Thank you for trying Sticky AMP!!

অলিম্পিকে ভালো করতে পরিশ্রম করছেন রোমান সানা।

অলিম্পিকে ভালো করতে পরিশ্রম করে যাচ্ছি

তির-ধনুকের সঙ্গে বিচ্ছেদ ছিল প্রায় পাঁচ মাস। অবশেষে টঙ্গীর আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে গত ১৯ আগস্ট শুরু হয়েছে আর্চারদের অনুশীলন। ১৮ জন আর্চারের মধ্যে জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক বেশি জোর দিচ্ছেন টোকিও অলিম্পিকে সরাসরি খেলার ছাড়পত্র পাওয়া রোমান সানার ওপর। করোনাকালের ‘নতুন স্বাভাবিক সময়ে’ রোমানের অলিম্পিক প্রস্তুতি কেমন চলছে? টঙ্গী থেকে প্রথম আলোর সঙ্গে ফোনে কথা বললেন বাংলাদেশের সেরা আর্চার।

প্রশ্ন

তিন সপ্তাহ ধরে টঙ্গীতে অনুশীলন করছেন। অন্য সময়ের সঙ্গে এই সময়ের পার্থক্য কী?

রোমান সানা:পার্থক্য তেমন কিছু নয়। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, এই যা। ঘুম আর খাওয়া বাদে বাকি সময়টা মাস্ক পরে থাকছি। তির মারার সময় অবশ্য মাস্ক পরা থাকে না। তবে অনুশীলন এলাকার বাইরে যাওয়া নিষেধ। আমরা কেউ যাচ্ছিও না। সবাই একটা নিয়মের মধ্যে আছি। তবে অনুশীলন আগে যেভাবে করতাম, এখনো সেভাবেই করি। ভিন্ন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হলেও এখন পর্যন্ত সবকিছু ভালোভাবেই চলছে। সমস্যা একটাই। বেশ কয়েক মাস অনুশীলনের বাইরে থাকায় পাওয়ারে (শক্তি) ঘাটতি হচ্ছে। এটা পুরোপুরি ফিরে পেতে মাস দুয়েক সময় লাগবে।

প্রশ্ন

অনুশীলনের সূচিটা কেমন?

রোমান: সকাল ৮টায় শুরু হয়ে সাড়ে ১১টা বা পৌনে ১২টা পর্যন্ত টানা চলে। বিকেলেও দুই ঘণ্টা অনুশীলন হয়। সব মিলিয়ে দৈনিক ছয় ঘণ্টার মতো অনুশীলন করছি। অনেক দিন পর তির-ধনুক নিয়ে কাজে নামায় কোচ তেমন একটা চাপ দিচ্ছেন না। তবে আমরা যথেষ্ট সময় দিচ্ছি, সবাই সিরিয়াস থাকছি।

জার্মান কোচ ফ্রেডরিকের অধীনে চলছে রোমানের অনুশীলন।
প্রশ্ন

অনুশীলন না থাকলে ক্যাম্পে কী করেন?

রোমান: মঙ্গলবার বিকেলে আমরা ছুটি পাই। শুক্রবার পুরোই ছুটি। বাকি দিনগুলো সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুশীলন, খাওয়া আর নামাজ পড়ার বাইরে হাতে তেমন সময় থাকে না। তারপরও যেটুকু অবসর পাই, টঙ্গীতে আমাদের ডরমিটরির ছাদে ঘুড়ি ওড়াই। মাস্ক পরা থাকে তখনো। এর বাইরে আর কিছু করার সময় আসলে নেই।

প্রশ্ন

ঘুড়ি ওড়ানোর শখ কি ছোটবেলা থেকেই? নাকি এখন হলো?

রোমান: ছোটবেলা থেকেই ঘুড়ি ওড়ানোর শখ আমার। খুব ভালো লাগে। ফটোগ্রাফিরও শখ আছে। কোথাও গেলে যদি সে রকম কিছু চোখে পড়ে, ছবি তুলি।

অলিম্পিকে খেলাটা আমার স্বপ্ন। আশা করছি আগামী বছর অলিম্পিক হবে এবং অলিম্পিকে ভালো কিছু করতে আমি পরিশ্রম করে যাচ্ছি।
প্রশ্ন

প্রশ্ন: সামনে খেলা কী আছে? বাইরে খেলতে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে?

রোমান: আগামী মাসে তুরস্কে বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। চাইলে যাওয়া যায়। তবে মনে হয় না যাওয়া হবে। এ বছর আর তেমন কোনো সূচি নেই। আগামী বছর শুরু থেকে সম্ভবত খেলা পুরোদমে শুরু হবে। দেশে এ বছর জাতীয় আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ হতে পারে। হলে খেলব।

প্রশ্ন

ফেব্রুয়ারি-মার্চে ব্যাংককে এশিয়া কাপ, মে মাসে সাংহাই, জুনে প্যারিসে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে। এমনকি ভিসাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৯-২৫ এপ্রিল গুয়াতেমালায় বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ দল পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

রোমান: ফেডারেশন যা ভালো মনে করে করবে। তবে আমরা খেলার জন্য মুখিয়ে আছি। অলিম্পিকের আগে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে আশা করছি কিছু টুর্নামেন্ট খেলা হবে। সেটা খুব জরুরিও।

প্রশ্ন

করোনায় এ বছর অলিম্পিক হলো না। সব ঠিক থাকলে আগামী বছর সেটি হওয়ার কথা। অলিম্পিকে খেলার ছাড়পত্র পাওয়ার পর থেকেই বলে আসছেন, অলিম্পিকই আপনার ধ্যানজ্ঞান। অলিম্পিক হলে সেখানে ভালো করার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?

রোমান: অলিম্পিকে খেলাটা আমার স্বপ্ন। আশা করছি আগামী বছর অলিম্পিক হবে এবং অলিম্পিকে ভালো কিছু করতে আমি পরিশ্রম করে যাচ্ছি।

প্রশ্ন

জার্মান কোচ ফ্রেডরিক করোনাকালে বাংলাদেশেই আছেন। অলিম্পিক নিয়ে তিনি কী বলছেন?

রোমান: অনেক চেষ্টার পর অবশেষে ক্যাম্প শুরু হওয়ায় কোচও যেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। গত পাঁচ মাস তাঁরও সময় কাটছিল না। এখন কোচ বলছেন, অলিম্পিকে ভালো করতে সর্বোচ্চ চেষ্টাই আমরা করব।