Thank you for trying Sticky AMP!!

এনডিএ জোট ছাড়ল বিজেপির সবচেয়ে পুরোনো মিত্র

আকালি দলের কোর কমিটির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন সুখবীর সিং বাদল। শনিবার রাতে পাঞ্জাবের চণ্ডীগড়ে

ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যভিত্তিক শিরোমনি আকালি দল ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে পার্লামেন্টে গৃহীত বিতর্কিত কৃষি বিল নিয়ে তীব্র মতপার্থক্যের জেরে এই সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সবচেয়ে পুরোনো এই মিত্র। শনিবার রাতে এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।
আকালি দলের প্রধান সুখবীর সিং বাদলের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, রাজনৈতিক সংগঠনটির কোর কমিটি শনিবার রাতে চণ্ডীগড়ে এক জরুরি সভায় বসে। সভায় দলের এই সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা আর বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে থাকবে না। বিতর্কিত কৃষি বিলকে আকালি দলের মূল ভোটব্যাংক কৃষকদের জন্য ‘প্রাণঘাতী ও বিপর্যয়কর’ আখ্যা দেন বাদল।


কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পেছনে আরও একটি কারণ সামনে এনেছে আকালি দল। তাদের অভিযোগ, এনডিএ সরকার পাঞ্জাবি ও শিখ ইস্যুতে সংবেদনশীলতা দেখাতে অব্যাহতভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের দাপ্তরিক ভাষার তালিকা থেকে পাঞ্জাবি ভাষাকে বাদ দেওয়া।
এনডিএ থেকে বেরিয়ে যাওয়া তৃতীয় দল আকালি দল। এর আগে শিব সেনা ও তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এই জোট ছেড়েছে।
আকালি দলের প্রধান বাদল বলছেন, তাঁর দল শান্তি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং পাঞ্জাব, পাঞ্জাবি, শিখ ও কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার মতো মূলনীতিগুলো অব্যাহতভাবে আঁকড়ে থাকবে। পাঞ্জাবের জনগণ, বিশেষ করে দলের নেতা-কর্মী ও কৃষকদের সঙ্গে পরামর্শ করার পরই এনডিএ জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।


আকালি দল শুরুর দিকে এই কৃষি বিলের প্রতি সমর্থন দিয়েছিল। তারা তখন বুঝতে পারেনি, বিলটি কতটা অসন্তুষ্টির সৃষ্টি করতে পারে। দলটির ভোটব্যাংকের বেশিরভাগই পাঞ্জাবের কৃষক। তারা নতুন এই আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কৃষকদের শঙ্কা, এই আইনের ফলে কৃষকদের জন্য বিদ্যমান ন্যূনতম দাম সহায়তা (এমএসপি) পদ্ধতির ইতি ঘটবে। এই খাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ঢুকে পড়বে। এতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা ঝুঁকিতে পড়বেন।
তুমুল বিরোধিতা সত্ত্বেও কৃষি বিল পার্লামেন্টে কণ্ঠভোটে পাস করায় গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব ছাড়েন আকালি দলের নেতা বাদলের স্ত্রী হরসিমরত কাউর বাদল। তবে শুরু থেকেই বিলটির পক্ষে সাফাই গাইছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তারা বলছে, এই বিল ভারতের সুবিশাল কৃষি খাতকে মান্ধাতা আমলের আইনকানুন থেকে মুক্ত করার পদক্ষেপ। এই সংস্কারের ফলে কৃষকেরা প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতা ও ওয়ালমার্টের মতো বড় বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। আবার গ্যারান্টিযুক্ত দরে তাঁরা যাতে সরকারে কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারেন, সেই নিশ্চয়তাও দেওয়া হবে।
মোদি সরকারের এমন সব আশ্বাসবাণীতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি কৃষকেরা। বিশেষ করে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মতো কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলো ফুসে উঠেছে। এসব এলাকায় গত শুক্রবার সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে বড় বড় বিক্ষোভ হয়েছে।