Thank you for trying Sticky AMP!!

টোকিওতে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও কমেনি উদ্বেগ

জাপানের রাজধানীতে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমছে। গতকালের ৯৭টি সংক্রমণ ঘটনার পর শুক্রবার টোকিওতে ৮৯টি করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। সর্বশেষ এই হিসাব নিয়ে টোকিওতে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ৭৭৩-এ। আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কমলেও সার্বিকভাবে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ লক্ষ্য করা গেছে।

টোকিওতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সামান্য কমলেও পুরো জাপানে এই সংখ্যা বেড়েছে। জাপানে আজ ২৫০ জনের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আজকের এই সংখ্যা মিলিয়ে সারা জাপানে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এখন ডায়মন্ড প্রিন্সেস প্রমোদতরির আরোহীদের বাদ দিয়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ফলে দেশজুড়ে করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ এখনো কাটেনি।

এদিকে জাপান সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করবে কি না, তা নিয়ে জল্পনাকল্পনা এখনো চলছে। টোকিওর গভর্নর ইয়ুরিকো কোইকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলে বাড়ির বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন প্রয়োজনীয় সেবা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হবে না।


জাপান সরকার করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আয় কমে যাওয়া পরিবারগুলোকে সাহায্য করার জন্য পরিবারপ্রতি তিন লাখ ইয়েন নগদ অর্থ প্রদানের একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কথা ভাবছে। জাপানের মোট আনুমানিক ৫ কোটি ৮০ লাখ পরিবারের মধ্যে প্রায় ১ কোটি পরিবার এই প্রণোদনা সাহায্য পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। এপ্রিল মাস থেকে শুরু হওয়া নতুন অর্থ বছরের একটি সম্পূরক বাজেট থেকে এর তহবিল জোগানো হবে।

ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদনে অগ্রগতি
করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা যন্ত্রপাতি উৎপাদনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। জাপানের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন মন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা বলেছেন সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য ব্যবহারের লাইফ সাপোর্ট যন্ত্রপাতি ইসিএমও ৪০ জন করোনাভাইরাস রোগীর মধ্যে ২১ জনের জীবন রক্ষা করতে সাহায্য করেছে। শারীরিক অবস্থা জটিল হয়ে দেখা দিলে এই যন্ত্র হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কাজ করে থাকে এবং বিশেষ করে বয়স্ক রোগীদের চিকিৎসায় এটা ব্যবহার করা হয়। নিশিমুরা বলেছেন জাপানের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমানে ৪০০টির মতো ইসিএমও যন্ত্র আছে এবং ঘাটতি পূরণ করে নেওয়ার জন্য এর উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সরকার সহায়তা দেবে। পাশাপাশি কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র ভেন্টিলেটরের মজুত বাড়িয়ে নিতে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতিও তিনি দেন।
ওষুধ উৎপাদন ও গবেষণার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ফুজি ফিল্ম করপোরেশন জানিয়েছে অল্প সময়ের মধ্যে তারা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চিহ্নিত করার নতুন পরীক্ষা সরঞ্জাম চলতি মাসের ১৫ তারিখে বাজারে ছাড়বে। এই প্রক্রিয়ায় বর্তমানে ব্যবহৃত যন্ত্রের চেয়ে বেশি দ্রুত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। বর্তমানে ব্যবহৃত প্রক্রিয়ায় রোগ শনাক্ত করতে চার থেকে ছয় ঘণ্টা গেলেও ফুজি ফিল্মের এই নতুন উদ্ভাবনে প্রায় দু’ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল পাওয়া সম্ভব।

ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ফুজি ফিল্মের ওষুধ এভিগান এখন চীনে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় প্রয়োগ করা হচ্ছে এবং আংশিকভাবে তা কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ফুজি ফিল্ম অবশ্য করোনাভাইরাসে এভিগানের প্রয়োগ নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রেখেছে। এ দিকে জাপানের চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করতে ইচ্ছুক দেশগুলোকে বিনা মূল্যে এভিগান সরবরাহের সম্ভাবনা জাপান সরকার বিবেচনা করে দেখছে।