Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রথম আলোর উদাহরণ তুলে ধরল গুগল

অনুষ্ঠানে প্রথম আলোকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে গুগল। অনুষ্ঠান শেষে গুগলের কর্মীদের সঙ্গে প্রথম আলোর কর্মীরা। ছবি: গুগল

গুগল বাংলা ভাষায় অ্যাডসেন্স সেবা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ও বাংলা কনটেন্ট প্রকাশকদের জন্য এই সেবা চালু হলো। এর ফলে অনলাইনে বাংলা কনটেন্ট দেওয়া সাইটগুলোর জন্য অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে আয়ের সুযোগ তৈরি হলো। রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে এই সেবার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে গুগল।

অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় ৩৫টি মিডিয়া প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০ জন অংশ নেন। প্রায় তিন বছর ধরে বাংলায় গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে সাফল্য পাওয়া প্রথম আলোকে বাকি সবার সামনে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয় এ অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘গুগল এখন বাংলা বোঝে’।
অনুষ্ঠানে মিডিয়া প্রকাশকদের গুগল অ্যাডসেন্স সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হয়—কীভাবে দক্ষতার সঙ্গে এই সেবা ব্যবহার করে সর্বোচ্চ আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারে প্রকাশকেরা। প্রকাশকদের জানানো হয় সাম্প্রতিক সময়ের বেশ কিছু পরিসংখ্যান, তথ্য ও গবেষণার ফলাফল। এতে বাংলা ভাষায় কনটেন্ট প্রকাশকেরা সঠিকভাবে এই সেবা ব্যবহার করতে পারবেন বলে গুগল আশা প্রকাশ করে।
অ্যাডসেন্স সেবার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গুগলের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন গুগলের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার ম্যানেজার আহমদ শাহ নওয়াজ, গুগলের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের কান্ট্রি পরামর্শক হাশমী রাফসানজানী, গুগলের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পার্টনার মনিটাইজেশন বিশেষজ্ঞ অজয় লুথার এবং গুগলের সিপিটি পার্টনার রিডহোয়ারের জিতিন চৌধুরী।
গুগল আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাডসেন্স সুবিধা এখন চালু করলেও অনেক আগে থেকেই প্রথম আলোকে এই সুবিধা তারা দিয়ে আসছে। বাংলা ভাষার সবচেয়ে বড় ওয়েব পোর্টালকে এই সেবা দিয়ে গুগল বোঝার চেষ্টা করেছিল, বাংলায় অ্যাডসেন্স চালু কতটা ভূমিকা রাখতে পারে। ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার পর এখন এটি সবার জন্য উন্মুক্ত হলো।
সারা পৃথিবীতে বাংলা ভাষার এক নম্বর ওয়েব পোর্টাল হিসেবে প্রথম আলো কীভাবে সাফল্য অর্জন করল, সে ব্যাপারে ধারণা দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ সেশন রাখা হয় এই আয়োজনে। প্রথম আলো ডিজিটালের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) এহতেরাম উদ্দিন তা পরিচালনা করেন। তিনি বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারের বর্তমান চিত্র এবং এর বিকাশের প্রবণতা সম্পর্কেও ধারণা দেন। বাংলাদেশ সারা বিশ্বের মধ্যেই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যায় অগ্রগতির দিক দিয়ে উল্লেখযোগ্য বলে জানান।
গুগল অ্যাডসেন্স ১২ বছরের বেশি সময় ধরে মিডিয়া প্রকাশকদের অনলাইন কনটেন্ট থেকে আয়ের সুযোগ করে দিচ্ছে। বর্তমানে ২০ লাখের বেশি মানুষ গুগল অ্যাডসেন্স সেবা ব্যবহারের মাধ্যমে আয় করছেন। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে অনলাইন মিডিয়ায় বাংলা ভাষার কনটেন্টের চাহিদা তৈরি হয়েছে। তা নিয়মিত বাড়ছে বলেও গুগল জানিয়েছে। বাংলাদেশি মিডিয়া বা সংবাদমাধ্যমগুলো প্রিন্ট ও টিভির পাশাপাশি অনলাইনকেও তাদের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ভাবতে পারে বলে গুগল পরামর্শ দিয়েছে।
প্রকাশকদের পক্ষ থেকে গুগলের প্রতিও বেশ কিছু দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে। প্রথম আলোর এহতেরাম উদ্দিন পরামর্শ দেন, শুধু প্রকাশক নয়, বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনদাতা ও বিজ্ঞাপনের বাজারের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও কর্মীদেরও যেন গুগল প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। বাংলা ভাষার অনলাইন জগৎ যে এখন কত বড় ও প্রভাব বিস্তারী, সেটি বিজ্ঞাপনদাতারা না বুঝলে বিজ্ঞাপনের বাজারটিও ঠিকভাবে বেড়ে উঠবে না বলে মত দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা মত দেন, অনলাইনেও এখন সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় বাড়ছে। কিন্তু প্রথাগত প্রিন্ট বা টিভি মিডিয়ার মতো এখানে বিজ্ঞাপনের বাজার সেই তুলনায় বাড়ছে না। অনলাইনের কারণেই প্রথাগত সংবাদমাধ্যম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, আবার অনলাইনে সেভাবে আয়ও বাড়ছে না; এটি মিডিয়াগুলোকে দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জে ফেলেছে। অনলাইনে সঠিক, নির্ভরযোগ্য ও পরিশীলিত বাংলা কনটেন্ট ও সংবাদের প্রধান উৎস এই মিডিয়াগুলোকে ঠিকমতো বিকাশের সুযোগ না দিলে সামগ্রিকভাবে বাংলা ভাষাভাষীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তাঁরা জানান।
গুগলের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার ম্যানেজার আহমদ শাহ নওয়াজ বলেন, এমন আয়োজন সামনে আরও নিয়মিতভাবে করবে গুগল। প্রকাশকদের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনদাতা ও বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোকেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। গুগল ও মিডিয়া প্রকাশকেরা মিলে একটি ইতিবাচক ও কার্যকর বাংলা অনলাইন জগৎ তৈরি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।