Thank you for trying Sticky AMP!!

এক হাত দিয়ে খেলে ব্রোঞ্জ জিতেছে সৌমিক

এক হাত নেই, তবু পদক জিতল সৌমিক

পুরস্কারের মঞ্চ থেকে নেমে গলায় ঝোলানো পদক নেড়েচেড়ে দেখছিল সৌমিক মণ্ডল। যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না! ঢাকায় প্রথমবারের মতো যুব গেমসে খেলতে এসে টেবিল টেনিসে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে নড়াইলের কিশোর।

সৌমিক শারীরিক প্রতিবন্ধী। জন্মগতভাবে বাঁ হাতের কনুইয়ের নিচ থেকে হাতের বাকি অংশ নেই তার। অথচ এই এক হাত দিয়ে খেলেই এবারের যুব গেমসে সবার নজর কেড়েছে। পল্টনের শহীদ তাজউদ্দীন ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত গেমসে আজ খুলনা বিভাগকে দলগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জেতানোর ক্ষেত্রে বড় অবদান ছিল সৌমিকের।

খুলনা বিভাগের দলগত ইভেন্টে সৌমিক ছাড়াও খেলেছেন রাজীব জাহান, সাইফ আল সামি, রুদ্র দেবনাথ ও মাহতাবুর রহমান।

সৌমিকের পদক গ্রহণের মুহূর্তটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে

শুরুতে সৌমিক ক্রিকেটার ছিল। এক হাতেই দুর্দান্ত পেস বোলিং করত। কিন্তু সৌমিকের খেলা দেখে টেবিল টেনিস খেলোয়াড় সাদিয়া রহমানের মা শাহানাজ পারভীন তাকে টেবিল টেনিস খেলার পরামর্শ দেন।

টেবিল টেনিসে আসার গল্পটা বলছিল এভাবেই সৌমিক, ‘আমি একবার খুলনায় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্রিকেট খেলতে যাই। সেখানে আমার খেলা দেখে আন্টি (শাহনাজ পারভীন) আমার আম্মুকে বলেন, ক্রিকেটের বল ভারী। গায়ে লাগলে চোটে পড়তে পারি। কিন্তু টেবিল টেনিস খেললে চোটে পড়ার ভয় নেই। এরপর আমি টেবিল টেনিস খেলা শুরু করি।’

Also Read: ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু যুব গেমসে পদকজয়ী মাশরাফির

সাড়ে তিন বছর আগে টেবিল টেনিসে হাতেখড়ি হয় সৌমিকের। নড়াইল শহরের চৌরাস্তায় বাড়ি তাদের। বাড়ির পাশের ক্লাবে নিয়মিত অনুশীলন করে সে। ঢাকায় গত বছর প্যারালিম্পিক বাছাইয়ে অংশ নেয় টেবিল টেনিসে। সেখানে চূড়ান্ত পর্বের বাছাইয়ে টিকেছে। যে কারণে আগামী বছর প্যারিসে প্যারালিম্পিকে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে সৌমিক।

এক হাতে বলটা নিয়ে সৌমিক বল গ্রিপ করে কনুইয়ের ওপর রাখে। এভাবে ধরতে কোনো সমস্যা হয় না বলে জানাল সে, ‘বল কীভাবে ধরব, এসব নিয়ে সমস্যা হয়নি। শুরুতে নার্ভাস লাগত। আস্তে আস্তে রপ্ত করেছি এটা।’

ট্রেনিং পার্টনার লক্ষ্মী দত্তর সঙ্গে সৌমিক মণ্ডল

প্রথমবার পদক জিতে উচ্ছ্বসিত সৌমিক, ‘প্রথমবার এসে পদক জিতেছি বলে খুব ভালো লাগছে। এখানে আসার আগে ভালোভাবে অনুশীলন করেছিলাম। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, ভালো খেলব।’

নড়াইলে সৌমিকের সঙ্গে অনুশীলন করে লক্ষ্মী দত্ত। এবার যুব গেমসে সে খেলতে এসেছে। নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী লক্ষ্মী সৌমিকের পদক জেতায় খুব খুশি, ‘আমার ট্রেনিং পার্টনার সৌমিক। ওর সঙ্গে অনেক র‍্যালি হয় আমার। ও অনুশীলনের ব্যাপারে তৎপর। ক্লাবে আসতে বললে দ্রুত চলে আসে। আমরা স্বাভাবিক খেলোয়াড়েরা ওর মতো খেলতে পারি না। অথচ শারীরিক দুর্বলতা নিয়েও সে ভালো খেলে।’

Also Read: তবু তো ১৫ লাখ টাকা পুরস্কার পেলেন ইমরানুর

সৌমিকের কোচ দাহির সুলতানাও খুশি এমন পারফরম্যান্সে। প্যারা অলিম্পিকে সৌমিককে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন তিনি, ‘প্রথম দিন ওকে দেখে মনে হয়েছিল ঠিকমতো খেলতে পারবে কি না। কিন্তু ওর শেখার আগ্রহ অনেক। অনেক ভালো খেলছে সে। আশা করি, প্যারা অলিম্পিকেও সে ভালো কিছু করতে পারবে এবং ফ্রান্সে গিয়ে বাংলাদেশের পতাকা আরও উঁচুতে তুলবে।’

Also Read: ইমরানুরকে সহযোগিতার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর