Thank you for trying Sticky AMP!!

এইডসে মৃত্যু কমেছে এক-তৃতীয়াংশ: জাতিসংঘ

গত বছর বিশ্বব্যাপী এইডসে মারা গেছে ৭ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। ছবি: এএফপি

২০১০ সালের পর থেকে এইডসে মৃত্যুর হার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে এসেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত বছর এইডসে মারা গেছে ৭ লাখ ৭০ হাজার মানুষ, ২০১০ সালের তুলনায় যা প্রায় ৩৩ শতাংশ কম। আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত জাতিসংঘের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

জাতিসংঘের এইডসবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইডস তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষ এইডসে আক্রান্ত। এদের মধ্যে ২ কোটি ৩০ লাখের কিছু বেশি মানুষ অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (এইডসের সংক্রমণ কমানোর জন্য ব্যবহৃত থেরাপি) নেওয়ার সুযোগ পায়। এইডস আছে এমন সবাইকে এই থেরাপি নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শতাব্দীর নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে এইডসে মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। ২০১০ সালে এইডসে মারা গিয়েছিল প্রায় ১২ লাখ মানুষ।

তবে অবস্থার উন্নতির পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী এইডসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুর্বলতাও উঠে এসেছে এ প্রতিবেদনে। এইডসে আক্রান্ত ও মারা যাওয়া ব্যক্তি—দুটোর সংখ্যাই আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি। তবে চলতি দশকে আফ্রিকায় এইডসে মারা যাওয়ার হার কিছুটা কমে এলেও বেড়েছে অন্য অঞ্চলে। পূর্ব ইউরোপে এইডসে মারা যাওয়ার হার বেড়েছে ৫ শতাংশ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় বেড়েছে ৯ শতাংশ। এ ছাড়া পূর্ব ইউরোপে এইডসে আক্রান্ত মানুষের হার বেড়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। মধ্যপ্রাচ্যে এ হার প্রায় ১০ শতাংশ।

ইউএনএইডসের নির্বাহী পরিচালক গানিলা কার্লসন বলেন, ‘এইডস নিরসনে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে বর্ধিত রাজনৈতিক নেতৃত্ব দরকার। রোগ নয়, বরং মানুষের ওপর মনোযোগ দিলেই কেবল এইডস নিরসন সম্ভব। এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছাতে আমাদের মানবাধিকারভিত্তিক প্রকল্প হাতে নিতে হবে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান সময়ে এইচআইভি সংক্রমণের অর্ধেকেরও বেশির জন্য দায়ী কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের মানুষ। মাদক ব্যবহারকারী, সমকামী, তৃতীয় লিঙ্গ, যৌনকর্মী ও জেলবন্দী ব্যক্তিরাই মূলত এইডস ছড়ানোর জন্য দায়ী, এমনটাই বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। শিশুরাও এইডসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। গত বছর প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার শিশুর শরীরে এইডস সংক্রমিত হয়েছে। তবে ২০১০ সালের তুলনায় এ হার ৪১ শতাংশ কম বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তরুণদের তুলনায় তরুণীদের মধ্যে এইডসে আক্রান্ত হওয়ার হার ৬০ শতাংশ বেশি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে।

দীর্ঘদিন গবেষণার পরও এখনো পর্যন্ত এইডসের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। ১৯৮০–এর শুরু থেকে প্রায় ৮ কোটি মানুষ এইডসে আক্রান্ত হয়েছে এবং সাড়ে ৩ কোটি মানুষ এইডসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

গত বছর এইডস নিরসনের জন্য প্রায় ১৯০ কোটি ডলার খরচ করা হয়েছে। তবে এ বিপুল পরিমাণ অর্থও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এইডস নিরসনের জন্য ২০২০ সালের মধ্যে ২৬০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ প্রয়োজন। সে হিসাবে এখনো প্রায় ৭০ কোটি ডলারের চাহিদা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে।