Thank you for trying Sticky AMP!!

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ ‘বিপদাপন্ন’: ইউনেসকো

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালপ্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে ‘বিপদাপন্ন’ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছে ইউনেসকো।

আজ মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী মাসে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির বৈঠকের জন্য এই সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ মেনে নেওয়া হলে এই প্রথম কোনো প্রাকৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যকে মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে ‘বিপদাপন্ন’–এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ইউনেসকো বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে রক্ষায় অস্ট্রেলিয়া যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। রিফের পানির মান উন্নয়নে প্রধান লক্ষ্যসমূহ পূরণ করা হয়নি। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে রক্ষা করতে এখনই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনের পদক্ষেপ নিতে হবে।

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বড় কারণ কার্বন নিঃসরণ কমাতে ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের এই সংস্থা।

এদিকে অস্ট্রেলিয়া সরকার ইউনেসকোর এই সুপারিশের কঠোর সমালোচনা করেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবালপ্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের উপকূল ঘেঁষে কোরাল সাগরে অবস্থিত। বৈজ্ঞানিক ও প্রাকৃতিক গুরুত্বের কারণে ১৯৮১ সালে স্থানটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করে ইউনেসকো।

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের অবস্থা ‘বিপদাপন্ন’ বলে ২০১৭ সালে প্রথম অভিযোগ তোলে ইউনেসকো। এরপর অস্ট্রেলিয়া সরকার রিফের অবস্থার উন্নতি করতে ৩০০ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে পাঁচ বছর ধরে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কার্যক্রমের কারণে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের প্রবালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ক্ষতির প্রধান কারণ হচ্ছে, সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি। অতিমাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে এটা ঘটছে।

এরপরও অস্ট্রেলিয়া সরকার এ ক্ষেত্রে জোরালো পদক্ষেপ নিতে তেমন আগ্রহী নয়। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন ডাই–অক্সাইড নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে নেওয়া বৈশ্বিক পরিকল্পনায় যোগ দিতে আগ্রহী নয় অস্ট্রেলিয়া। সবচেয়ে বেশি কয়লা ও গ্যাস রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি অস্ট্রেলিয়া। ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পর কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা হালনাগাদও করেনি দেশটি।

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলেছে, গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের বিষয়ে ইউনেসকো যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে জলবায়ু বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার কার্যক্রমের দুর্বলতার দিকটিই উঠে এসেছে। পরিবেশবাদী সংগঠন ওশান ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার, অস্ট্রেলিয়ার প্রধান রিচার্ড লিক বলেছেন, ইউনেসকোর সুপারিশের মাধ্যমে পরিষ্কার হয়ে গেছে, এই ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় অস্ট্রেলিয়া সরকার যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে।

তবে ইউনেসকো ও পরিবেশবাদীদের অভিযোগ মানতে নারাজ অস্ট্রেলিয়া সরকার। তারা বলেছে, ইউনেসকোর সিদ্ধান্তে তারা ‘অবাক’ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশমন্ত্রী সুসান লে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের সব রিফের বাস্তুসংস্থানের জন্য বড় হুমকির। বিশ্বের ৮৩টি ঐতিহ্যবাহী স্থান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হুমকির মুখে। তাই শুধু অস্ট্রেলিয়ার ওপর দোষ চাপানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।