Thank you for trying Sticky AMP!!

যমজ বোন নীলাদ্রি (বাঁয়ে) ও হিমাদ্রি। আজ মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে

হকির যমজ বোনের গল্প

এলাকার সবাই তাদের নীল আর সুখ নামেই চেনে। পুরো নাম হিমাদ্রি বড়ুয়া ও নীলাদ্রি বড়ুয়া। নীলাদ্রির চেয়ে মাত্র দুই মিনিটের বড় হিমাদ্রি। কিন্তু হিমাদ্রিকে বড় বোন হিসেবে মানতে বয়েই গেছে নীলাদ্রির! যমজ এই বোনেরা যে পরস্পরের দারুণ বন্ধু।

চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে একসময় নিয়মিত ক্রিকেট খেলত দুই বোন। কিন্তু ক্রিকেট ছেড়ে গত বছর বিকেএসপিতে হকিতে ভর্তি হয়েছে যমজ বোনেরা। বিকেএসপির মেয়েদের হকির প্রথম ব্যাচের ছাত্রী হিমাদ্রি ও নীলাদ্রি। ১৫ বছর বয়সী যমজ বোনেরা পড়ছে বিকেএসপিতে অষ্টম শ্রেণিতে।

মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে আগামীকাল শুরু হচ্ছে মেয়েদের পাঁচ ম্যাচের হকি সিরিজ। এই সিরিজ দিয়েই প্রায় পাঁচ মাস পর আবারও মাঠে গড়াচ্ছে মেয়েদের হকি। প্রয়াত হকি সংগঠক মাহমুদ উর রহমান ও শামসুল বারীর নামে দুটি দল খেলবে এ হকি সিরিজে। হিমাদ্রি ও নীলাদ্রি খেলবে মাহমুদ উর রহমান একাদশের হয়ে।

ম্যাচ খেলতে তর সইছে না হিমাদ্রি–নীলাদ্রির

স্টিক হাতে জাতীয় প্রতিযোগিতায় এবারই প্রথম খেলতে নামবে দুই বোন। হকির নীল টার্ফে খেলতে নামার আগে ভীষণ রোমাঞ্চিত হিমাদ্রি, ‘এর আগে ফেডারেশনের আয়োজনে ওয়ালটন হকি টুর্নামেন্টে খেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওই সময় বিকেএসপির ক্যাম্প শুরু হওয়ার কারণে খেলতে পারিনি। এবার মাঠে নামতে অপেক্ষায় আছি।’

চট্টগ্রামের হকি কেন্দ্র একাডেমিতে কোচ মোহাম্মদ মোহসিনের অধীনে অনুশীলন করত দুই বোন। সেখানে মূলত চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের আউটারের সিমেন্টের ওপর অনুশীলন করতে হয়েছে। কিন্তু মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের নীল টার্ফে অনুশীলনের পর মুগ্ধতা ছুঁয়ে গেছে যমজ বোনদের। নীলাদ্রির কণ্ঠে সেই মুগ্ধতা, ‘আসলে ঘাসের মাঠে এক রকম খেলা হয়, টার্ফের মাঠে অন্য রকম। কিন্তু আমরা সিমেন্টের ওপর অনুশীলন করতাম। আউটার স্টেডিয়ামের ভেতরে ঢোকার সুযোগই পেতাম না। এখানে তাই টার্ফে খেলতে খুব ভালো লাগছে।’

হকি সিরিজটিতে ভালোভাবে খেলতে চাই আমরা। বড় আপুদের মতো এক দিন আমরাও মেয়েদের জাতীয় দলে খেলতে চাই।
হিমাদ্রি

বাবা বিজয় বড়ুয়া চট্টগ্রাম শহরের ব্যবসায়ী। মেয়ে হলেও পরিবার থেকে কখনো খেলাধুলায় বাধা আসেনি। বরং বাবার সঙ্গেই অনুশীলনে আসত দুই বোন। যদিও দূরের আত্মীয় স্বজনেরা একটু-আধটু নেতিবাচক সমালোচনা করে যমজ বোনদের হকি খেলা নিয়ে। নীলাদ্রি অবশ্য এসবে পাত্তা দিতে চায় না, ‘হকি খেলি বলে এলাকায় কেউ আমাদের কিছু বলে না। তবে কোনো অনুষ্ঠানে বা মন্দিরে গেলে দূরের আত্মীয়স্বজনেরা বাবাকে ডেকে বলে, তোমার মেয়েরা তো চালু হয়ে গেছে। ওদের খেলাধুলা করতে দিয়ো না। কিন্তু আমরা খেলাধুলা চালিয়েই যাব। হকি খেলতে অনেক ভালো লাগে আমাদের।’

প্রথমবারের মতো প্রতিযোগিতামূলক হকিতে খেলবে দুই বোন। পারফরম্যান্স দিয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পেতে চায় যমজেরা। হিমাদ্রির চোখে লেগে আছে সেই স্বপ্ন, ‘হকি সিরিজটিতে ভালোভাবে খেলতে চাই আমরা। বড় আপুদের মতো এক দিন আমরাও মেয়েদের জাতীয় দলে খেলতে চাই।’

অনুশীলনে মেয়েরা