Thank you for trying Sticky AMP!!

আজ যেন গোলের পথটাই খুঁজে পাচ্ছিলেন না কেনেথ (৩২ নম্বর জার্সি)

৫৭ দিনে গোলের রাস্তা ভুলে যাওয়া সাইফ

এমন ম্যাচের হাইলাইটস হয়তো আর কখনোই দেখতে চাইবেন না ইকেচুকু কেনেথ! নিজের ভুল শোধরানোর সুযোগ খোঁজার জন্য যদি দেখেও থাকেন, গোল মিসের দৃশ্যগুলো দেখে কপাল চাপড়াতে পারেন নাইজেরিয়ান এই ফরোয়ার্ড। একটি নয়, দুটি নয়—চার চারটি গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন সর্বশেষ ফেডারেশন কাপে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া কেনেথ।  
কেনেথ গোল মিসের মহড়া না দিলে প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় পর্বটা হয়তো আজ জয় দিয়েই শুরু করতে পারত সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে তারা।
টানা তিন জয় দিয়ে লিগের প্রথম পর্ব শেষ করেছিল সাইফ। তিন ম্যাচে মোট গোল করেছিল ১০টি। এর মধ্যে ৫ মার্চ শেষ ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে উড়িয়ে দিয়েছিল ৪-০ গোলে। মাঝে ৫৭ দিনের বিরতিতে গোলের রাস্তাটাই যেন ভুলে গেছে সাইফ।  

সাইফ ও রহমতগঞ্জের জন্য দ্বিতীয় পর্বে এটাই ছিল প্রথম ম্যাচ। লম্বা বিরতি শেষে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচে নামলে সাধারণত যে জড়তা দেখা যায়, সাইফের খেলায় কিন্তু তা মনে হয়নি। শুধু গোলের রাস্তাটাই খুঁজে পায়নি তারা। অনুশীলনে ঘাটতি থাকায় ম্যাচ ফিটনেসে পিছিয়ে ছিল রহমতগঞ্জ। আজকের ম্যাচের আগে শেষ তিন ম্যাচে দুই ড্রয়ের বিপরীতে রহমতগঞ্জের জয় ছিল একটি।

লিগের দ্বিতীয় পর্বে সাইফ স্পোর্টিংয়ের কোচ বদল হয়েছে। বেলজিয়ামের পল পুটকে কোচের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর আজকের আগে সর্বশেষ দুই ম্যাচে কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন সহকারী জুলফিকার মাহমুদ। আজ স্থায়ীভাবে পুটের রেখে যাওয়া চেয়ারে বসেছেন ইংলিশ স্টুয়ার্ট হল। কৌশলে কোনো পরিবর্তন আনেননি অভিজ্ঞ এই কোচ। পুরোনো ৪-২-৩-১ ফরমেশনেই পুরো ম্যাচে দলকে খেলিয়ে গেলেন তিনি। সাধারণত সাইফের আক্রমণভাগের মূল জ্বালানি আসে লেফটব্যাক ইয়াছিন আরাফাতের মাধ্যমে। কখনো ওভারলেপিং করে প্রতিপক্ষকে অস্থির করে দেন। আবার কখনো নিচ থেকে থ্রু পাসেই খুলে ফেলেন প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ।

সাইফ স্পোর্টিং ও রহমতগঞ্জ ক্লাবের মধ্যে ম্যাচের একটি মুহূর্ত

ম্যাচের ৭ মিনিটে ইয়াছিনের এক পাস থেকে কেনেথের দারুণ বলের নিয়ন্ত্রণেই খুলে গিয়েছিল রহমতগঞ্জের রক্ষণভাগ। প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদকে একা পেয়ে তালগোল পাকিয়ে তাঁর গায়ে মারেন নাইজেরিয়ান এই স্ট্রাইকার। ৮ মিনিট পরে আরও একটি সুযোগ পেলেও গোল করতে পারেননি এই নাইজেরিয়ান। অবশ্য বলা যায় দুর্দান্ত সেভ করে কেনেথকে গোলবঞ্চিত করেছেন রহমতগঞ্জ অধিনায়ক ও গোলরক্ষক রাসেল। মিডফিল্ডার সিরোজিউদ্দিন রাখমাতুলেভের ক্রসে দূরের পোস্ট থেকে হেড করে গোলমুখে বল ফেলেছিলেন রিয়াদুল হাসান। ফিরতি বলে লাফিয়ে উঠে ভালো হেড নিয়েছিলেন কেনেথও। কিন্তু ডানদিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন রাসেল।

ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট চলছিল সাইফের। ২২ মিনিটে রহমতগঞ্জের প্রথম আক্রমণ। পুরান ঢাকার দলটির রসায়নটাও ছিল চমৎকার। সেন্টারব্যাক মোহাম্মদ তারেক প্রান্ত বদল করে লেফট উইঙ্গার শোয়েব মিয়াকে পাস দিলে প্রথম স্পর্শেই বলটি গোলমুখে সাজিয়ে দেন শোয়েব। আনমার্কড ক্রিস রেমি সময় নিয়ে দেখেশুনে শট নিয়েও বলটি পোস্টে রাখতে পারেননি। বিরতিতে যাওয়ার আগে আরও একটি গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন আইভরি কোস্টের স্ট্রাইকার রেমি।

অনেক চেষ্টা করেও গোল দিতে পারেনি কোনো দল

দ্বিতীয়ার্ধের ৫৭ মিনিটে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো সাইফের জার্সিতে মাঠে নামেন জামাল ভূঁইয়া। কলকাতা মোহামেডানের হয়ে আই লিগে খেলায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বে তাঁকে মাঠে দেখা যায়নি। দেরিতে যোগ দেওয়ায় দলের সঙ্গে এখনো মানিয়ে উঠতে পারেননি জাতীয় দলের অধিনায়ক। প্রথমে তাঁকে কিছুটা ‘১০ নাম্বার’ রোলে খেলানো হলে মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়। এর পরে সিরোজিউদ্দিনের সঙ্গে জায়গা বদল করে নিজের হোল্ডিং মিডফিল্ডার পজিশনে ফিরে আসেন জামাল।

পুরোনো অধিনায়ককে পেয়েও সাইফের ভাগ্য বদলায়নি। ৫৯ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও ঠিকমতো শট নিতে পারেননি কেনেথ। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার আগে স্বদেশি জন ওকোলির রক্ষণ চেরা পাসে আরও একবার গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন কেনেথ। কিন্তু ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে তিনি যে শটটি নিলেন, তা যেন নিছকই নেওয়ার জন্য।