Thank you for trying Sticky AMP!!

কাল সবার মনেই ছিলেন ম্যারাডোনা।

৮৬ বিশ্বকাপ মাথায় নিয়ে রিয়ালকে জয়ে ফেরালেন জিদান

মহাগুরুত্বপূর্ণ সব ম্যাচ। একটু এদিক-ওদিক হলেই কেউ বাদ পড়ে যাবে, কেউ চলে যাবে খাদের কিনারায়। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচগুলো কাল যেন গুরুত্ব হারিয়েছিল। ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর দিনে ফুটবলে বাকি সবকিছু যেন অর্থহীন। তবু বাস্তবতা মেনে মাঠে নামতে হয়েছিল সব দলকে। চ্যাম্পিয়নস লিগে কাল ইন্টার মিলানের মাঠে খেলতে নেমেছিল রিয়াল মাদ্রিদও। প্রতিপক্ষের মাঠে কঠিন এক ম্যাচ। যে ম্যাচে জয় ছাড়া অন্য কিছু মানেই শেষ ষোলোর আশা প্রায় হারিয়ে ফেলা।

কালো আর্মব্যান্ড পরে নামা রিয়াল কাল কঠিন এক পরীক্ষা দিয়েছে। অধিনায়ক সের্হিও রামোসকে ছাড়া খেলতে নেমে চ্যাম্পিয়নস লিগে গত কয়েক বছরে হার ছাড়া অন্য কিছু দেখেনি রিয়াল। ছিলেন না মূল স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা। করোনা থেকে মাত্র সেরে ওঠায় শুরু থেকে নামার উপায় ছিল না কাসেমিরোর। আর আন্তোনিও কন্তের ইন্টার মিলান তো নিজেদের মাঠে দুর্দান্ত। সেই ইন্টারকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে রিয়াল। ম্যারাডোনার স্মৃতি মাথায় রেখে জয় নিয়ে ফিরেছেন জিদান।

রিয়ালের জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম গোল হ্যাজার্ডের।

প্রথমার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় রিয়াল। ৬ মিনিটেই দলকে পেনাল্টি এনে দেন নাচো। রামোস নেই, নেই বেনজেমাও। তাই পেনাল্টি শটের দায়িত্ব অন্য কাউকে নিতে হলো। পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দেন এডেন হ্যাজার্ড। ২০১৯ সালে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর চ্যাম্পিয়নস লিগে এই প্রথম গোল পেলেন ক্লাবটির সবচেয়ে দামি ফুটবলার। তবে ম্যাচটা রিয়ালের পকেটে পুরে দেওয়ার কৃতিত্ব আর্তুরো ভিদালের।

চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠ থেকে জয় নিয়ে আসার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন ভিদাল। ইন্টার ও বার্সেলোনার সমর্থকদের মুখে হাসি এনে দেওয়ার ইচ্ছা থেকে সে কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে ম্যাচে হেরে ইচ্ছা পূরণ করতে পারেননি। আর কাল ম্যাচের আধ ঘণ্টার মধ্যেই ঘরের মাঠেই দলের হাসি মুছে দেওয়ার বন্দোবস্ত করলেন। রিয়াল মাদ্রিদের বক্সে ডাইভ দিয়ে পেনাল্টির দাবি তুলেছিলেন। রেফারি তাতে কান না দেওয়ায় একটু বাড়াবাড়ি করে বসেছিলেন। বাজে আচরণের জন্য দুবার হলুদ কার্ড খেয়ে বসলেন। ঘরের মাঠে ৩৩ মিনিটেই ১০ জনের দল হয়ে গেল ইন্টার। কন্তে তাই নিজের হতাশা লুকাননি, ‘৩০ মিনিটের মধ্যে কোনো দলকে ১০ জনের বানিয়ে ফেলা মানে খুন করা।’

রিয়াল আক্রমণভাগের এখন এতটাই পড়তি দশা যে এই ১০ জনের ইন্টারের পরীক্ষা সেভাবে নিতে পারেনি। প্রথমার্ধে ১-০ ব্যবধানেই শেষ হয়েছে। গত ৪ নভেম্বরে রদ্রিগোর অন্তিম মুহূর্তের গোলে জয় পেয়েছিল রিয়াল। কালও সেই রদ্রিগোকেই দরকার হলো জয় নিশ্চিত করার জন্য। ৫৯ মিনিটে লুকাস ভাসকেজের ক্রস থেকে শট নিয়েছিলেন মাত্রই বদলি নামা রদ্রিগো। সেটা জালে যাওয়ার আগে রিয়ালেরই সাবেক খেলোয়াড় আশরাফ হাকিমির স্পর্শ নিয়ে গেছে।

লাল কার্ড দেখে দলকে ডুবিয়েছেন ভিদাল।

ম্যাচের আগে ম্যারাডোনার জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছিল। জিনেদিন জিদান জানিয়েছেন, কিংবদন্তির বিদায় তাঁকে কতটা ধাক্কা দিয়েছে, ‘১৯৮৬ বিশ্বকাপ আমার মাথায় গাঁথা। এ ঘটনা আমাদের গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে। তাঁর পরিবারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার কিছু বলার ভাষা নেই। এ খবরে অনেক কষ্ট পেয়েছি।’ ম্যাচে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে প্রায় ছিটকে গেছে ইন্টার। এ নিয়ে কথা বলার আগেই কন্তে কিংবদন্তিকে স্মরণ করেছেন, ‘এমন একজনের জন্য আজ কান্না করছি যিনি ফুটবলে ইতিহাস গড়েছেন এবং ফুটবল ইতিহাসে আজীবন থাকবেন। আমরা এক কবিতাকে নিয়ে কথা বলছি, যার বিপক্ষে খেলার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার।’

‘বি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে কাল শাখতার দোনেৎস্ককে ৪-০ গোলে হারিয়েছে বরুসিয়া মনশেনগ্লাদবাখ। ৪ ম্যাচ শেষে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে মনশেনগ্লাদবাখ। ৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে রিয়াল। বরুসিয়ার কাছে দুই ম্যাচে ১০ গোল খেলেও ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে শাখতার। আর ২ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে ইন্টার।