Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনাকালে শিশুদের সাইবার বুলিংয়ের ঝুঁকি বাড়ছে

অনলাইনে হয়রানি বা সাইবার বুলিং থেকে নিজেদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় জ্ঞান বা দক্ষতা শিশুদের নেই। ছবি: রয়টার্স
>জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি, শিশুরা ঘরবন্দী। ফলে ইন্টারনেটে অধিক সময় সেখানে ব্যয় করছে। ফলে হয়রানি অনেক গুণ বেড়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে শিশুরা ঘরবন্দী। এ অবস্থায় তারা ইন্টারনেটে ঝুঁকে পড়েছে। অধিক সময় সেখানে ব্যয় করছে। অলস সময় কাটানোয় বাবা–মায়েরা আগের মতো সন্তানদের ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকারে বাধাও দিচ্ছেন না। ফলে শিশুদের সাইবার বুলিং বা হয়রানির ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়েছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

সুইজার‌ল্যান্ডের জেনেভাভিত্তিক জাতিসংঘের সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস ইউনিয়ন (আইটিইউ) গতকাল বুধবার এমন সতর্কতার কথা জানায়। সংস্থাটি বলেছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিভিন্ন দেশ লকডাউনের (অবরুদ্ধ) মতো কঠোর পদক্ষেপ নেয়। ফলে ১৫০ কোটি শিশুর স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শুধু অনলাইনে পড়াশোনার জন্যই নয়, সময় কাটাতে শিশুরা বাধ্য হয়েই ইন্টারনেটে ঢুকে পড়ছে।

আইটিইউয়ের পরিচালক ডোরেন বোগডান-মার্টিন গতকাল অনলাইন ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বাবা–মায়েরা এখনই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিতে ইচ্ছুক নন, এমন সন্তানেরা নির্দিষ্ট বয়সের আগেই অনলাইনে আসছে। খুব কম বয়সের শিশুরা এখানে আসছে। অনলাইনে হয়রানি বা সাইবার বুলিং থেকে নিজেদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় জ্ঞান বা দক্ষতা তাদের নেই। তিনি আরও বলেন, আরেকটি বিষয় হচ্ছে, পড়াশোনা শেষ করার পর বিনোদন, গেম খেলা এবং অন্যের সঙ্গে গল্পগুজব করার জন্য শিশুদের অনেক বেশি সময় অনলাইনে কাটছে।

অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষায় নীতিমালা ও নির্দেশাবলি তৈরি করে থাকে আইটিইউ। সংস্থাটির পরিচালক বোগডান-মার্টিন বলেন, অলনাইনে শিশুদের সুরক্ষায় সুপারিশমালা প্রণয়নের কাজ দ্রুতবেগে করে যাচ্ছে আইটিইউ। দুই সপ্তাহের মধ্যে সেই সুপারিশমালা প্রকাশ করা হবে।

করোনা মহামারির প্রভাব শিশুদের মনে নেতিবাচকভাবে পড়বে বলে আগেই সতর্ক করেছেন চিকিৎসক ও মনোবিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলেছেন, ভাইরাস উদ্বেগজনক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ায় তা শিশুদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক উপদ্রব হিসেবে দেখা দিতে পারে। আইটিইউ এ–ও স্বীকার করেছে, ইন্টারনেট এখন দৈনন্দিন সামাজিক জীবনের বড় অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু শিক্ষার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করা হলে তা শিশুদের পাঠদানের জন্য মঙ্গল হবে। 

স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় পাঠদান এগিয়ে নিতে অনেক দেশে অনলাইনে বা ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ক্লাস হচ্ছে। তবে ডিজিটাল ডিভাইড বা বৈষ্যমের কারণে অনেকেই ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ফলে এসব শিক্ষার্থী অনলাইন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে বোগডান-মার্টিন বলেছেন, ইন্টারনেট সুবিধার অভাবে শিশুদের শিক্ষা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অনলাইনে শিশু হয়রানির সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ এবং সংস্থাটির সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো মিলে গত মাসে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে। সেখানে করোনার মহামারির সময় সরকারগুলোকে শিশু সুরক্ষামূলক সেবা কার্যক্রম খোলা ও সচল রাখতে বলা হয়।

আইটিইউয়ের হিসাবমতে, বিশ্বে মোট ৩৬০ কোটি মানুষের ইন্টারনেট সুবিধা নেই। আর যাদের আছে, তাদের হয় অনেক অর্থ খরচ করতে হচ্ছে, না হয় সংযোগের মান খুবই দুর্বল। সংস্থাটির এই পরিচালক বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার জন্য যোগাযোগপ্রতিষ্ঠান খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট।