Thank you for trying Sticky AMP!!

কর্তৃপক্ষ ভাবছে কী?

বহু বছর আগেই সাবিনা ইয়াসমীন গেয়েছিলেন, ‘কথা যদি শুরু করি, শেষ তো হবে না।’ আবার বহু বছর আগে জেমসও গেয়েছেন, ‘কথা নয় মুখে মুখে, কথা হবে মনে মনে।’ কোনোটাই মিথ্যে নয়। কখনো কখনো কথা বলে শেষ করা যায় না, আবার কিছু কথা মুখে না বললেও চলে। আসলে ‘কথা’ কথাটা ছোট হলেও কখনো কখনো এর ব্যাপ্তি বঙ্গোপসাগরের চেয়েও বিশাল। তবে কথা ছাড়া দুনিয়া যতটা অচল, তার চেয়েও বোধ হয় বেশি অচল মুঠোফোন কোম্পানিগুলো। কীভাবে মানুষকে কারণে-অকারণে, দিন-রাত কথা বলতে ব্যস্ত রাখা যায়, এ নিয়ে তাদের চিন্তার শেষ নেই। কয়েক বছর আগেও বেশি কথা বললে মানুষ পেত বাচাল উপাধি। আর এখন বেশি কথা বললে পায় গ্যালাক্সি এস ফোর টাইপ স্মার্টফোনসহ অসংখ্য পুরস্কার! পৃথিবী বদলে গেছে। এ কারণেই বোধ হয় বেশি কথা বলা মানুষের সংখ্যাও গেছে বেড়ে। ‘কথা নয় কাজ বেশি’—এই প্রবাদ এখন ‘কাজ নয়, কথা বেশি’তে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রমথ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘অল্প কথায় কাজ হলে বেশি কথার প্রয়োজন কী?’ আজ চৌধুরী সাহেব নেই। তাঁর বাণীটাও মনে নেই কারও। এখন ‘বেশি কথায় পুরস্কার পেলে অল্প কথার প্রয়োজন কী’—এই নীতিতেই বিশ্বাসী সবাই। রাজনীতিবিদদের ভোট দিয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার কথা থাকলেও আসলে সেটা কথা বলার সুযোগ। অবশ্য অনেক রাজনীতিবিদ মনে করেন, কথা বলাটাই তাঁদের একমাত্র কাজ! কথা তো বলবেনই। নেতার হাতে মাইক আর সামনে লাখো জনতা, অথচ তিনি কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবেন, এমন কথা কেউ বলছে না। তবে বাংলাদেশের যেমন সীমানা আছে, তেমনি কথা বলারও একটা সীমা থাকা দরকার। সমস্যা হলো, আমাদের নেতারা বাংলাদেশের সীমানার কথা যেমন ভুলে যান, তেমনি ভুলে যান কথা বলার সীমাও। বেশি কথা বলতে গেলে ভুলও যে বেশি হয়, তা কারও মাথায় থাকে না। মাথায় থাকবেই বা কেন? চাল, ডাল, মুরগি কিনতে টাকা লাগলেও কথা বলতে তো টাকা লাগে না। যদি ‘২০০ শব্দ বললে ৫০ টাকা দিতে হবে’ টাইপ কোনো নিয়ম থাকত, তাহলে নিশ্চয়ই সরকারি-বেসরকারি সব মানুষ পর্যাপ্ত বা দরকারি কথাগুলোই বলত। বিশেষজ্ঞরা তো অনেক কিছু নিয়েই ভাবেন। কথার ওপর কোনোভাবে মূল্য সংযোজন করা যায় কি না, তা নিয়েও তাঁদের ভাবা উচিত। এতে আর্থিক ও সামাজিক দুভাবেই দেশের উপকার হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা।