Thank you for trying Sticky AMP!!

তা তা থৈ থৈ

ইরিনা মাহমুদ ময়মনসিংহ মেডিকেলের শিক্ষার্থী

তিনি যখন স্কুলে পড়তেন, তখন শিক্ষকেরা ইরিনা মাহমুদের প্রসঙ্গে কথা বলতে গেলেই এভাবে বলতেন, ‘ওই যে ওই মেয়েটা, যে নাচ করে?’ নাচই যেন তাঁর পরিচয়। ইরিনা মাহমুদ পড়ছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষে। নাচ তাঁর অন্য রকম এক ভালোবাসার বিষয়। তিনি যখন ছোট ছিলেন, তখন তাঁর বাসার খুব কাছেই থাকতেন নৃত্যশিল্পী গোলাম মোস্তফা খান। সেই সময় এক অনুষ্ঠানে সেই শিল্পীর নাচ দেখে প্রথম নাচ শেখার আগ্রহ জাগে তাঁর। গোলাম মোস্তফা খানের প্রতিষ্ঠান বেনুকা ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি হন তখন। সেখানে পাঁচ বছর মেয়াদি নাচের কোর্স শেষ করেন। সেখানে সাধারণ নৃত্য ও লোকনৃত্যের পাশাপাশি শেখেন ক্লাসিক্যাল নাচও। ক্লাসিক্যাল নাচের মধ্যে শেখেন ভরতনাট্যম, কত্থক ও ওডিশি নৃত্য। সেই সময় থেকেই তাঁর সবচেয়ে বেশি ভালো লাগত কত্থক নৃত্য। এরপর কত্থক শিখতে শুরু করেন বিখ্যাত কত্থক নৃত্যশিল্পী সাজু আহমেদের কাছে। এসএসসি পরীক্ষার পর নাচ শেখেন বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে। সেখানে তাবাসসুম আহমেদের কাছে কত্থক ও বেনজির কামালের কাছে ওডিশি শেখেন। পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ চলছে এখনো। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচ পরিবেশন করেন। ফাল্গুনের অনুষ্ঠান, নবীনবরণ, তাঁর ব্যাচ এম-৪৭-এর অনুষ্ঠান, বর্ষ সমাপনী অনুষ্ঠান, আন্তমেডিকেল বিতর্ক উৎসবসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচ পরিবেশন করেছেন তিনি।
সপ্তম শ্রেণীতে যখন পড়তেন, তখন ‘নতুন কুঁড়ি’তে অংশ নিয়েছেন সাধারণ নৃত্য ও ক্লাসিক্যাল নৃত্য বিভাগে। ক্লাসিক্যাল নৃত্য বিভাগের প্রতিযোগিতায় ফাইনাল রাউন্ডে উঠেছিলেন। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত নৃত্যশিল্পী হিসেবে বেশ কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তাঁর নাচ প্রচারিত হতে থাকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। যখন কলেজে পড়েন, তখন আন্তকলেজ নৃত্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। ইরিনা পড়তেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। নাচের পাশাপাশি ছবিও আঁকেন তিনি। স্কেচ করতে পছন্দ করেন, তবে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন আলপনা করতে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সেখানকার ছোট-বড় প্রায় সব অনুষ্ঠানের আলপনার নকশাই করেছেন তিনি। সম্প্রতি গিটার বাজানো শিখছেন। স্বর্ণার চাচা-ফুপুরাও সবাই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। তাই ছোটবেলা থেকেই ইরিনা ছিলেন এক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। ছোটবেলা থেকেই চেয়েছেন চিকিৎসক হতে, সে লক্ষ্য অর্জনের পথে আর একটি ধাপ বাকি। সার্জারিতে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছা তাঁর। তবে স্বপ্ন দেখেন নাচকে ঘিরে। ছোটদের জন্য একটি নাচের স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে তিনি কত্থক শেখাবেন। নাচকে ভালোবাসেন, নাচতে ভালোবাসেন। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত নাচের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে চান ইরিনা।