক্লাব বসুন্ধরার। নতুনে এসেই যে ক্লাবটি পেশাদার ফুটবলের বিজ্ঞাপনের বার্তা ছড়িয়ে দেশের ফুটবলের খোলস পাল্টে দিয়েছে। কোনো অঘটন না ঘটলে তাদের হাতে লিগের শিরোপা দেখছেন প্রায় সবাই। ফলে এখন থেকেই তারা ভাবতে শুরু করেছে এএফসি কাপের প্রস্তুতি নিয়ে। ইতিমধ্যে কোস্টারিকান জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলা ফরোয়ার্ড দানিয়েল কলিনদ্রেসের সঙ্গে আরও এক বছরের চুক্তি বাড়িয়েছে। স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোনের সঙ্গেও তাই। ঘর ঠিক রেখে শক্তি বাড়িয়ে এশিয়ান মঞ্চে খেলার জন্য যে কোনো মূল্যে ভালো খেলোয়াড় চাই তাদের।

তাই রবিউলের মতো পরীক্ষিত তরুণদের দাম উঠে গিয়েছে ৫০ লাখ টাকা। শুধু রবিউলই নয় বিশ্বস্ত সূত্রমতে শেখ রাসেলের সেন্টারব্যাক ইয়াসিন খান ও উইঙ্গার বিপলু আহমেদকেও দলে ভেড়ানোর কাজ সেরে ফেলেছে তারা।

অথচ এবারের মৌসুমে ১৫ লাখ টাকায় আরামবাগে খেলছেন রবিউল। এক লাফে ৩৫ লাখ টাকা বেশি! আরও একটু পেছনে তাকালে চোখ কচলাতে হবে। ২০১৫-১৬ মৌসুমে মাত্র ২৫ হাজার টাকায় আরামবাগে নাম লিখিয়েছিলেন রবিউল। পরের মৌসুম দাম বেড়ে সাড়ে চার লাখ। এরপরই ১৫ লাখ টাকা। গাণিতিক হারের মধ্যেই ছিল এই পর্যন্ত! কিন্তু এবার জ্যামিতিক হারে বেড়ে সেই অঙ্কটা চলে গিয়েছে ৫০ লাখে! বিশ্বস্ত সূত্রমতে মোটা অঙ্কের এই চুক্তিতে বসুন্ধরার জার্সিতে রবিউলের খেলা নিশ্চিত। কিন্তু যেহেতু দল বদলের সময় হয়নি, তাই কোনো পক্ষই বিষয়টি স্বীকার করতে রানাজ।

বসুন্ধরার সঙ্গে এখনো কোন আলোচনা হয়নি বলে বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন রবিউল, ‘আমি এখন আরামবাগের খেলোয়াড়। আমাদের এখন লিগ চলছে। সব মনযোগ লিগের দিকেই। লিগ শেষ করে নতুন মৌসুমের কথা ভাবব।’ বোঝাই যাচ্ছে, দলবদলের সূচি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কেউ মুখ খুলতে নারাজ। প্রতিবছরই যা হয় আর কি। বসুন্ধরা ক্লাবের সভাপতি ইমরুল হাসানও দল বদলের সময় হলে রবিউলের কথা ভাববেন বলে বর্তমান গুঞ্জনটি উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন, ‘আমরা এখন নিজেদের খেলোয়াড় ধরে রাখার দিকেই নজর বেশি। নতুন মৌসুমের দল বদলের সময় হলে পছন্দের অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলাপ করব।’ তবে পছন্দের তালিকার ওপর দিকে রবিউল, ইয়াসিন ও বিপলু আছেন বলে স্বীকার করেছেন।

এবারের দল বদল নিয়ে ব্যতিক্রমী এক উদাহরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। আগামী ৭ আগস্ট চলতি প্রিমিয়ার লিগ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পরই কি না নতুন মৌসুমের দলবদল শুরু! ১৬ আগস্ট থেকে যা চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অক্টোবর-নভেম্বরে ফেডারেশন কাপ। ডিসেম্বরে লিগ। আগামী মৌসুমের বর্ষপঞ্জিসহ গতকাল বাফুফের সভায় এই সময়সূচি অনুমোদন করা হয়েছে। ব্যাস, এতেই নড়েচড়ে উঠেছে শিরোপা প্রত্যাশী ক্লাবগুলো। প্রতি বছরের মতো ভেতরে-ভেতরে পছন্দের খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলার প্রস্তুতি শুরু করেছে তারা। খেলোয়াড়েরাও চড়াতে শুরু করেছেন নিজেদের দাম। সবকিছুই চলছে প্রতিবছরের মতোই, পর্দার অন্তরালে।