Thank you for trying Sticky AMP!!

ইমিগ্রেশনে আমেরিকাকে পেছনে ফেলছে কানাডা

ইমিগ্রেশন বা অভিবাসনের জন্য পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষের কাছে বহুল জনপ্রিয় প্রতিবেশী দুই দেশ আমেরিকা ও কানাডা। এ দুটি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভিবাসীদের ভূমিকাকে অন্যতম মুখ্য বিষয় হিসেবে দেখা হয়। তবে এতদিন বেশির ভাগ অভিবাসী মানুষের কাছে আমেরিকাই ছিল পছন্দের শীর্ষে।
নানা তথ্য উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, ইমিগ্রেশনের ক্ষেত্রে আমেরিকা থেকে অনেকটাই এগিয়ে আছে কানাডা। ‘ইমিগ্রেশন, শরণার্থী এবং নাগরিকত্ব, কানাডা: আমেরিকান নীতি’ শীর্ষক ন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের দেওয়া জরিপের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে কানাডায় অভিবাসন পাওয়া মানুষের সংখ্যা ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কানাডার সরকার তাদের কর্মশক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের অভিবাসন প্রক্রিয়া অধিকতর সহজ করেছে—যার ফলে কানাডার অভিবাসন সংখ্যা ২৬ শতাংশের চেয়ে আরও অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

অন্যদিকে, আমেরিকায় আইনি অভিবাসন ২০১৬ অর্থবছর এবং ২০১৮ অর্থবছরের মধ্যে ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের কঠিন অভিবাসন নীতিমালাগুলোর কারণে এই সংখ্যা দ্রুত আরও হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কানাডার সরকার প্রতি বছর তাদের অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ২০২১ সালের মধ্যে কানাডা আইনি অভিবাসনকে বছরে ৩ লাখ ৫০ হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ২০১৫ সালের যে সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার ৮৩৫, ২০২১ সালে সে সংখ্যা ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি হবে।
কানাডার ইমিগ্রেশন, শরণার্থী ও নাগরিকত্ব মন্ত্রী আহমেদ হুসেন বলেন, ‘সংকুচিত শ্রমশক্তি ও বার্ধক্যজনিত জনগোষ্ঠীর চ্যালেঞ্জ আরও সহজ করতে ভবিষ্যতে আমাদের অভিবাসন পরিকল্পনা নতুন করে সাজানো হচ্ছে। আমরা স্থায়ী বাসিন্দাদের সর্বোচ্চ স্তর নির্ধারণ করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘কানাডা নতুন অভিবাসীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।’
বিগত ২০১৯ সালে কানাডায় অভিবাসনে সংখ্যার ক্ষেত্রে ভারতীয় নাগরিকেরা প্রথম ছিল। মোট ৮৫ হাজার ৫৮৫ হাজার ভারতীয় নাগরিকে গত বছরে কানাডায় অভিবাসী হিসেবে এসেছে। চীনা নাগরিকেরা ছিল দ্বিতীয় স্থানে। গত বছর ৩০ হাজার ২৬০ জন চীনা নাগরিক কানাডায় অভিবাসী হিসেবে এসেছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফিলিপাইন, এ দেশ থেকে ২৭ হাজার ৮১৫ অভিবাসী হয়েছে। নাইজেরিয়া রয়েছে চতুর্থ স্থানে, সে দেশ থেকে ১২ হাজার ৫৯৫ জন অভিবাসী হয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে পঞ্চম স্থানে রয়েছে আমেরিকা। অভিবাসীদের স্বপ্নের এই দেশ থেকে ১০ হাজার ৮০০ জন তাদের দেশ ছেড়ে কানাডায় অভিবাসী হয়েছে।
কানাডায় ভারতীয়দের অভিবাসন বৃদ্ধি কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবী পিটার রেখাই ফোর্বস সাময়ীকিকে বলেন, ‘মার্কিন গন্তব্য থেকে তরুণ ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের কানাডায় নিয়ে আসতে সক্ষম হচ্ছে দেশটির সরকার। আর এর কারণ মূলত আমেরিকাতে এইচ-১ বি ভিসাপ্রাপ্তি ও নবায়ন এবং মার্কিন স্থায়ী অভিবাসনে নির্ভরযোগ্য পথ সন্ধানের চ্যালেঞ্জ। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন আইনের কারণে বিষয়টি জটিল হয়ে উঠেছে।’
অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের পাবলিক চার্জ বিধি, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও শরণার্থী ভর্তির পরিমাণ হ্রাসের মতো নীতির কারণে প্রতিবছর আইনি অভিবাসনের পরিমাণকে আরও বেশি হ্রাস করবে—যা আমেরিকার শ্রমশক্তি বৃদ্ধির গতি কমিয়ে দেবে এবং আমেরিকানদের জন্য নিম্ন-দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটাবে।
ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের ডেমোগ্রাফার ও লেখক উইলিয়াম ফ্রেয়ের মতে, ‘আমাদের দেশকে ক্রমবর্ধমান ও সমৃদ্ধ রাখতে আমাদের অভিবাসনের সংখ্যা বৃদ্ধির খুব প্রয়োজন।’