Thank you for trying Sticky AMP!!

চীনকে ক্ষমা চাইতে বলল অস্ট্রেলিয়া

স্কট মরিসন

অস্ট্রেলিয়ার এক সেনার ভুয়া ছবি টুইটারে পোস্ট করার ঘটনায় চীনকে ক্ষমা চাইত বলল অস্ট্রেলিয়া। সেই সঙ্গে ওই ছবি সরিয়ে ফেলারও দাবি জানিয়েছে তারা। ছবি পোস্টের ঘটনায় নিন্দা জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। সেখানে তিনি এসব দাবি তোলেন।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিজিয়ান ঝাও তাঁর অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে সোমবার ছবিটি পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়ান ওই সেনা এক আফগান শিশুর গলায় রক্তমাখা ছুরি ধরে রেখেছেন। এই ঘটনাকে তাদের জন্য ‘সত্যিই অপমানজনক’ বলে মনে করছে অস্ট্রেলিয়া। ঘটনাটিকে দুই দেশের সম্পর্ক অবনতিতে আরও একটি ধাপ বলে মন্তব্য করেছেন স্কট মরিসন।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, টুইটারকে ছবিটি সরিয়ে নিতে অনুরোধ করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। মরিসন আরও বলেন, এটি সত্যি আপত্তিকর এবং কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। চীন সরকারের এ বিষয়ে লজ্জিত হওয়া উচিত। এই ঘটনা বিশ্বের চোখে তাদের আরও নিচে নামিয়ে দিয়েছে।

মরিসনের মন্তব্যের বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক মুখপাত্র হুয়া চুনইয়িংয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়। সোমবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকারের উচিত তাদের সেনাদের দ্বারা নিরীহ আফগান জনগণ হত্যার ঘটনায় লজ্জা পাওয়া। ছবিটি সরিয়ে নেওয়া হবে কি না, এটি টুইটার ও অস্ট্রেলিয়ার সরকারের বিষয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আফগান যুদ্ধের সময় অস্ট্রেলিয়ার সেনাদের অসদাচরণের বিষয়ে চার বছরের তদন্ত শেষে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স (এডিএফ)। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার সেনাদের হাতে আফগানিস্তানে ৩৯ জন নিরীহ মানুষকে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার দেশটির সেনাপ্রধান জানান, এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ বাহিনীর ১৩ জনকে বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও তাঁর অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সেনাদের হাতে আফগানিস্তানের বেসামরিক নাগরিক ও বন্দীদের হত্যার ঘটনায় মর্মাহত চীন। আমরা এমন ঘটনার নিন্দা জানাই এবং ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি।’

লিজিয়ান ঝাও

এ বিষয়ে মরিসন বলেন, অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘স্বচ্ছ ও সৎ’ উপায়ে তদন্ত করা হচ্ছে। যেমনটি একটি মুক্ত, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল দেশ করে থাকে।

Also Read: আফগানিস্তানে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

গত এপ্রিলে করোনাভাইরাস মহামারির জন্য অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে ভাইরাসের উৎসের খোঁজ পেতে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানালে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতির সূত্রপাত হয়।

এই মাসের শুরুর দিকে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে চীন অস্ট্রেলিয়ার বৈদেশিক বিনিয়োগ, জাতীয় নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নীতিতে থাকা কিছু ঘাটতি তুলে ধরে তা সংশোধনের উদ্যোগ নিতে বলে। মরিসন বলেন, দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা বাড়াতে চীন কী করছে, তা পুরো বিশ্ব দেখছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার চীন নতুন করে আরও একগাদা বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেখানে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা ওয়াইনের ওপর সাময়িক ২১২ শতাংশ পর্যন্ত অ্যান্টিডাম্পিং ট্যারিফ আরোপ করবে। এটিকে ক্যানবেরা অযৌক্তিক দাবি করে এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে।

Also Read: চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ক: বন্ধুত্ব থেকে মাথায় মাথায় ঢুস