Thank you for trying Sticky AMP!!

কর্তৃপক্ষ ভাবছে কী?

আঁকা: জুনায়েদ

ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ে পড়েছি, ‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি’। পাঠ্যবই এবং আমাদের শিক্ষকেরা আজীবন দাবি করে এসেছেন যে, জীবনে সফল হতে হলে অধ্যবসায়, ধৈর্য, একাগ্রতা—এসব প্রয়োজন। এসব বিষয়ের ওপর রচিত রচনা মুখস্থ করতে করতে আমাদের ছাত্রজীবন বাদাম, বুটের মতো ভাজা ভাজা হয়ে গিয়েছিল। অথচ পাঠ্যবইয়ের এই কথাগুলো যে সত্য নয়, সবার সামনে তা প্রমাণ করে দিয়েছেন সোহেল রানা নামের এক ব্যক্তি। অসামান্য প্রতিভা নিয়ে জন্মানো এই ব্যক্তি দুর্দান্ত দক্ষতায় কদিন আগে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা লুট করেছেন। দু-তিন লাখ টাকা নয়, গুনে গুনে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। এ জন্য তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। দুই বছর ধরে তিনি বাসা থেকে ব্যাংক পর্যন্ত সুড়ঙ্গ কেটেছেন। তার ছিল অসীম ধৈর্য, একাগ্রতা, আত্মবিশ্বাস আর কাজের প্রতি ভালোবাসা।
কিন্তু সফল হওয়ার এই অত্যাবশ্যকীয় গুণগুলো থাকার পরও তিনি সফল হতে পারেননি। টাকার বস্তাসহ ধরা পড়ে গেছেন। বাংলার লুটের ইতিহাসে আজ তিনি ‘ট্র্যাজিক হিরো’। অতএব, যাঁরা বলেন পরিশ্রম করলে, কিংবা অধ্যবসায়, একাগ্রতা থাকলে সফল হওয়া যায়, তাঁদের উচিত নতুন করে চিন্তাভাবনা করা। সেই সঙ্গে পাঠ্যবইয়ের এই রচনাগুলো প্রত্যাহার করা যায় কি না, তা নিয়েও কর্তৃপক্ষের চিন্তা করা উচিত। তবে এ কথাও সত্য যে, সোহেল রানার মতো প্রতিভাবান ব্যক্তি সচরাচর দেখা যায় না। এরা অনেকটা হ্যালির ধূমকেতুর মতো।
তাই, এই ক্ষণজন্মা প্রতিভাবানদের জেলে আটকে না রেখে জনহিতকর কাজেও নিয়োজিত করা যেতে পারে। দক্ষ জনশক্তির অভাবে আমরা দিনাজপুরসহ অন্যান্য কয়লাখনির কয়লা উত্তোলন করতে পারছি না। বিদেশি কোম্পানির প্রতি নির্ভরশীল হতে হচ্ছে আমাদের। অথচ সোহেলকে দায়িত্ব দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। তিনি সুড়ঙ্গ তৈরি করে প্রায় ১৭ কোটি টাকা তুলেছেন, কয়লা তোলা তার জন্য কোনো ঘটনাই নয়। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাববে।