Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশ ফুটবল দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা

এশিয়ান গেমস নিয়ে রোমাঞ্চিত কাবরেরা

সংবাদ সম্মেলনে আসতে একটু দেরিই করলেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। টিম ম্যানেজার বিজন বড়ুয়া ও এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–২৩ দলের অধিনায়ক রহমত মিয়াকে নিয়ে যখন এলেন, তখন তাঁদের চোখেমুখে ক্লান্তি স্পষ্ট। সকাল থেকে যে শেষ মুহূর্তের অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন। ‘শেষ মুহূর্তে’ বলার কারণ, হাংজু এশিয়ান গেমসে অংশ নিতে আজ গভীর রাতে দেশ ছাড়ছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–২৩ ফুটবল দল। ২৩ সেপ্টেম্বর এশিয়াড শুরুর তারিখ হলেও বাংলাদেশ ফুটবল দলকে মাঠে নামতে হবে আগেই। ১৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের এশিয়াড–মিশন।

২০১৮ সালে জাকার্তা এশিয়ান গেমসে প্রথমবারের মতো উঠেছিল দ্বিতীয় রাউন্ডে। উজবেকিস্তান, কাতার আর থাইল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপে বাংলাদেশ খেলেছিল দুর্দান্ত। জামাল ভূঁইয়ার গোলে কাতারের মতো দলকে হারিয়েছিল। ড্র করেছিল থাইল্যান্ডের বিপক্ষে। সে ম্যাচটিতে দল জিতলে অবাক হওয়ার কিছু থাকত না।

Also Read: আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলে কাবরেরা এখন আত্মবিশ্বাসী

দ্বিতীয় রাউন্ডে উত্তর কোরিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষেও লড়াইটা মন্দ হয়নি। হেরেছিল ৩–১ গোলে। মোটকথা, জাকার্তা এশিয়ান গেমস সুখস্মৃতির হয়ে আছে শুধু ফুটবলের সাফল্যের জন্যই। এবার আরও একটি এশিয়াড ফুটবলের মিশনে প্রতিপক্ষ হিসেবে আছে চীন, ভারত ও মিয়ানমার। তিনটিই শক্তিশালী দল। চীনে এশিয়ারই অন্যতম শীর্ষ দল। ভারত আসছে সুনীল ছেত্রীর নেতৃত্বে শক্তিশালী দল নিয়ে। সাম্প্রতিক কালে ভারত ফুটবল খেলছে যথেষ্ট দাপটের সঙ্গেই।

এশিয়ার বড় বড় শক্তির সঙ্গে ভারত টক্কর দিচ্ছে চোখে চোখ রেখে। মিয়ানমারও র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। জাকার্তা এশিয়াডকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে হাংজুতেও কি ফুটবল দল ভালো কিছু করতে পারবে? স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার অধীন জাতীয় দল কিছু দিন হলো বেশ ভালো করছে। কিন্তু এটা অনূধ্ব৴–২৩, এই দল কতটা কী করতে পারবে? কাবরেরা জানালেন, ‘এশিয়াডে অংশ নিতে পেরে খেলোয়াড়েরা রোমাঞ্চিত। এটা এশিয়ার বড় একটা প্রতিযোগিতা। আমরা খেলবও খুবই শক্তিশালী তিনটি দলের বিপক্ষে–চীন, ভারত ও মিয়ানমার। আমাদের সামনে খুব রোমাঞ্চকর একটা সপ্তাহ অপেক্ষা করছে। সেই সঙ্গে চ্যালেঞ্জিং।’

অনুশীলনে বাংলাদেশ দল

কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করেননি কাবরেরা। এশিয়াডে ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চান এই কোচ, ‘আমরা প্রতিটি ম্যাচ নিয়ে আলাদা করে ভাবছি। ম্যাচ ধরে ধরে এগিয়ে যেতে চাই। আলাদা লক্ষ্য যদি বলেন, সেটি অবশ্যই ভালো খেলা। লড়াই করা।’

২০১৮ সালে জাকার্তা এশিয়াডের তুলনায় এবারের এশিয়াডে কী তুলনামূলক সহজ গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ? জাকার্তায় বাংলাদেশ দলে ছিলেন রহমত মিয়া। এবার তিনি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর চোখে একটা বিশেষ পার্থক্য চোখে পড়ছে, ‘গত এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ দলটা বলতে গেলে জাতীয় দলই ছিল। এবার খেলোয়াড়েরা তুলনামূলক নতুন। গতবার আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছি। এবার লক্ষ্য থাকবে ভালো করার।’

Also Read: মোরছালিনের মধ্যে বিশেষ কিছু দেখছেন উচ্ছ্বসিত কাবরেরা

গ্রুপের তিনটি দলের মধ্যে মিয়ানমারকেই ‘পাখির চোখ’ করছেন কাবরেরা, ‘তিনটি দলই শক্তিশালী। তবে আমরা প্রথম ম্যাচটি নিয়ে ভাবছি। সেটি মিয়ানমারের বিপক্ষে। চীন আর ভারতের তুলনায় মিয়ানমার কিছুটা বোধহয় পিছিয়ে আছে। আমরা তাই প্রথম ম্যাচে মিয়ানমারের বিপক্ষে পয়েন্ট পেতে চাই। জিততে পারলে খুবই ভালো হয়, সেটি তুলনামূলক শক্তিধর চীন আর ভারতের সঙ্গে আমাদের প্রেরণা দেবে।’

ম্যাচ ধরে এগোতে চান কাবরেরা

এশিয়ান গেমসে ১৯৭৮ সালে প্রথম খেলেছিল বাংলাদেশ। ১৯৮২ সালে দিল্লি এশিয়াডে মালয়েশিয়াকে ২–১ গোলে হারিয়ে আসে প্রথম জয়টি। তখন অবশ্য এশিয়াড ফুটবল জাতীয় দল নিয়েই অনুষ্ঠিত হতো। ১৯৮৬ সালে সিউল এশিয়াডেও নেপালকে ১–০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ১৯৯০ সালে বেইজিং এশিয়াডে অংশ নিয়ে ১৯৯৪ সালে হিরোশিমা আর ১৯৯৮ ব্যাংকক এশিয়াডে ফুটবলে অংশ নেয়নি বাংলাদেশ।

২০০২ সালে বুসান এশিয়াড থেকে ফুটবল পরিণত হয় অনূর্ধ্ব–২৩ দলের লড়াইয়ে। ২০০২ এর পর ২০০৬ সালে দোহা, ২০১০ সালে গুয়াংজু, ২০১৪ সালে ইনচন এশিয়াডে ফুটবলে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে ইনচনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আসে তৃতীয় জয়টি। ২০১৮ সালে জাকার্তা এশিয়াডে কাতারকে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠাটা ছিল ফুটবলের সেরা অর্জন।