Thank you for trying Sticky AMP!!

নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার জরুরি: গুতেরেস

আন্তোনিও গুতেরেস

বৈশ্বিক সংগঠনগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, জাতিসংঘকে আরও গণতান্ত্রিক ও বৈচিত্র্যমণ্ডিত করতেও এটি দরকার।

উন্নয়নশীল দেশের জোট জি-৭৭-এর চেয়ারম্যানের পদ ইকুয়েডরের কাছ থেকে মিসরের গ্রহণ উপলক্ষে গত শুক্রবার আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় জাতিসংঘ মহাসচিব নিরাপত্তা পরিষদের এই সংস্কারের ডাক দেন।

জাতিসংঘকে আরও গণতান্ত্রিক ও ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ করে গড়ে তুলতে এবং এর সব সংস্থার আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বে আরও কার্যকর বৈচিত্র্য আনতে জি-৭৭-এর আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করেন বলে জানান মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, আর অবশ্যই এই আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রে রয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের বিষয়টি।

নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রক্রিয়া এক দশকের বেশি কাল আটকে রয়েছে। এই সংস্কার নিয়ে আগামী সমঝোতা বৈঠকের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ জানুয়ারি।

অনুষ্ঠানে গুতেরেস বলেন, বর্তমান সময়টি বহুপাক্ষিকতা বা জোটবদ্ধতার ক্ষেত্রে খুব সহজ না হলেও জি-৭৭ এটি রক্ষায় মধ্যম সারির খুঁটি হয়ে আছে।

উন্নয়ন ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ইস্যুতে সম্মিলিতভাবে কাজ করে চলেছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর এই জোট। ১৩৪টি সদস্য নিয়ে গঠিত এ ফোরাম বর্তমানে জাতিসংঘের দেশগুলোর সবচেয়ে বড় জোট। নাটকীয়ভাবে জাতিসংঘের বাজেট ঘাটতি ঠেকাতে এবং সংস্থার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সচল রাখতে জি-৭৭-এর ভূমিকার প্রশংসা করেন গুতেরেস।

অনুষ্ঠানে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা প্রসঙ্গে গুতেরেস বলেন, এ ক্ষেত্রে ভারত নেতৃত্বের স্থান দখল করেছে। তিনি বলেন, ‘জলবায়ুবিষয়ক কর্মকাণ্ড নিয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত দৃঢ়। জলবায়ু পরিবর্তনের কাছে আমরা হার মানতে পারি না। তবে আমরা এখনো এ লড়াইয়ে জিততে পারছি না। জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় শিকার উন্নয়নশীল দেশগুলো, যারা জি-৭৭-এর সদস্য।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এখন এমন এক সময় যখন এ লড়াইয়ে অন্যরা পেরে উঠছে না, তখন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি ও জি-৭৭-এর সবচেয়ে বড় দুই দেশ চীন ও ভারত লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যাপারে দারুণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, বিশ্বের দেশগুলো যাতে জলবায়ু পরিবর্তনের নাটকীয় ও ধ্বংসাত্মক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়, তা নিশ্চিত করতে যেভাবে দরকার চীন ও ভারত সেভাবেই এ নেতৃত্বের হাল ধরেছে।

এদিকে জি-৭৭-এর চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণ করে জাতিসংঘে মিসরের স্থায়ী প্রতিনিধি আমর আবদেল লতিফ আবুলআত্তা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে এই জোট এমন পন্থায় লড়াই চালাবে যাতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। সে জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে জোট। তিনি বলেন, জি-৭৭-এর অগ্রাধিকার হবে উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও দারিদ্র্য হ্রাস। বিশ্ব সমস্যার যে বোঝা বইছে তার নেপথ্য কারণ এই দারিদ্র্য।

আবুলআত্তা আরও বলেন, এ লক্ষ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কর্মসংস্থান ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে হবে, বিশেষত উন্নয়ন হতে হবে শ্রমনিবিড়, যাতে তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। জোটের সভাপতির আসন গ্রহণ করায় এখন তাঁর অগ্রাধিকারমূলক বিষয়ের একটি হবে এক স্পষ্ট ও বহুপক্ষীয় রূপরেখা প্রণয়ন করা। যাতে প্রযুক্তির কারণে উদ্ভব হতে থাকা সম্মুখসারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হয়। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভূমিকা গতিশীল করাও জি-৭৭-এর আরেক অগ্রাধিকারমূলক বিষয় হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাজক্যাক বলেন, জাতিসংঘ যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন সেসব উত্তরণে জি-৭৭-এর সম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ হয়েই থাকবে।