Thank you for trying Sticky AMP!!

৫ ফেব্রুয়ারি: দিনটা শুধুই ফুটবলারদের

আজ ৫ ফেব্রুয়ারি, রোনালদো-নেইমার ছাড়াও এই দিনে জন্মেছেন ফুটবলের অনেক রথী-মহারথীরা। ছবি: টুইটার
>

আপনার ছেলে-মেয়ে, বা পরিচিত কোন অনুজ আত্মীয় যদি আজকের দিনে জন্মে থাকে, তাহলে দেরি না করে আজকেই তাকে একটা বুটজোড়া আর একটা ফুটবল কিনে দিন! ইতিহাস বলছে, আজকের দিনে জন্মালে সফল ফুটবলার হওয়ার সম্ভাবনা সর্বাধিক!

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও নেইমার—আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হওয়া ছাড়া এই দুই ফুটবল তারকার আর কোথায় মিল আছে, বলতে পারবেন?

মাথা চুলকানোর আগেই বলে দিচ্ছি, এই তিনজনই আজকের এই দিনে জন্মেছিলেন। ১৯৮৫ সালের আজকের এই দিনে জন্মেছিলেন এ সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়, পর্তুগিজ রাজপুত্র ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, আর তার ঠিক সাত বছর পরেই জন্ম নিয়েছিলেন আধুনিক ব্রাজিল ফুটবলের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন নেইমার জুনিয়র

শুধু কি এই তিন জনপ্রিয় ফুটবলারই আজকে জন্মেছিলেন? ইতিহাস বলছে আরও বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় ফুটবল তারকা এদিন, অর্থাৎ ৫ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীতে এসেছিলেন।

গিওর্গি হ্যাগি
রোমানিয়ার ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা মানা হয় ‘কার্পেথিয়ান ম্যারাডোনা’ নামে খ্যাত এই মিডফিল্ডারকে। নব্বইয়ের দশকের অন্যতম সফল এই আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার সেই গুটিকয়েক ফুটবলারদের মধ্যে একজন, যিনি রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা—দুই ক্লাবেই খেলেছেন। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে আর্জেন্টিনা বিদায় নিয়েছিল শুধুমাত্র এই রোমানিয়ান তারকার জাদুর কাছে হেরেই। ক্যারিয়ারজুড়ে করেছেন তিন শতাধিক গোল। হ্যাগি জন্মেছিলেন ১৯৬৫ সালে।

সেজারে মালদিনি
ছেলে পাওলো মালদিনিকে ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা রক্ষণ সেনা হিসেবে মানা হলেও, বাবা সেজারেও কিন্তু কম ছিলেন না। পাওলো ডিফেন্ডার হওয়ার অনুপ্রেরণা কিন্তু পেয়েছিলেন বাবার কাছ থেকেই। খেলোয়াড় হিসেবে এসি মিলানকে চারবার লিগ আর একবার ইউরোপ-সেরা বানানো সেজারে ম্যানেজার হিসেবেও ছিলেন সফল। মিলানকে কাপ উইনার্স কাপ জিতিয়েছিলেন তিনি। ইতালির ম্যানেজার হিসেবে কোনো শিরোপা না জিতলেও জাতীয় দলে মালদিনি, ফাবিও ক্যানাভারো, জিয়ানলুইজি বুফন, ক্রিশ্চিয়ান ভিয়েরি, ফ্রান্সেসকো টট্টি ও আলেসসান্দ্রো দেল পিয়েরোদের মতো প্রতিভাদের গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিলেন তিনি। ১৯৩২ সালে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি।

কার্লোস তেভেজ
আধুনিক যুগে আর্জেন্টাইন ফুটবলের অন্যতম বড় তারকা তেভেজ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, জুভেন্টাস, বোকা জুনিয়র্সের হয়ে নিজের জাত চিনিয়েছেন বছরের পর বছর। আর্জেন্টিনায় মেসির থেকেও তার জনপ্রিয়তা বেশি! রোনালদোর ঠিক এক বছর আগে জন্মেছিলেন এই তারকা।

জিওভান্নি ফন ব্রঙ্কহর্স্ট
২০০৬ সালে বার্সেলোনার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পেছনে এই ডাচ ফুটবলারের অনেক অবদান ছিল। ২০১০ বিশ্বকাপ ফাইনালে ডাচদের অধিনায়কত্ব করা এই লেফটব্যাক বর্তমানে ডাচ ক্লাব ফেইনুর্দের দায়িত্বে আছেন। খেলোয়াড়ি জীবনে বার্সেলোনা, আর্সেনাল, রেঞ্জার্সের হয়ে শিরোপা বিধৌত কিছু মৌসুম কাটানোর পর ম্যানেজার হিসেবে ফেইনুর্দকেও জিতিয়েছেন লিগ শিরোপা। রোনালদোর দশ বছর আছে, ১৯৭৫ সালে জন্মেছিলেন এই তারকা।

রদ্রিগো প্যালাসিও
আর্জেন্টিনার এই স্ট্রাইকারকে সবাই মনে রেখেছে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে জঘন্য খেলার জন্য। কিন্তু তাতে সিরি ‘আ’ এর ভক্তরা রুষ্ট হতে পারেন। ইতালিয়ান লিগে বেশ সফল ছিলেন এই স্ট্রাইকার - ইন্টার আর জেনোয়ার হয়ে। বোকা জুনিয়র্সের ইতিহাসেরও অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার মানা হয় তাকে। এখন খেলছেন বোলোনিয়াতে। জাতীয় দলের সতীর্থ তেভেজের চেয়ে দুই বছর আগে জন্মেছেন তিনি।

আদনান ইয়ানুজাই
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ভক্তরা এক সময় ভাবতেন এই ইয়ানুজাই-ই হয়তো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অভাব পূরণ করতে পারবেন। সে সময়ের ম্যানেজার ডেভিড ময়েস আবার আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে ইয়ানুজাইয়ের সঙ্গে ইয়োহান ক্রুইফের তুলনা করেছিলেন। কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি দিয়ে, প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে না পারা বেলজিয়ান এই উইঙ্গার এখন খেলছেন রিয়াল সোসিয়েদাদে। ফলে রোনালদোর সঙ্গে তাঁর ওই এক জায়গাতেই মিল থেকে গেছে, আর অন্য কিছুতে নয় - জন্মদিনে! রোনালদোর ঠিক দশ বছর পরে, ১৯৯৫ সালে জন্মেছেন তিনি।

জর্ডান রোডস
প্রিমিয়ার লিগ যারা নিয়মিত অনুসরণ করে থাকেন, তারা এই ইংলিশ স্ট্রাইকারকে চিনে থাকবেন। ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স ও মিডলসব্রোর মতো ক্লাবে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলে গেছেন তিনি। জন্মেছেন ১৯৯০ সালের আজকের এই দিনে।

ভেদরান চরলুকা
ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ডিফেন্ডারও জন্মেছেন আজকের এই দিনে, রোনালদোর এক বছর পর। প্রিমিয়ার লিগের দর্শকেরা তাঁকে মনে রেখেছেন ম্যানচেস্টার সিটি আর টটেনহামের হয়ে খেলা ম্যাচগুলোর জন্য। ২০১৮ বিশ্বকাপ খেলেই জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়া এই তারকা এখন খেলছেন রাশিয়ায়, লোকোমোটিভ মস্কোতে।

অ্যান্ডি হিঞ্চক্লিফ
আজকের অ্যাশলি কোল, কিয়েরান ট্রিপিয়ের, লুক শ, কাইল ওয়াকারের মতো ইংলিশ ফুলব্যাকরা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এই হিঞ্চক্লিফকে খেলতে দেখেই। এভারটন, ম্যানচেস্টার সিটি ও শেফিল্ড ওয়েনসডের হয়ে খেলা এই তারকা ছিলেন প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম পরিচিত মুখজ, ফ্রি কিক নিতেন দুর্দান্ত। ১৯৯৬ সালে ডেভিড বেকহামের সঙ্গে একই সঙ্গে জাতীয় দলে অভিষিক্ত হয়েছিলেন তিনি। জন্ম ১৯৬৯ সালের আজকের এই দিনে।

বিলি ডডস
স্কটিশ লিগের কিংবদন্তি এই স্ট্রাইকার জাতীয় দলের হয়েছেন ২৬ বার। হিঞ্চক্লিফ আর ডডসের জন্ম একই সালে, একই দিনে।

জন আলোইসি
প্রথম অস্ট্রেলিয়ান তারকা হিসেবে ইংলিশ লিগ, স্প্যানিশ লিগ ও ইতালিয়ান লিগে গোল করেছিলেন তিনি। তাঁর আদায় করা পেনাল্টিতে গোল করেই ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবারের মতো ২০০৬ বিশ্বকাপ খেলতে যায় অস্ট্রেলিয়া। ১৯৭৬ সালে জন্মেছেন তিনি।

ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে আজকের দিনটা উধাও হয়ে আধুনিক ফুটবল হয়তো তার অর্ধেক রংই হারাত!