Thank you for trying Sticky AMP!!

নতুন ব্রিটিশ পাসপোর্ট তৈরি নিয়ে বিতর্ক

১৯৮৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের নাগরিকেরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন লেখাযুক্ত লাল রঙের পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন। ছবি: এএফপি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) কার্যকর হওয়ার পর পাল্টে যাবে ব্রিটিশ পাসপোর্ট। আর ওই নতুন পাসপোর্ট বই ছাপানোর ঠিকাদারি পেয়েছে ফ্রান্সের একটি প্রতিষ্ঠান। এতে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ফ্রান্সভিত্তিক কোম্পানি গেমালটো কাজটি পেয়েছে। প্রতিযোগী ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ডে লা রু স্বীকার করেছে যে তারা দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা ছিল না। কিন্তু তাদের দাবি, মানসম্পন্ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কাজটি করার যোগ্য তারাই। ব্রেক্সিটের পক্ষে প্রচারণা চালানো সংবাদপত্র ডেইলি মেইল ব্রিটিশ কোম্পানিকে দিয়ে ব্রিটিশ পাসপোর্ট ছাপানোর দাবিতে পিটিশন চালু করেছে। গত তিন দিনে সেই পিটিশনে ২ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন। ফলে বিষয়টি এখন সংসদে আলোচনা হতে হবে। আদালতেও গড়াতে পারে।

ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠানকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দরপত্র বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়নি। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (হোম অফিস) একজন মুখপাত্র আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বলেন, ব্রিটিশ কোম্পানি ডে লা রুয়ের অনুরোধে স্ট্যান্ডস্টিল পিরিয়ড (ঠিকাদার বাছাই করা এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্যবর্তী সময়) দুই সপ্তাহ পেছানো হয়েছে। টেন্ডার-প্রক্রিয়া এবং কীভাবে তারা দরপত্রে পরাজিত হলো, সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের সুযোগ করে দিতে সময় পেছানো হয়েছে।

১৯৮৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের নাগরিকেরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন লেখাযুক্ত লাল রঙের পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন। ২০১৯ সালে ২৯ মার্চ ইইউ থেকে বেরিয়ে আসবে যুক্তরাজ্য। এরপর আগের সেই নীল আর সোনালি রঙের পাসপোর্টে ফিরে যাবে যুক্তরাজ্য। ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ওই পাসপোর্ট দেওয়া শুরু হওয়ার কথা। পাসপোর্ট বদলে ফেলার এ সিদ্ধান্তকে ব্রেক্সিট কার্যকর করার পথে একটি শক্তিশালী মনোভাবের পরিচায়ক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নতুন পাসপোর্ট তৈরির কাজটি ৪৯০ মিলিয়ন পাউন্ড দর দিয়ে পেয়েছে ফ্রান্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গেমালটো। ব্রিটিশ কোম্পানি ডে লা রুর প্রধান নির্বাহী মার্টিন সুথারল্যান্ড বলেন, ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠানটি যে দাম দিয়ে কাজটি পেয়েছে, সেটি তাদের কাজটি করতে যত খরচ হবে, তার চেয়েও কম। যে কারণে তারা বিষয়টি মানতে পারছেন না। দক্ষতা ও কাজের মানের দিক থেকে তাঁরা এগিয়ে আছেন—এই যুক্তিতে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করতে চান তাঁরা। মার্টিন সুথারল্যান্ড বলেন, নিজেদের স্বকীয়তা ফিরিয়ে আনতে ইইউ ছাড়ছে যুক্তরাজ্য। অথচ ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের পাসপোর্ট বই ছাপানো হবে ফ্রান্সে—এটা মানা যায় না। তিনি প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাডকে তাঁর কারাখানা সফর করে কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাতের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা কর্মীদের বুঝিয়ে বলুন, তাঁরা কেন ব্রিটিশ পাসপোর্ট তৈরির যোগ্য বিবেচিত হলেন না।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল এবং কমন্স ইউরোপিয়ান স্ক্রুটিনি কমিটির চেয়ারম্যান স্যার বিল ক্যাশ বিদেশি কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার সমালোচনা করেছেন।

ব্রিটিশ কোম্পানি ডে লা রু ২০০৯ সাল থেকে ব্রিটিশ পাসপোর্ট ছাপানোর কাজ করে আসছে। এই কোম্পানি আরও ৪০টির বেশি দেশের পাসপোর্ট ছাপানোর কাজ করে। ইইউর নিয়ম অনুযায়ী, পাসপোর্ট ছাপানোর দরপত্র ইইউভুক্ত সব কোম্পানির জন্য উন্মুক্ত রাখা।