Thank you for trying Sticky AMP!!

ইরান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে অন্ধ সমর্থনের সমালোচনা করলেন করবিন

যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। ছবি: এএফপি

ওমান উপসাগরে দুটি তেলের ট্যাংকারে হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মার্কিনিদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে যুক্তরাজ্যও হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছে। নিজস্ব কোনো বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রকে অন্ধভাবে সমর্থন করার কঠোর সমালোচনা করেছেন যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। ব্রিটিশ সরকারের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করে আজ শনিবার এক টুইট বার্তায় করবিন বলেন, তেলের ট্যাংকারে হামলার বিশ্বাসযোগ্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই সরকারের সাফাই কেবল যুদ্ধের হুমকি বাড়াবে। ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে আসার কারণে উত্তেজনার শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বামপন্থী রাজনীতির ধারক যুদ্ধবিরোধী এই নেতা বলেন, সামরিক দাঙ্গাবাজিকে উসকে না দিয়ে যুক্তরাজ্যের উচিত আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করা।

গত বৃহস্পতিবার ওমান উপসাগরে জাপান ও নরওয়ের মালিকানাধীন দুটি তেলের ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ইরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর শুক্রবার নিজেদের বক্তব্যের পক্ষে একটি ভিডিও ফুটেজ হাজির করে। ওই ভিডিওতে ইরানের বিপ্লবী বাহিনী একটি ট্যাংকার থেকে অবিস্ফোরিত একটি মাইন (বোমা) সরিয়ে নিচ্ছে বলে দাবি করা হয়। এর আগে গত ১২ মে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) চারটি তেলের ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনায়ও ইরানকে সরাসরি দায়ী করে ট্রাম্প প্রশাসন।

ইরান শুরু থেকেই এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ইরানের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শুক্রবার বিবিসিকে বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানের কোনো যোগসূত্র নেই।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যকেই শিরোধার্য বলে মেনে নিয়েছে মিত্রদেশ যুক্তরাজ্য। গতকাল শুক্রবার বিবিসির এক অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ইরানকে দায়ী করার জন্য ব্রিটিশ সরকারের হাতে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আছে কি না? জবাবে হান্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন বিশ্বাস না করার কোনো কারণ নেই। কেননা তারা আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র।’

কেবল মিত্র বলে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করার এই কূটনীতির তীব্র সমালোচক বামপন্থী নেতা জেরেমি করবিন। তিনি এর আগেও যুক্তরাজ্যের যুদ্ধনীতির প্রকাশ্য সমালোচনা করেছেন। যে কারণে করবিনের প্রধানমন্ত্রী হওয়া ঠেকাতে তাঁর দলের মধ্যেই তৎপরতা আছে।

করবিনের বক্তব্যকে ‘হতাশাজনক’ ও ‘অনুমেয়’ বলে আক্রমণ করে পাল্টা টুইট ছেড়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের ওপর করবিনের আস্থা নেই কেন? ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের অন্যান্য প্রভাবশালী নেতাও করবিনের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। লেবার দলের কোনো কোনো আইনপ্রণেতাও করবিনের সমালোচনা করেছেন।

তবে লেবার দলীয় ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিলি থর্নব্যারী করবিনের বক্তব্যের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, হামলার জন্য কে দায়— তা সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে নির্ধারিত হওয়া জরুরি। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়, সে জন্য সতর্ক থাকা উচিত।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরটি-এর এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। মিত্র বলে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য বিশ্বাস করার অমন যৌক্তিকতাকে অভিনব কূটনীতি বলে আখ্যা দিয়েছে তারা। ট্যাংকারে হামলার ঘটনা নিয়ে গৎবাঁধা উপসংহারে না পৌঁছাতে সতর্ক করেছে রাশিয়া।