Thank you for trying Sticky AMP!!

রসায়ন ২য় পত্র

অধ্যায়-৮ 
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ রসায়ন ২য় পত্রের অধ্যায়-৮ থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
# ‘বাংলাদেশের জ্বালানি সম্যায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিভিন্ন জ্বালানির পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্কের মধ্যে পরিবেশবিদ ড. টমাস তাঁর প্রবন্ধে উপস্থাপন করলেন; এক মোল হতে 235U হতে যে শক্তি পাওয়া যায়, সেই পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করতে 2.2×107 মোল মিথেন গ্যাস পোড়ানোর প্রয়োজন হয়।
ক. ড্রাইসেলের কোষ বিক্রিয়াটি লেখো।
খ. ধাতুসমূহ সমযোজী বন্ধন গঠন করে না কেন?
গ. উদ্দীপকের U-পরমাণুটি থেকে কোন নিউক্লীয় বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা সম্ভব? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘ভবিষ্যতে পরিবেশ সংরক্ষণ, কাঁচামালের সহজলভ্যতার আলোকে বিদ্যুতের উৎস নির্বাচনে উদ্দীপকের কোনটি অধিক গ্রহণযোগ্য?’ উদ্দীপকের আলোকে যুক্তি দাও।
উত্তর: ক: ড্রাইসেলের কোষ বিক্রিয়াটি নিম্নরূপ:
Zn(s)+2NH4+(aq)+2MnO2Zn2+(aq)+ 2NH3(aq) +Mn2O3(s)+ H2O(g)
উত্তর: খ: দুটি পরমাণু ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে যে বন্ধন তৈরি হয়, তাকে সমযোজী বন্ধন বলে। দেখা যায়, পরমাণুসমূহ অষ্টক পূরণের জন্য ইলেকট্রন শেয়ার করে। কিন্তু ধাতুসমূহের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ইলেকট্রন শেয়ার করলেও কাছাকাছি কোনো নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রকিন কাঠামো অর্জন করতে পারে না। এ জন্য কোনো ধাতুই সমযোজী বন্ধন গঠন করে না। যেমন সোডিয়াম পরমাণুর যোজ্যতাস্তরে একটিমাত্র ইলেকট্রন আছে, এটি যদি অন্য একটি পরমাণুর সঙ্গে ইলেকট্রন শেয়ার করে, তাহলে প্রতিটি সোডিয়াম পরমাণুর যোজ্যতাস্তরে দুটি ইলেকট্রন অর্জিত হয়, যা অষ্টক পূরণে ব্যর্থ। এ জন্য ধাতুসমূহ সমযোজী বন্ধন গঠন করে না।
উত্তর: গ: উদ্দীপকে উল্লিখিত পরমাণুটি হলো ইউরেনিয়াম। ইউরেনিয়াম থেকে নিউক্লীয় ফিসন বিক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করা সম্ভব। কারণ আমরা জানি, যে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় বড় নিউক্লিয়াস ভেঙে ছোট ছোট নিউক্লিয়াস তৈরি হয় এবং প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয়, তাকে নিউক্লিয়ার ফিসন বিক্রিয়া বলে। এখানে 1 টি U-235 নিউক্লিয়াসকে প্রচণ্ড শক্তিসম্পন্ন নিউটন দ্বারা আঘাত করলে Ba ও Kr মৌলে উৎপন্ন হয়। সেই সঙ্গে তিনটি নিউট্রন এবং প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয়। এই শক্তি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়।
উত্তর: ঘ: উদ্দীপকে দুটি জ্বালানির উল্লেখ করা হয়েছে, একটি হলো ইউরেনিয়াম এবং অন্যটি হলো মিথেন। আমাদের বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে, পরিবেশ সংরক্ষণ ও কাঁচামালের সহজলভ্যতা। পরিবেশের দিকে দেখা যায়, মিথেনের উৎস হিসেবে আমরা প্রাকৃতিক গ্যাসকে ব্যবহার করি। এই মিথেনকে পোড়ালে অর্থাৎ অক্সিজেনের সঙ্গে দহন বিক্রিয়ায় পরিবেশের জন্য দূষক কার্বন ডাই-অক্সাইড ও জলীয়বাষ্প উৎপন্ন হয়। দুটি গ্যাসই গ্রিন হাউস গ্যাস হিসেবে পরিচিত। বিশেষভাবে অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড অ্যাসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী। তবে কাঁচামালের সহজলভ্যতায় এটি অনেক এগিয়ে। আমরা বেশ সস্তায় এই গ্যাস পেতে পারি। তবে উত্তোলন সিস্টেমের জটিলতার জন্য এবং ভবিষ্যতের মজুতের কথা বিবেচনায় আনলে এটি অপর্যাপ্ত বলেই মনে হয়।
অন্যদিকে, ইউরেনিয়ামে তেজস্ক্রিয়তা ছাড়া কোনো ধরনের নিউক্লীয় বর্জ্য নেই, তবে তেজস্ক্রিয়তার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ কারণ কোনো কারণে একে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। অধিকন্তু ইউরেনিয়াম যেহেতু বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, সেহেতু এটি অনেক দামি। তবে উদ্দীপক তথ্যমতে 1 মৌল U হতে যে পরিমাণ ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুতের জ্বালানি পাওয়া সম্ভব, ততটুকু শক্তি উৎপন্ন করতে 2.2×107 মৌল মিথেন গ্যাস পোড়াতে হয়। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, সমপরিমাণ শক্তি প্রাপ্তিতে মিথেন অপেক্ষা ইউরেনিয়াম অনেক বেশি সাশ্রয়ী, অর্থাৎ একবার ইউরেনিয়ামভিত্তিক জ্বালানির জোগাড় করে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে তেজস্ক্রিয়তা রক্ষা করতে পারলে প্রাকৃতিক গ্যাস অপেক্ষা ইউরেনিয়াম-ভিত্তিক বিদ্যুৎ-ব্যবস্থা অধিক গ্রহণযোগ্য।
চিন্ময় কুমার দাস, শিক্ষক
খুলনা জিলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খুলনা