Thank you for trying Sticky AMP!!

অস্ট্রেলিয়ায় দাবানল নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী

ভিক্টোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। ছবি: এএফপি

ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি ভিত্তিতে সেনাবাহিনী মাঠে নামাচ্ছে ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকার।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিক্টোরিয়া রাজ্য সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী ও যান পাঠাতে রাজি হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিন্ডা রেনল্ডস। তীব্র গতিতে ছড়িয়ে পড়া আগুন থেকে বাঁচতে সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোয় আশ্রয় নিচ্ছে অসংখ্য মানুষ। আজ মঙ্গলবার এক দিনেই ভিক্টোরিয়ার প্রায় চার হাজার মানুষ উপকূলে আশ্রয় নিয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলসে আগুনে মারা গেছে আরও দুজন। এ নিয়ে দাবানলের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ১২-তে গিয়ে ঠেকেছে। এ ছাড়া দুই রাজ্য মিলিয়ে পাঁচজন নিখোঁজ আছে বলেও জানিয়েছে প্রশাসন।

ভিক্টোরিয়ার রাজধানী মেলবোর্নে দাবানল নেভাতে ব্যস্ত দমকল বাহিনী। ছবি: এএফপি

যে দুটি রাজ্য দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলসে বিশেষ সামরিক যান ব্ল্যাক হক ও চিনুক হেলিকপ্টার পাঠাবে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী। প্রয়োজনে দুর্গত ব্যক্তিদের উদ্ধার ও সহায়তা দেওয়ার কাজও করবে সামরিক বাহিনী।

পরিস্থিতির ভয়াবহতা বোঝাতে নিউ সাউথ ওয়েলস রুরাল ফায়ার সার্ভিসের কমিশনার শেন ফিটসিমন্স বলেছেন, ‘হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে সমুদ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। নিউ সাউথ ওয়েলসে এর চেয়ে ভয়াবহ দাবানল আমরা কখনো দেখিনি।’ পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কাছেও জরুরি সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সিডনি পুড়ছে, তবু জ্বলেছে নতুন বছরের আলো

জাঁকজমকপূর্ণ আলোকসজ্জা দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে সিডনি। ছবি: এএফপি

খ্রিষ্টীয় নববর্ষ শুরু হওয়ার মুহূর্তে সিডনির হারবার ব্রিজ ও অপেরা হাউসে জমকালো আতশবাজি দেখতে মুখিয়ে থাকে গোটা বিশ্ববাসী। তবে এবার ভয়াবহ দাবানলের মধ্যে বিখ্যাত সেই আতশবাজি কতটা জমবে, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। বিশ্ববাসীকে হতাশ করেনি সিডনি, প্রতিবছরের মতো এ বছরও চোখধাঁধানো আতশবাজিতে রঙিন হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় শহর সিডনির আকাশ।

বর্ণিল আলোকসজ্জায় রঙিন হয়ে ওঠে সিডনির হারবার ব্রিজ। ছবি: এএফপি

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সপ্তাহ খানেক ধরে দাবানলে পুড়তে থাকা সিডনিতে এবার আতশবাজি বন্ধ রাখার বিষয়ে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। ২ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ সেই পিটিশনে সইও করেছিল। তবে সিডনির ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ সবুজ সংকেত দেওয়ার পর আতশবাজি নিয়ে সব ধোঁয়াশা কেটে যায়। আয়োজন করা হয় জমকালো প্রদর্শনীর।

সমালোচকদের বাধা সত্ত্বেও খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উপলক্ষে সিডনি সেজেছে নতুন সাজে। ছবি: এএফপি

সমালোচকেরা দাবি জানিয়েছিলেন, আতশবাজি দেখাতে যে সাড়ে ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হবে, সেটি সিডনির দাবানল নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহার করা হোক। এর জবাবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই অনুষ্ঠান বাতিল করলেই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পরিস্থিতির উন্নতি হয়ে যাবে না। বরং এই আলোকসজ্জার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৩০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের সমমূল্যের বাণিজ্য হয়, যা দিয়ে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা সম্ভব। সিডনির মেয়র ক্লোভার মুর বলেছেন, ‘এই আয়োজনের মাধ্যমে অনেক অর্থ তুলে আমরা আগুন ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করতে চাই।’

উল্লেখ্য, ১২ মিনিটের এই চোখধাঁধানো অনুষ্ঠানে সিডনির আকাশে এক লাখেরও বেশি আতশবাজি পোড়ানো হয়। স্থানীয় সময়ে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছুঁতেই ঝলমলে হয়ে ওঠে গোটা আকাশ।