Thank you for trying Sticky AMP!!

সাইকি গ্রহাণুতে যাওয়ার মহাকাশযান প্রস্তুত করছে নাসা

সাইকি গ্রহাণুতে যেতে বড় সফরের প্রস্তুতি নাসার

ঢাকা থেকে লন্ডনের দূরত্ব আট হাজার কিলোমিটার। লন্ডন যেতে কত সব প্রস্তুতি নেয় আপনার বন্ধুরা কিংবা পাড়াতো ভাইয়েরা! তাহলে মনে করুন, চার কোটি কিলোমিটার দূরে যেতে কেমন প্রস্তুতি লাগবে? ভাবুন তো আবার, ইবনে বতুতা কিংবা মার্কো পোলোর মতো বিখ্যাত ব্যক্তিরা ভ্রমণের জন্য কেমন প্রস্তুতি নিতেন? আমরা তো সাজেক কিংবা দার্জিলিং যাওয়ার জন্য অনেক প্রস্তুতি নিই। এই কত কেনাকাটা, কতই–না প্রস্তুতি আমাদের থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা নানা সময় মহাকাশে খেয়াযান প্রেরণ করে। নাসার খেয়াযান পাঠানোর জন্য অনেকটা সময় নিয়ে প্রস্তুতি নিতে হয়। একেকটা অভিযানে কয়েক বছর কিংবা কয়েক দশকও লেগে যাওয়ার নজির আছে। এবার নাসার লক্ষ্য সাইকি নামে এক গ্রহাণুর দিকে। সাইকির কথা অনেক বৈজ্ঞানিক গল্পে জানা যায়। সেই সাইকির গতিপ্রকৃতি জানতে নাসা অনেক দিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।

নাসা ‘সাইকি মিশন’ নামে নতুন এই অভিযানের পরিকল্পনা নিয়ে এখন বেশ ব্যস্ত। মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যবর্তী অঞ্চলের গ্রহাণুতে খেয়াযান পাঠানোর কাজ করছে নাসা। ধাতব গ্রহাণুটি প্রধানত নিকেল ও লোহা দিয়ে তৈরি, যার কেন্দ্রে অন্য আরও ধাতব উপাদান থাকতে পারে।

মহাকাশযানে দুটি বিশাল সোলার অ্যারে যুক্ত করা হয়েছে।

আগামী ৫ অক্টোবর যাত্রা করবে মহাকাশযানটি। যে কারণে এখন যুক্তরাষ্ট্রের কেপ ক্যানাভেরালে চলছে শেষ সময়ের কাজকর্ম। আর ১০০ দিনের মতো সময় আছে। তারপর এই যান চার কোটি কিলোমিটার দূরে যাবে গ্রহাণুর কাছে। ২০২২ সালে যাত্রার কথা থাকলেও সফটওয়্যার জটিলতায় যাত্রা পিছিয়েছিল সেবার। নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির প্রকল্পপ্রধান মিশন সম্পর্কে জানান, ‘আমাদের দল এখন যাত্রার দিন গুনছে। শেষ সময়ের কাজ করছি আমরা। অনেক ধরনের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে কাজ শেষ করেছি। এখন অনেক ব্যস্ততা, তবু সবাই রোমাঞ্চকর এক যাত্রার জন্য অপেক্ষা করছি।’

Also Read: রোমান টেলিস্কোপ পৃথিবীর মতো গ্রহের সন্ধান পাবে কী

সাইকি স্পেসএক্স ফ্যালকন হেভি রকেটে চড়ে যাত্রা করবে। স্পেসএক্স ফ্যালকন হেভি রকেট এবারই প্রথম ভিনগ্রহের কোনো যান উৎক্ষেপণে অংশ নিচ্ছে। ২০২০ সালে স্পেসএক্স নাসার কাছ থেকে উৎক্ষেপণের জন্য ১১ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারের চুক্তি করে। পৃথিবীর অভিকর্ষের সীমানা পেরিয়ে সাইকি সৌরচালিত ডানায় ভর করে ছয় বছরের জন্য গ্রহাণুর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে।

সাইকি গ্রহাণুর পুরো নাম ‘১৬ সাইকি’, যা এমটাইপ বা লোহাভিত্তিক একটি গ্রহাণু। ১৮৫২ সালে ইতালীয় জ্যোতির্বিদ অ্যানিবেল দ্য গ্যাসপারিজ এই গ্রহাণুর প্রথম সন্ধান পান। গ্রিক দেবী সাইকির নামে নামকরণ করা হয়। এই গ্রহাণুর নামে ১৬ বা সিক্সটিন শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কারণ, এর আগে আরও ১৫টি গ্রহাণু আবিষ্কার করা হয়েছে। ২৭৯ কিলোমিটার লম্বা এই গ্রহাণু নিয়ে অনেক দিন ধরেই জ্যোতির্বিদদের আগ্রহ দেখা যায়। ধাতব এই গ্রহাণুর কেন্দ্র নিয়ে বেশ আগ্রহী সবাই। ধারণা করা হচ্ছে, এই গ্রহাণুর কেন্দ্রের মতোই বস্তু থেকে গ্রহের বিকাশ শুরু হয়। গ্রহের বিকাশ জানতে এই অভিযান খুবই কার্যকর হবে বলে আশাবাদী সবাই।

Also Read: প্রথম রোবট ভাইকিং নামল মঙ্গলে

মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের গ্রহাণু অঞ্চলে প্রবেশের পর ২৬ মাস সময় নিয়ে সাইকি গ্রহাণুকে প্রদক্ষিণ করবে খেয়াযানটি। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় এ অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে। খেয়াযানটি ২০২৯ সালে গ্রহাণুর কাছে পৌঁছাবে।
সূত্র: ফোর্বস

Also Read: নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে চ্যাম্পিয়নের তালিকায় বাংলাদেশের ‘টিম ডায়মন্ডস’